সাংগঠনিক স্বকীয়তা ও অরাজনৈতিক অবস্থান বজায় রাখবে হেফাজত

বিবৃতিতে সিনিয়র নায়েবে আমির

হাটহাজারী প্রতিনিধি | মঙ্গলবার , ২২ অক্টোবর, ২০২৪ at ১০:২৫ পূর্বাহ্ণ

ঈমানআকিদাভিত্তিক সংগঠন হেফাজতে ইসলামের ভিন্ন কোনো রাজনৈতিক দল বা সংগঠনের সাথে ঐক্য বা এ জাতীয় কোনো আলাপআলোচনার সুযোগ নেই। গঠনতান্ত্রিকভাবে হেফাজতের অরাজনৈতিক অবস্থানের ওপর যে অঙ্গীকার রয়েছে, সেটাকে সর্বাত্মকভাবে বজায় রাখতে হবে। একইসাথে দেওবন্দী পূর্বসূরি হক্কানী উলামায়ে কেরামসহ সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতাবৃন্দের যে মতাদর্শিক অবস্থান, সেখান থেকেও হেফাজতে ইসলাম বিচ্যুত হবে না। হেফাজতে ইসলাম সাংগঠনিক স্বকীয়তা ও অরাজনৈতিক অবস্থান বজায় রেখে ঈমানআকিদার সুরক্ষায় নাস্তিক্যবাদী চক্রের ইসলামবিদ্বেষী যেকোনো ষড়যন্ত্র উৎখাতসহ দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও মানবাধিকারকে হুমকিমুক্ত রাখতে নিয়মতান্ত্রিক কর্মসূচির মাধ্যমে কাজ করে যাবে।

গতকাল সোমবার রাতে হেফাজতে ইসলামের সিনিয়র নায়েবে আমির ও জামিয়া আহলিয়া দারুল উলুম হাটহাজারী মাদ্রাসার মহাপরিচালক আল্লামা মুফতি খলীল আহমদ কাসেমী এক বিবৃতিতে এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, ইন্টারনেটভিত্তিক যোগাযোগ ব্যবস্থার প্রসার ও অবাধ তথ্যপ্রবাহের সুযোগ নিয়ে নাস্তিক্যবাদী চক্র যখন ইসলামের বিরুদ্ধে বহুবিদ ষড়যন্ত্র শুরু করে এবং পুঁজিবাদী ষড়যন্ত্রে রাষ্ট্রীয়ভাবেও নানান অনৈসলামিক সিদ্ধান্ত জনগণের ওপর চাপিয়ে দেওয়ার প্রবণতা শুরু হয়, এমন পরিস্থিতিতে শায়খুল ইসলাম আল্লামা শাহ আহমদ শফীর (রহ.) উদ্যোগে ২০১০ সালের ১৯ জানুয়ারি উম্মুল মাদারিস দারুল উলুম হাটহাজারী মাদ্রাসায় হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ গঠন করা হয়। তখন প্রতিষ্ঠাতা মুরুব্বি আলেমগণ এই সংগঠনকে অরাজনৈতিক, সামাজিক, আধ্যাত্মিক ও আত্মসংশোধনমূলক সংগঠনরূপে পরিচালনায় অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।

তিনি বলেন, প্রতিষ্ঠাকালে শীর্ষ মুরুব্বি আলেমগণ আরো অঙ্গীকার করেন, এ সংগঠন আকাবিরে ওলামায়ে দেওবন্দের নীতিআদর্শের ভিত্তিতে মহান আল্লাহর আনুগত্য, ইসলামের বিধিনিষেধকে জাতীয় ও সামাজিক স্তরে সমুন্নত রাখার লক্ষ্যে পরিচালিত হবে। একইসাথে ঈমানআকিদা, মুসলিম সভ্যতাসংস্কৃতি, ইসলামের বিধান ও প্রতীকসমূহের হেফাজতে দেশের মুসলমানদেরকে সচেতন করতে কাজ করে যাবে। পাশাপাশি ধর্মীয় ইস্যুতে শান্তিপূর্ণ ও নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলন জারি রেখে যাবে। কোনো রাজনৈতিক লক্ষ্যে হেফাজতে ইসলামের কর্মসূচি পরিচালিত হবে না। কিন্তু রাজনৈতিক ইস্যুর আড়ালে ইসলামকে টার্গেট করা হলে হেফাজতে ইসলাম সর্বস্তরের মু’মিন মুসলমান তথা নবীপ্রেমিক, ইসলামপ্রিয় জনতাকে সঙ্গে নিয়ে নিয়মতান্ত্রিক কর্মসূচির মাধ্যমে প্রতিবাদ প্রতিরোধ গড়ে তুলবে।

আল্লামা মুফতি খলীল আহমদ কাসেমী বলেন, ঈমানআকিদার হেফাজত এবং দেশের শান্তিশৃঙ্খলা, সামাজিক সম্প্রীতি ও স্বাধীনতা অক্ষুণ্ন রাখার স্বার্থে ২০১৩ সালে হেফাজতে ইসলাম ঐতিহাসিক ১৩ দফা দাবি উত্থাপন করেছিল। হেফাজতের এসব দাবির প্রতি দলমত নির্বিশেষে দেশের গণমানুষের সমর্থন ও আস্থা লংমার্চ ও ঢাকা অবরোধসহ বিভিন্ন কর্মসূচিতে বারবার প্রমাণিত হয়েছে। সুতরাং অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি হেফাজতের ১৩ দফা দাবি বাস্তবায়নের জন্য আহ্বান জানাচ্ছি।

বিবৃতিতে তিনি বলেন, সংগঠনের ব্যানার ও পদবি ব্যবহার করে হেফাজতের এসব নীতিদর্শন থেকে কোনো নেতাকর্মীর বিচ্যুত হওয়ার সুযোগ নেই। তবে হেফাজতের পদপদবি, ব্যানার ও কর্মসূচির বাইরে যার যার পছন্দের বৈধ ক্রিয়াকলাপ ও রাজনৈতিক কর্মসূচিতে অংশ নিতে হেফাজত কাউকে বাধা দেয় না।

পূর্ববর্তী নিবন্ধফটিকছড়ির সাবেক এমপি সনির বিরুদ্ধে মামলা
পরবর্তী নিবন্ধনুরুল ইসলাম বিএসসি ও তার স্ত্রীর ফ্ল্যাট হস্তান্তরে নিষেধাজ্ঞা