কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সহিংসতা ও প্রাণহানির ঘটনার সুষ্ঠু, মানসম্মত তদন্তে বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিশনের জন্য বিদেশি কারিগরি সহায়তা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বাংলাদেশে জার্মানির রাষ্ট্রদূত আখিম ট্র্যোস্টার গতকাল মঙ্গলবার গণভবনে সৌজন্য সাক্ষাতে গেলে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন। খবর বিডিনিউজের।
পরে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব নাঈমুল ইসলাম খান সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন। নাঈমুল ইসলাম খান বলেন, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, আমাদের যে জুডিশিয়াল ইনকোয়ারি কমিটি (গঠিত হয়েছে), তাদেরকে সুষ্ঠু ইনকোয়ারি করার জন্য, তাদের ইনকোয়ারিটা যেন খুব উচ্চমানের হয়, এজন্য বিদেশি কারিগরি সহায়তা নেওয়া হবে। তদন্তে জাতিসংঘের সহায়তা নেওয়ার প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব বলেন, ইতোমধ্যে জাতিসংঘের সাথে সহযোগিতার ব্যাপারে যোগাযোগও হয়েছে। যোগাযোগ বলতে, জাতিসংঘ আগ্রহ প্রকাশ করেছে, বাংলাদেশও সে ব্যাপারে উৎসাহ দেখিয়েছে। জার্মান রাষ্ট্রদূতকে উদ্ধৃত করে নাঈমুল ইসলাম খান বলেন, প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে তারা (জার্মানি) দৃঢ় আশাবাদী যে, একটা ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইনভেস্টিগেশন হবে। যারা দুর্বৃত্ত তারা চিহ্নিত হবে এবং তাদের বিচার হবে।
কোটাবিরোধী আন্দোলন সহিংসতার রূপ নিলে ১৬ জুলাই দেশের বিভিন্ন স্থানে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে ছাত্রলীগ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সংঘর্ষ বাঁধে। এর মধ্যে ঢাকায় দুজন, চট্টগ্রামে তিনজন এবং রংপুরে একজনের মৃত্যু হয়। এরপর প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী ১৬ জুলাই এবং পরবর্তী সময়ে ঘটে যাওয়া সহিংসতা ও প্রাণহানির তদন্তে গত বৃহস্পতিবার এক সদস্যের বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। তদন্ত কমিটির একমাত্র সদস্য বিচারপতি খোন্দকার দীলিরুজ্জামান।
প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব বলেন, সাক্ষাতে জার্মানির রাষ্ট্রদূত বলেছেন, যারা ধর্মীয় উগ্রবাদের সহযোগী তাদের ব্যাপারে জার্মানির কোনো সহানুভূতি নেই। বৈঠকের শুরুতে রাষ্ট্রদূত সাম্প্রতিক সহিংসতায় জীবনহানির ঘটনায় মঙ্গলবার বাংলাদেশ যে রাষ্ট্রীয় শোক পালন করেছে, তার সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রীর কাছে শোক ও সমবেদনা জানান। জার্মানি বাংলাদেশের সঙ্গে থাকবে বলেও জানান রাষ্ট্রদূত আখিম ট্র্যোস্টার।
দুই দেশের ঐতিহ্যবাহী ও বিদ্যমান সুসম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী সন্তোষ প্রকাশ করেছেন জানিয়ে তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর সময় থেকে জার্মানির সঙ্গে বন্ধুত্ব এবং জার্মানির বেশকিছু পরিবার বাংলাদেশের যুদ্ধ শিশুকে দত্তক নিয়েছিল; প্রধানমন্ত্রী সে কথা স্মরণ করেন।
জার্মানির ভিসা প্রক্রিয়ার ধীরগতি প্রসঙ্গে কথা হয়েছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব বলেন, জার্মান রাষ্ট্রদূত তাদের ভিসা প্রক্রিয়া শ্লথের জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছেন। রাষ্ট্রদূত বলেছেন, গুড উইলের কমতির জন্য এটা হচ্ছে না। তাদের (জার্মান দূতাবাস) সক্ষমতা ও সম্পদের সীমাবদ্ধতার কারণে এটা হচ্ছে।