সশস্ত্র যুদ্ধের প্রস্তুতি নিতে থাকে বাঙালি

আজাদী ডেস্ক | শুক্রবার , ২১ মার্চ, ২০২৫ at ৯:১০ পূর্বাহ্ণ

১৯৭১ সালের এদিনে উত্তালঅগ্নিগর্ভ সারাদেশ। ঢাকা শহরের মোড়ে মোড়ে স্বাধীনতাকামী বাঙালিদের মিছিল, সমাবেশ। দলে দলে সব ছুটছে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের দিকে। পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে মানুষ সশস্ত্র যুদ্ধের প্রস্তুতি নিতে থাকে। পলোগ্রাউন্ডে ন্যাপ প্রধান আবদুল হামিদ খান ভাসানী বিশাল এক জনসভায় পরিষ্কার ঘোষণা দেন, এসব আলোচনা করে কোনো ফল আসবে না। এদেশের আজ কেউ আর রাষ্ট্রপতি ইয়াহিয়াকে মানে না। অন্যদিকে এদিন সকালেই পাকিস্তানের পিপলস পার্টির নেতা জুলফিকার আলী ভুট্টো হঠাৎ করেই ঢাকায় আসেন। রাজনৈতিক নেতা হওয়া সত্ত্বেও সেদিন তার অভ্যর্থনার জন্য এয়ারপোর্টে কয়েকজন আমলা ছাড়া আর কেউ উপস্থিত ছিলেন না। ভুট্টো এ দেশে আসার প্রতিবাদে যোগ দিতে ঢাকা মহানগরীর রাজপথে যেন সবাই নেমে আসেন। মিছিলমিটিংয়ের মাধ্যমে ভুট্টোর বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে ওঠেন মুক্তিপাগল বীর বাঙালি।

রাষ্ট্রপতি ইয়াহিয়া খানের আমন্ত্রণে ভুট্টো এ দেশে আসে। দেশবাসী বুঝতে পারে এর পেছনে নিশ্চয় কোনো ষড়যন্ত্র আছে। তারা নতুনভাবে প্রস্তুতি নিতে থাকে।

দেশে একদিকে আলোচনা, অসহযোগ আন্দোলন চলছে, অন্যদিকে পাকিস্তানি সামরিক বাহিনী তাদের ঘাঁটিগুলোকে আরও শক্তিশালী করে তুলতে থাকে। প্রতিদিনই পাকিস্তান থেকে অস্ত্রগোলাবারুদ, সৈন্য আসতে থাকে। আলোচনার আড়ালে তারা নিজেদের এ দেশের নিরীহ মানুষের ওপর হিংস্র জন্তুর মতো ঝাঁপিয়ে পড়ার জন্য সেনা সদস্যদের প্রস্তুত করতে থাকে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় খেলার মাঠে ছাত্র ইউনিয়ন, গণবাহিনীর উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হয় কুচকাওয়াজ। মোট কথা, জাতি সেই উত্তাল সময়ে ছিল স্বাধীনতার জন্য উন্মুখ, যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত। স্বাধীনতাএই একক একটিমাত্র কেন্দ্রীয় লক্ষ্য সামনে রেখে জাতি চূড়ান্ত পর্বের জন্য তখন প্রস্তুত। মহান স্বাধীনতার জন্য উৎসুক, উন্মুখ বাঙালি জাতির ভাবনা তখন ছিল একটাই পাকিস্তানি স্বৈরশাসনকে চিরতরে উচ্ছেদ করার।

পূর্ববর্তী নিবন্ধডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন হলে দেশ সঠিক পথে থাকবে : খসরু
পরবর্তী নিবন্ধবালি আর্কেড ফুডকোটে ‘ইফতারের হাট’