সরবরাহ স্বাভাবিক, তবুও বাড়ছে ভোজ্যতেলের দাম

খাতুনগঞ্জের পাইকারি বাজার

জাহেদুল কবির | বৃহস্পতিবার , ৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ at ৮:৩৩ পূর্বাহ্ণ

ভোগ্যপণ্যের বৃহৎ বাজার খাতুনগঞ্জে ভোজ্য তেলের দাম বেড়েই চলেছে। গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে পাম এবং সয়াবিন তেলের দাম প্রতি মণে বেড়েছে আরো ১২০ টাকা পর্যন্ত। তেল ব্যবসায়ীরা জানান, আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের বুকিং রেট বেশি। তাই দাম বেড়েছে। ভোক্তাদের দাবি, ব্যবসায়ীরা নানা অজুহাত দেখিয়ে তেলের দাম বৃদ্ধি করে থাকেন। এ মূহুর্তে বাজারে ভোজ্যতেলের সংকট নাই, তারপরেও বাড়তি দরে বিক্রি হচ্ছে। বিশেষ করে আমদানি মূল্যের সাথে বিক্রয় মূল্যের বিরাট ব্যবধান দেখা যাচ্ছে। এসব বিষয়ে প্রশাসনকে নজর দিতে হবে।

গতকাল খাতুনগঞ্জের বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত এক সপ্তাহ আগে প্রতি মণ (৩৭ দশমিক ৩২ কেজি) পাম তেল বিক্রি হয়েছে ৫ হাজার ৮০০ টাকায়। সেই তেল মণে ১২০ টাকা বেড়ে গিয়ে এখন বিক্রি হচ্ছে ৫ হাজার ৯২০ টাকায়। অন্যদিকে বর্তমানে সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে মণপ্রতি ৬ হাজার ৬০০ টাকায়। এক সপ্তাহ আগে এই তেল বিক্রি হয়েছে ৬ হাজার ৫০০ টাকায়। খাতুনগঞ্জের কয়েকজন তেল ব্যবসায়ী জানান, খাতুনগঞ্জের বাজারে পণ্য বেচাকেনা ও লেনদেনে যুগ যুগ ধরে কিছু প্রথা চালু আছে। নিজেদের সুবিধার অনেক প্রথা আছে যেগুলো আবার আইনগতভাবেও স্বীকৃত নয়। এরমধ্যে অন্যতম হচ্ছে ডেলিভারি অর্ডার (ডিও) স্লিপ’। তেল কিংবা অন্য কোনো পণ্য কেনাবেচায় ডিও বেচাকেনার মাধ্যমে বিভিন্ন আগাম লেনদেন হচ্ছে। দেখা যায়, পণ্য হাতে না পেলেও ওই ওই স্লিপটিই বেচাকেনা হচ্ছে। কোনো কোম্পানি বাজার থেকে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ পণ্যের ডিও কিনে নেয়। যে দরে ডিও কেনা হয়, তার বাজার দর যদি বেড়ে যায়, তখন পণ্যটি ডেলিভারি দিতে তারা গড়িমসি করে। আবার দেখা যায়, কোম্পানির পণ্যই আসেনি কিন্তু ডিও কিনে রেখেছেন অনেক বেশি। এর ফলেও কোম্পানি বাজারে পণ্য ডেলিভারি দিতে পারে না। তাই বাজারও উর্ধ্বমুখী হয়ে উঠে।

আবুল কাশেম নামের একজন ভোজ্যতেল ব্যবসায়ীর দাবি করেন, ভোজ্যতেলের সরবরাহ সংকটের কারণে দাম বাড়ছে। এছাড়া বেশ কিছু মিল চাহিদামতো তেল সরবরাহ দিচ্ছে না, এটিও মূল্যবৃদ্ধির অন্যতম কারণ।

সাহেদ আহমদ নামের একজন ভোক্তা জানান, ভোগ্যপণ্যের বাজার সব সময়ই ব্যবসায়ীদের ইচ্ছার ওপর নির্ভর করে। তারা নিজেদের স্বার্থে বিভিন্ন অজুহাত দাঁড় করিয়ে ক্রেতাদের পকেট কাটে। তবে ভোগ্যপণ্যের বাজারে যেভাবে তদারকি হওয়া দরকার সেটিও লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। প্রশাসন মাঝে মাঝে আকস্মিক অভিযানে বের হয়ে কিছু জরিমানা করে তারপর আবার চুপ হয়ে যায়। ফলে বাজার ব্যবস্থাপনায় প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণ থাকে না। তাই ভোজ্যতেলসহ প্রত্যেক ভোগ্যপণ্যের বাজারে নিয়মিত অভিযান চালাতে হবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধঈদগাঁওয়ে ছিনতাইকৃত মালামালসহ দুই ছিনতাইকারী গ্রেপ্তার
পরবর্তী নিবন্ধএস আলমের ২ ছেলের বিরুদ্ধে মামলা করবে দুদক