সরকার রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে ব্যর্থ : ফখরুল

| শুক্রবার , ২৬ আগস্ট, ২০২২ at ৪:২৭ পূর্বাহ্ণ

পাঁচ বছর পার হলেও সরকার রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে চরমভাবে ব্যর্থ হয়েছে দাবি করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, মূলত শুরু থেকেই এ সরকার রোহিঙ্গা ইস্যুকে রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিলের ইস্যু হিসেবে ব্যবহার করে আসছে।
গতকাল দুপুরে রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। এ সময় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন। খবর বাংলানিউজের।
লিখিত বক্তব্যে মির্জা ফখরুল বলেন, ২০১৭ সাল থেকে বাংলাদেশ ১০ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গার বোঝা বহন করে চলেছে। গত ২২ আগস্ট প্রথম আলোতে প্রকাশিত সংবাদ অনুযায়ী প্রতিবছর গড়ে ৩০ হাজার রোহিঙ্গা শিশু যুক্ত হচ্ছে। সে হিসেবে গত ৪ বছরে রোহিঙ্গার সংখ্যা বেড়ে ১২ লাখ ছাড়িয়ে গেছে। এ সংখ্যা দিন দিন বাড়তেই থাকবে। তিনি বলেন, রোহিঙ্গা সমস্যা একদিকে বাংলাদেশের অর্থনীতির ওপর অসহনীয় চাপ সৃষ্টি করছে, অন্যদিকে স্থানীয়ভাবে পরিবেশ, প্রতিবেশ এবং সামাজিকভাবে জীবন-জীবিকায় চরম অস্থিরতা ও অনিশ্চয়তার সৃষ্টি করছে। রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে মাদক ব্যবসা, নারী পাচার ও নানাবিধ অসামাজিক ও আইনবিরোধী কার্যকলাপে সৃষ্ট অশান্ত ও অস্থির পরিস্থিতি, মাদক চোরাচালান ও মাদক পাচারে রোহিঙ্গাদের জড়িয়ে পড়া, রোহিঙ্গাদের অন্তর্দ্বন্দ্বে রোহিঙ্গা নেতা হত্যা ইত্যাদি বিষয় চরম উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, রোহিঙ্গা ইস্যুতে শুরু থেকেই জনবিচ্ছিন্ন এ অনির্বাচিত সরকার চরম ব্যর্থতার পরিচয় দিয়ে আসছে। ১২ লক্ষাধিক রোহিঙ্গা তাদের মাতৃভূমি রাখাইনে প্রত্যাবাসনে মিয়ানমারের ওপর কার্যকর চাপ সৃষ্টি করতে সরকার চরমভাবে ব্যর্থ হয়েছে। এ পর্যন্ত একজন রোহিঙ্গা শরণার্থীকেও সরকার রাখাইনে ফেরত পাঠাতে পারেনি। নিঃসন্দেহে এটা সরকারের চরম ব্যর্থতা। তিনি বলেন, রোহিঙ্গা শরণার্থীরা মিয়ানমারের নাগরিক হিসেবে নিরাপদ, মর্যাদাপূর্ণ ও টেকসই উপায়ে মিয়ানমারের নিজ বাড়িতে ফিরে যেতে চান। সম্প্রতি জাতিসংঘের মানবাধিকার হাইকমিশনার কক্সবাজার ক্যাম্প পরিদর্শনে গেলে তাকেও তারা একই দাবি জানায়। রোহিঙ্গা সংকটের একটি টেকসই সমাধানের জন্য নিরাপদ রোহিঙ্গা প্রত্যাবর্তন নিশ্চিত করতে হবে। আর এ প্রত্যাবর্তনকে শুধুমাত্র কাগজে চুক্তিতে বন্দি না রেখে দ্বিপক্ষীয় ও বহুপক্ষীয় চুক্তির কার্যকর প্রয়োগের পথে এগোতে হবে।
ফখরুল বলেন, রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে জাতিসংঘ, আঞ্চলিক সংস্থা এবং বিশ্বশক্তিগুলোর স্ব স্ব ভূমিকা সুনিশ্চিত করতে হবে। জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন আন্তর্জাতিকভাবে দুর্বল এবং স্বৈর সরকার হিসেবে পরিচিত সরকারের পক্ষে রোহিঙ্গা সমস্যার মতো একটি জটিল ও আন্তর্জাতিক সমস্যা মোকাবিলা করা সম্ভব নয়। কেবলমাত্র একটি জনবান্ধব গণতান্ত্রিক সরকারের দ্বারাই এটা সম্ভব। যা বাংলাদেশে এ মুহূর্তে অনুপস্থিত।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসৃজনে-মননে অনুকরণীয় ছিলেন অরুণ দাশগুপ্ত
পরবর্তী নিবন্ধমিয়ানমারের ওপর যুক্তরাজ্যের নতুন নিষেধাজ্ঞা