সরকার পতনে ধীরে ধীরে এক দফার দিকে যাচ্ছে বিএনপি

মতবিনিময় সভায় নোমান

আজাদী প্রতিবেদন | বুধবার , ৫ জুলাই, ২০২৩ at ৭:০১ পূর্বাহ্ণ

সরকার পতনে বিএনপি ধীরে ধীরে এক দফা আন্দোলনের দিকে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন দলটির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান। তিনি বলেন, যদি জনগণের স্বার্থ রক্ষা করতে হয়, তাহলে সরকারের পতন ঘটিয়ে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের দাবি আদায় করতে হবে। সরকার পতনে চট্টগ্রাম থেকেই এক দফার আন্দোলন শুরু হবে। শ্রমজীবী মানুষ বর্তমানে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত দাবি করে তিনি বলেন, ক্ষমতাসীন সরকার ভোটাধিকার হরণ করার পাশাপাশি শ্রমিক, কৃষকের পেটে লাথি মেরেছে। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, বিদ্যুৎ, গ্যাস ও জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির কারণে শ্রমজীবী মানুষের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। অর্ধাহারে অনাহারে দিন কাটাচ্ছে তারা। কৃষক, শ্রমিক, তাঁতি ও জেলেদের মুক্তির জন্য কাজ করছে বিএনপি। আগামী ১৪ জুলাই অনুষ্ঠেয় ‘দেশ বাঁচাতে শ্রমজীবী মানুষের জাগরণ’ শীর্ষক চট্টগ্রাম বিভাগীয় শ্রমিক সমাবেশ ‘সফল’ করতে গতকাল বিকালে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। কাজির দেউড়ি নাসিমন ভবন দলীয় কার্যালয়ে এ সভা হয়।

চট্টগ্রাম বিভাগীয় শ্রমিক দলের সভাপতি এ এম নাজিম উদ্দীনের সভাপতিত্বে প্রধান বক্তা ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দীন। বিভাগীয় শ্রমিক দলের সাধারণ সম্পাদক শেখ নুরুল্লাহ বাহারের সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি ছিলেন বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা গোলাম আকবর খোন্দকার, এস এম ফজলুল হক, বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম, নগর বিএনপির আহ্বায়ক ডা. শাহাদাত হোসেন, সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্কর, কেন্দ্রীয় শ্রমিক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসেন, বিএনপির কেন্দ্রীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক জালাল উদ্দিন মজুমদার, হারুনুর রশিদ ভিপি, কঙবাজার জেলা বিএনপির সভাপতি শাহজাহান চৌধুরী ও দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সুফিয়ান।

আবদুল্লাহ আল নোমান বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের কাছে জনগণের কোনো মূল্য নেই। তাই তারা জনগণের স্বার্থের কথা চিন্তা করছে না। এখনও তারা নিজেদের আখের গোছানোর জন্য সিন্ডিকেটের মাধ্যমে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধি করে জনগণকে বিভীষিকাময় পরিস্থিতির দিকে ঠেলে দিয়েছে। শ্রমজীবী মানুষ আজ পরিবার পরিজন নিয়ে দিশেহারা।

মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দীন বলেন, আওয়ামী লীগের কাজই হচ্ছে গণতন্ত্রকে হত্যা করা আর বিএনপির কাজ হচ্ছে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা। আজকে সারা দেশের মানুষ গণতন্ত্র চায়। নিজের ভোট নিজে দিতে চায়। কিন্তু আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে কোনোভাবেই সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে না। বাংলাদেশে সকল দলের অংশগ্রহণে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন করতে হলে শেখ হাসিনার সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে। এই অবৈধ সংসদ বাতিল করতে হবে। অন্তর্বর্তীকালীন নিরপেক্ষ সরকার গঠন করতে হবে। এছাড়া কোনো বিকল্প নেই।

গোলাম আকবর খোন্দকার বলেন, সরকার ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন করে যেমন সাংবাদিকদের হয়রানি করছে, একইভাবে অসৎ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে অত্যাবশ্যক পরিষেবা আইন করে শ্রমিকদেরও নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে। এই আইনের মাধ্যমে দ্রুত সাজা দেয়ার ব্যবস্থা রাখা হচ্ছে। তাই সকল শ্রেণিপেশার রাজনীতিকদের পাশাপাশি শ্রমিক সমাজও রাজপথে নামবে জনগণের দাবি আদায়ে।

এস এম ফজলুল হক বলেন, সরকার দেশকে এখন কারাগারে পরিণত করে ফেলেছে। এখানে কারো কোনো অধিকার নেই। বিএনপি গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করছে। তাই আমাদেরকে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে।

মাহবুবের রহমান শামীম বলেন, বর্তমান সরকারের দুঃশাসনে শ্রমিক সমাজ আজ অবহেলিত। শ্রমিকদের দুবেলা খাওয়ার সুযোগ নেই। আজকে শ্রমিকদের কর্মসংস্থান ও বাসস্থান নেই। বর্তমান ফ্যাসিস্ট সরকারের বিরুদ্ধে শ্রমিক জনতাকে কঠিন আন্দোলনে শরিক হতে হবে।

ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, চট্টগ্রাম সরকারের পতনের আন্দোলনের জন্য প্রস্তুত আছে। তাই শ্রমিক সমাবেশ সফল করে আমাদেরকে স্বৈরাচারী সরকারের অন্যায়, অত্যাচার, দুর্র্নীতির বিরুদ্ধে দাঁতভাঙ্গা জবাব দিতে হবে।

অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন কেন্দ্রীয় বিএনপির সদস্য সাথী উদয় কুসুম বড়ুয়া, হুম্মাম কাদের চৌধুরী, সাচিং প্রু জেরি, মশিউর রহমান বিপ্লব, উত্তর জেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক এম এ হালিম, দক্ষিণ জেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক এনামুল হক এনাম, রাঙামাটি জেলা বিএনপির সভাপতি দীপন তালুকদার প্রমুখ।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবাইডেনের বিরুদ্ধে মামলাকারী ‘সুবিধাবাদী’, ধারণা মোমেনের
পরবর্তী নিবন্ধপেকুয়ায় বাস-টেক্সি মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত ২