সরকার ও মুসল্লিদের যৌথ প্রয়াসে আন্দরকিল্লা শাহী জামে মসজিদ পুনঃনির্মাণে সক্ষম হব

ইফা-মুসল্লি পরিষদের মতবিনিময় সভায় ধর্ম উপদেষ্টা

আজাদী প্রতিবেদন | মঙ্গলবার , ৪ নভেম্বর, ২০২৫ at ৮:১৪ পূর্বাহ্ণ

ধর্ম উপদেষ্টা প্রফেসর ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেছেন, সরকার এবং মুসল্লিদের যৌথ প্রয়াসে আন্দরকিল্লা শাহী জামে মসজিদ সংস্কার ও পুনঃনির্মাণ করতে সক্ষম হব আমরা। গতকাল সোমবার চট্টগ্রাম ক্লাবের হল রুমে ইসলামিক ফাউন্ডেশন ও আন্দরকিল্লা শাহী জামে মসজিদ মুসল্লি পরিষদের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে ধর্ম উপদেষ্টা এ কথা বলেন।

ইসলামের প্রবেশদ্বার (বা’ব উল ইসলাম) ৪৫০ বছরের পুরনো, বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী আন্দরকিল্লা শাহী জামে মসজিদের সংস্কার ও পুনঃনির্মাণ কাজ শুরু করতে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে সরকার। এ লক্ষ্যে গত ১২ অক্টোবর এর ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করা হয়েছে। যার প্রেক্ষিতে ইসলামিক ফাউন্ডেশন ও আন্দরকিল্লা শাহী জামে মসজিদ মুসল্লি পরিষদের যৌথ উদ্যোগে এ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।

মুসল্লি কমিটির সহসম্পাদক অ্যাডভোকেট জিয়া হাবীব আহসানের সঞ্চালনায় এতে স্বাগত বক্তব্য দেন, মুসল্লি পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক এমপি শাহজাহান চৌধুরী। সভাপতিত্ব করেন আন্দরকিল্লা শাহী জামে মসজিদের খতিব ও ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ বোর্ড অব গভর্নর হযরত সাইয়্যেদ আনোয়ার হোসাইন তাহের জাবেরী আলমাদানী। বিশেষ অতিথি ছিলেন, সিটি মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন ও অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সৈয়দ মাহবুবুল হক। উপস্থিত ছিলেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ডিজি আব্দুস সালাম খান, দৈনিক আজাদী সম্পাদক এম এ মালেক, সিডিএ চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মো. নুরুল করিম, মুসল্লি কমিটির সভাপতি সালাহউদ্দিন কাসেম খান ও সিএমপি কমিশনারের প্রতিনিধি ডিসি (দক্ষিণ) মো. আলমগীর হোসাইন। আরো উপস্থিত ছিলেন সিডিএ’র সাবেক চেয়ারম্যান প্রকৌশলী শাহ মো. আখতার উদ্দিন, মুসল্লি কমিটির সিনিয়র সহসভাপতি মো. হেলাল উদ্দিন, কেডিএস গ্রুপের এমডি সেলিম রহমান, প্যাসিফিক গ্রুপের এমডি সৈয়দ মোহাম্মদ তানভীর, ডায়মন্ড সিমেন্টের ডিএমডি লায়ন হাকিম আলী, স্মার্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান প্রমুখ।

ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, আগামী ৬ নভেম্বর আমি সৌদি আরবে যাচ্ছি। দুইজন মন্ত্রীর সাথে আমার দ্বিপাক্ষিক আলোচনা আছে। ১১ নভেম্বর হজ এবং উমরাহ মন্ত্রীর সাথে আমার চুক্তি হবে। ১৩ নভেম্বর মিনিস্টার ফর কল, গাইডেন্স অ্যান্ড এনরোলমেন্ট মন্ত্রীর সাথে বসব। ধর্ম মন্ত্রণালয় তথা ইসলামিক ফাউন্ডেশন কী কী কাজ করে সে বিষয়ে তাকে ব্রিফ করব। স্বাধীনতার পরে কোনো মন্ত্রী সৌদির এই মন্ত্রীর সাথে আলোচনা করেনি। আমরা আলোচনা করব এবং আন্দরকিল্লা শাহী জামে মসজিদের কাঠামো তাকে দেখাব। পরবর্তী সময় কোনো সহযোগিতা চাইব। তিনি বলেন, তুরস্কের সাথে ইতোমধ্যে এ কে খান ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান যোগাযোগ করেছেন। আমার যাকে বলতে হয়, যার কাছে লিখতে হয় ইনশাল্লাহ এটি আমি করে যাব। উপদেষ্টা বলেন, এখানে যে ৩৮০ কোটি টাকা, এটি চাইলে বাংলাদেশ সরকার করতে পারতো। বাট ইট উইল টেক টাইম। শাহজাহান ভাইয়ের সাথে কথা বলেছি, আমাদের কাছে দুটি পথ খোলা। আমি প্রথম এই প্রজেক্ট অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠাব। অর্থ থেকে পাঠাবে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে। সেখানে আইএমইডি, পিইসি’তে যাবে। এরপরে একনেকে যাবে। সবশেষে অর্থ ছাড় হবে। ততোদিনে আমরা তো থাকবই না, আমাদের পরবর্তী যে সরকার আসবে তারাও থাকবে কিনা সন্দেহ আছে। অতএব আপনারা বললে আমি সরকার থেকেও টাকা নিতে পারব। অথবা যা টাকা আছে তা দিয়ে শুরু করলাম। সংশ্লিষ্ট সকলে মিলে যৌথভাবে আমরা প্রকল্পটা করতে পারব। এটার উপর ভরসা করে আমরা নেমেছি। ৩৮০ কোটি টাকা হাতে আসলেই কাজ শুরু করব, এটা নয়। বরং আমাদের হাতে ১০১১ কোটি টাকা আছে, কিছু প্রতিশ্রুতি পাওয়া গেছে, আরো কিছু যদি পাই আমরা শীগ্রই কাজ শুরু করতে চাই। আল্লাহর উপর ভরসা করেই আমরা কাজ শুরু করব। এটার পূর্ণতা দান করবে মহান আল্লাহতাআলা। সবার সহযোগিতায় আমরা চট্টগ্রামের আন্দরকিল্লা শাহী জামে মসজিদ একটা দৃষ্টিনন্দন, পরিবেশ বান্ধব মসজিদ হিসেবে গড়ে তুলতে পারব বলেও বক্তব্যে উল্লেখ করেন ধর্ম উপদেষ্টা। বক্তব্যে সিটি মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, আন্দরকিল্লা শাহী জামে মসজিদ চট্টগ্রামের একটি হেরিটেজ। এটি আল্লাহর ঘর। এই ঘরের জন্য আপনি যত বেশি দিতে পারেন ততো বেশি আপনি পেয়ে যাবেন। তিনি বলেন, আমাদের চট্টগ্রামে ব্যবসায়ীর অভাব নেই। আমাদের চট্টগ্রাম হচ্ছে কমার্শিয়াল সিটি। সেক্ষেত্রে ৩০০ কোটি ৪০০ কোটি কিংবা ৫০০ কোটি টাকাও আল্লাহর রহমতে কোনো সমস্যা হবে না। ভালো কাজের জন্য কোনো টাকার অভাব থাকে না। কাজ শুরু হয়ে যাক। আশা করছি, কয়েক বছরের মধ্যে ভালো একটা কাঠামা আমরা দেখতে পারব। এক্ষেত্রে আমার পক্ষ থেকে সার্বিক সহযোগিতা থাকবে। অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সৈয়দ মাহবুবুল হক বলেন, জেলা প্রশাসক বলেছেন যে, আন্দরকিল্লা শাহী জামে মসজিদ সংস্কার ও পুনঃনির্মাণের ক্ষেত্রে জেলা প্রশাসন সবসময় পাশে থাকবে। সভা শেষ করার আগে সভার সভাপতি সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখার পাশাপাশি মোনাজাত করেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধনভেম্বরেও ডেঙ্গুর প্রকোপ, কমেছে চিকুনগুনিয়া
পরবর্তী নিবন্ধযুবককে কুপিয়ে, গলা কেটে হত্যা করলেন প্রবাসী, নালা থেকে উদ্ধার