নিত্যপণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণে কৃষি বিপণন অধিদপ্তর বেশ কিছু পণ্যের মূল্য নির্ধারণ করে দেয়। মূল্য নির্ধারণের সপ্তাহ পেরোলেও বাজারে এর কোনো ধরনের প্রভাব নেই। এমনকি বেঁধে দেওয়া দরে পণ্য বিক্রি হচ্ছে কিনা, এই নিয়ে তদারকিও হচ্ছে না।
ভোক্তারা বলছেন, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে ভোক্তাদের নাভিশ্বাস উঠেছে। এরমধ্যে রমজানে কৃষি বিপণন অধিদপ্তর লোক দেখানো মূল্য নির্ধারণ করে দায় সেরেছে। খুচরা ব্যবসায়ীরা বলছেন, সরকার দাম বেঁধে দিলেও পাইকারী বাজার থেকে তারা এই দামে সবজি কিনতে পারছেন না।
কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের গত ১৫ মার্চের প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, আলু ২৮ টাকা, কাঁচামরিচ ৬০ টাকা, বাঁধাকপি ২৮ টাকা, ফুলকপি ২৯ টাকা, বেগুন ৪৯.৭৫ টাকা, শিম ৪৮ টাকা, টমেটো ৪০ টাকা, মিষ্টিকুমড়া ২৩ টাকায় বিক্রি করার কথা বলা হয়েছে। অপরদিকে নগরীর কাঁচা বাজারগুলোতে আলু বিক্রি হচ্ছে ৪০–৪৫ টাকা, বেগুন ৪৫–৫০ টাকা, কাঁচামরিচ ৮০ টাকা, বাঁধাকপি ৬০ টাকা, মিষ্টিকুমড়া ৩৫–৪০ টাকা, শিম ৬০ টাকা এবং টমেটো ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
কাজীর দেউরি বাজারের সবজি বিক্রেতা মোহাম্মদ আজম বলেন, বাজারে সবজির দাম নির্ভর করে চাহিদা ও সরবরাহের ওপর। আমরা খুচরা ব্যবসায়ীরা পাইকারী বাজার থেকে সবজি এনে বিক্রি করে। সবজি পচনশীল পণ্য। চাইলেই মজুদ করে রাখা যায় না। আমি পাইকার বাজার থেকে যখন সবজি কিনে আনি, সেগুলো বাছাই করে বিক্রি করতে হয়। কারণ পাইকারী দোকান থেকে আনার পর অনেক সবজি নষ্ট পড়ে। এতে আমাদের কেজিপ্রতি কেনার খরচও বেড়ে যায়। ক্রেতারা প্রতিটি সবজি দেখে দেখে কিনেন। সরকার যদি পাইকারী পর্যায়ে বেঁধে দেয়া দাম নিশ্চিত করে তবে আমরাও সরকারের বেঁধে দেয়া দামে বিক্রি করতে পারবো।
অধিদপ্তরের তালিকায় খুচরা মূল্য হিসেবে গরুর মাংস ৬৬৫ টাকা, ব্রয়লার মুরগি ১৭৫ টাকা, সোনালী মুরগি ২৬২ টাকা, ছাগলের মাংস ১ হাজার ৩ টাকা, ডিম প্রতি পিস ১০ টাকা ৪৯ পয়সা, কাতাল মাছ কেজি ৩৫৩ টাকা এবং পাঙ্গাস মাছ ১৮০ টাকা নির্ধারণ করে দেয়া হয়। কিন্তু বাজারে বাস্তবে গরুর মাংসের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৭৫০–৯০০ টাকা, ছাগলের মাংস ১ হাজার ১০০ টাকা, প্রতিকেজি ব্রয়লার মুরগি ২০০–২২০ টাকা, সোনালি মুরগি ৩৩০–৩৫০ টাকা, দেশি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৬২০ টাকা কেজি দরে। কাতাল ৩৬০ টাকা, পাঙ্গাস ২০০ টাকা এবং মুরগির ডিম ডজনপ্রতি বিক্রি হচ্ছে ১৩০ টাকায়।
জানতে চাইলে কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) চট্টগ্রাম বিভাগীয় সভাপতি এসএম নাজের হোসেন দৈনিক আজাদীকে বলেন, সরকার দাম বেঁধে দিয়েছে, কিন্তু ব্যবসায়ীরা সেই দাম মানছে না। এতে ভোক্তাদের তো কোনো লাভ হলো না। বেঁধে দেয়া দাম বাস্তবায়ন কেন হচ্ছে না, সেটি তদারকি করা সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরের দায়িত্ব।