সরকারের আজ্ঞাবহ হব না : সিইসি

| বুধবার , ২২ জুন, ২০২২ at ১০:৪৫ পূর্বাহ্ণ

গত দুটি নির্বাচন কমিশনকে যে সমালোচনা সইতে হয়েছিল, তা এড়াতে চাইছেন পরবর্তী নির্বাচনের দায়িত্বভার নেওয়া সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল। গতকাল মঙ্গলবার নির্বাচন ভবনে এক মতবিনিময়ে তিনি বলেছেন, সরকারের আজ্ঞাবহ হয়ে কাজ করবেন না তারা। কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ এবং কে এম নূরুল হুদার নেতৃত্বাধীন দুটি নির্বাচন কমিশনই আওয়ামী লীগ সরকারের আজ্ঞাবহ হয়ে কাজ করেছে বলে অভিযোগ রয়েছে বিএনপির।

নূরুল হুদাদের বিদায়ের পর এই বছরই কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বে নতুন ইসি গঠিত হয়, যাদের পরিচালনায় আগামী সংসদ নির্বাচন হবে। রাজনৈতিক দল বিশেষ করে বিরোধী দলগুলোর আস্থা অর্জনের চেষ্টায় থাকা এই ইসি ইভিএম ব্যবহারের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে মতবিনিময় শুরু করেছে। সেই মতবিনিময়ের ধারাবাহিকতায় গতকাল মঙ্গলবার ৮টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বৈঠক করেন সিইসি ও নির্বাচন কমিশনাররা। খবর বিডিনিউজের।

সেই সভায় কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, আমরা আমাদের দিক থেকে শতভাগ সততার সাথে, নিষ্ঠার সাথে কাজ করব। আমরা যারা কমিশনে আছি, তারা সরকারের আজ্ঞাবহ হয়ে কোনো কাজ করব না। সরকারও চাইবে না আমরা আজ্ঞাবহ হয়ে কাজ করি। ইভিএম নিয়ে মতভেদ কাটাতে রাজনৈতিক দলগুলোসহ সবার সহযোগিতা চান তিনি। আমি ব্যক্তিগতভাবে শতভাগ আস্থায় বিশ্বাস করি না। আপনি হারলে বলবেন উনি চোরামি করেছেন, উনি বলবেন আমি খুব সৎ। একই অবস্থাটা চলবে। এ একটা দ্বন্দ্ব সবসময় থেকে যাবেই। এই আয়োজনে দলগুলোর প্রতিনিধিদের ইভিএমের কারিগরি দিক দেখাচ্ছে ইসি, যাতে কারসাজির সন্দেহ দূর হয়।

সিইসি বলেন, ইভিএমের উপর যেহেতু আপনাদের পুরোপুরি আস্থা আসছে না। আমরা আজকের আলোচনাটা আয়োজন করেছিলাম ব্যাপক কনসাল্টেশনের জন্য। আমরা জানি ইভিএম নিয়ে আপনাদের দ্বিধা-দ্বন্দ্ব আছে। এটা থাকতেই পারে। আমরা এটা কাটিয়ে উঠার চেষ্টা করছি। তিনি বলেন, ইভিএমে একজনের ভোট অন্যজনের দেওয়ার কোনো সুযোগই থাকবে না।

গত ১৫ জুন কুমিল্লাসহ বিভিন্ন স্থানীয় নির্বাচনে ইভিএমে কারসাজির কোনো ধরনের অভিযোগ না পাওয়ার কথাও বলেন সিইসি। সভায় নির্বাচন কমিশনার আহসান হাবিব খান বলেন, ইভিএম নিয়ে আপনাদের সন্দেহটা হলো- ভেতরে কেউ হয়ত অন্য চাপ দিয়ে দেবে। সেটা নিয়ন্ত্রণের জন্য কমিশন ব্যবস্থা নিয়েছে বিগত নির্বাচনে। কুমিল্লা ছাড়াও ১৩৭ টিতে ইভিএমে ভোটে কেউই কোনো প্রকার অভিযোগ করেনি।

তিনি বলেন, আস্থা না থাকার পেছনেও নিশ্চয়ই কারণ আছে। আস্থা একবার ভঙ্গ করলে তা পুনরুদ্ধারে সময় লাগবে। এ সময়টা আমরা নিচ্ছি। তবে গ্যারান্টি দিয়ে বলতে পারি, আমাদের কমিশন কোনো প্রকার পক্ষপাতিত্ব করবে না, সঠিক কাজটি করবে।

এদিনের বৈঠকে ১৩টি দলকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। তবে বিএনপিসহ পাঁচটি দল আসেনি। উপস্থিত ছিল- ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ, ইসলামী ঐক্যজোট, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট, ন্যাশনাল পিপলস পার্টি-এনপিপি, খেলাফত মজলিস, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন ও জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ।

এর আগে ১৮ জুনের বৈঠকে ১৩টি দলের মধ্যে ১০টি অংশ নিয়েছিল। ২৮ জুন আওয়ামী লীগসহ আরও ১৩টি দলকে বৈঠকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবৃষ্টির দুর্ভোগ চাক্তাই-খাতুনগঞ্জে
পরবর্তী নিবন্ধঅবকাঠামো করতে হবে বন্যার কথা মাথায় রেখে : প্রধানমন্ত্রী