চট্টগ্রাম ওয়াসার সংযোগ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে পানির বিল বকেয়া রাখা ওয়াসার শীর্ষ তালিকায় রয়েছে সরকারি ১০টি প্রতিষ্ঠান এবং বেসরকারি ১০ জন গ্রাহকের নাম। চট্টগ্রাম ওয়াসা নিজস্ব ওয়েবসাইটে তাদের পানির বিলের সর্বোচ্চ বকেয়াধারী সরকারি ১০টি প্রতিষ্ঠান এবং বেসরকারি ১০ জন খেলাপি গ্রাহকের তালিকা প্রকাশ করেছে।
ওয়াসার বকেয়া বিলের তালিকায় সরকারি ১০ শীর্ষ প্রতিষ্ঠানের কাছে বকেয়া বিলের পরিমাণ ১৮ কোটি ৬০ লাখ ১১ হাজার ৫৪৭ টাকা। বেসরকারি ১০ জন খেলাপি গ্রাহকের কাছে বকেয়ার পরিমাণ ২ কোটি ১ লাখ ৯৭ হাজার ২৮৫ টাকা। চট্টগ্রাম ওয়াসার রাজস্ব শাখার এক কর্মকর্তা আজাদীকে বলেন, আমরা আমাদের বকেয়া বিল আদায়ে ম্যাজিস্ট্রেট দিয়ে অভিযান চালাচ্ছি। তারপরও বেশ কিছু বকেয়া রয়ে গেছে সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে।
ওয়াসার ওয়েব সাইটে বকেয়া তালিকায় সরকারি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে একেবারে শীর্ষে রয়েছে গণপূর্ত অধিদপ্তর। গণপূর্ত অধিদপ্তরের বিভিন্ন স্থাপনায় ৫০টি সংযোগ নিয়ে প্রতিষ্ঠানটির ৭ কোটি ২৮ লাখ ৯০ হাজার ৭৬৪ টাকা বকেয়া রয়েছে। এরপরই ৯২টি সংযোগ নিয়ে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের কাছে ওয়াসার বকেয়ার পরিমাণ ২ কোটি ৩৩ লাখ ২৯ হাজার ৫২৩ টাকা। বাংলাদেশ পুলিশের চট্টগ্রামের বিভিন্ন স্থাপনায় ওয়াসার ৩১টি সংযোগের বিপরীতে বিল ককেয়া রয়েছে ১ কোটি ৪৭ লাখ ১৮ হাজার ৪৮২ টাকা। ১৪টি সংযোগ নিয়ে স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের ১ কোটি ৩৯ লাখ ৯৫ হাজার ১২৪ টাকা বকেয়া রয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বিভিন্ন কার্যালয়ে ১৩টি সংযোগের বিপরীতে ১ কোটি ৩ লাখ ৬১ হাজার ৮৯ টাকা, সড়ক ও জনপথের বিভিন্ন অফিস ও আবাসিক স্থাপনায় ২৮টি সংযোগে ওয়াসার বকেয়া বিলের পরিমাণ ১ কোটি ৫২ লাখ ৩৮ হাজার ৩২৩ টাকা। চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের কাছে ১৪টি সংযোগের বিপরীতে চট্টগ্রাম ওয়াসার পাওনা ১ কোটি ৪ লাখ ৭১ হাজার ৩৯৪ টাকা। পিডিবির ৩৫টি সংযোগের বিপরীতে ওয়াসার পাওনা ৫৫ লাখ ৯৬ হাজার ৩৪৫ টাকা। শিল্প মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ২০টি সংযোগের বিপরীতে ওয়াসার পাওনা ৭৫ লাখ ৯৫ হাজার ৮৯৬ টাকা। সরকারি ১০ শীর্ষ প্রতিষ্ঠানের কাছে ওয়াসার বকেয়া বিলের পরিমাণ ১৮ কোটি ৬০ লাখ ১১ হাজার ৫৪৭ টাকা।
অন্যদিকে বেসরকারি সংযোগের মধ্যে পাথরঘাটার বংশাল রোডের বাসিন্দা আব্দুল হামিদের বকেয়া বিলের পরিমাণ চট্টগ্রামে সবচেয়ে বেশি। তার ২৫৫টি সংযোগের বিপরীতে ওয়াসার বকেয়া বিলের পরিমাণ ৭৩ লাখ ৬৪ হাজার ২৩০ টাকা। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বিল খেলাপির তালিকায় রয়েছে চকবাজার কেবি আমান আলী রোডের বাসিন্দা আলহাজ্ব কালা মিয়ার ৬৫টি সংযোগ। তার কাছে ওয়াসার বকেয়া বিলের পরিমাণ ১৮ লাখ ৯৭ হাজার ৯৪৮ টাকা। এরপর ৩৫টি সংযোগে ও আর নিজাম রোডস্থ বাসিন্দা ফাহিম আহমেদ ফারুক চৌধুরীর বকেয়ার পরিমাণ ১৬ লাখ ৬ হাজার ৯৯৯ টাকা। আন্দরকিল্লাস্থ জেমিসন মাতৃসদন হাসপাতালে ৫০টি সংযোগে ওয়াসার বকেয়ার পরিমাণ ১৫ লাখ ৯৬ হাজার ৫৬৬ টাকা। বেসরকারি ১০ জন খেলাপি গ্রাহকের কাছে মোট বকেয়ার পরিমাণ ২ কোটি ১ লাখ ৯৭ হাজার ২৮৫ টাকা।
এ বিষয়ে চট্টগ্রাম ওয়াসার এক রাজস্ব কর্মকর্তা বলেন, সরকারি প্রতিষ্ঠানের কাছে চট্টগ্রাম ওয়াসার পানির বকেয়া বিলের পরিমাণ দিনদিন বাড়ছে। বর্তমানে সরকারি–বেসরকারি অনেকগুলো প্রতিষ্ঠানের কাছে চট্টগ্রাম ওয়াসার ১১৩ কোটির বেশি বকেয়া পাওনা রয়েছে বলে ওয়াসার রাজস্ব বিভাগ থেকে জানা গেছে। প্রতিদিনই বকেয়া আদায় হচ্ছে। সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর ইউটিলিটি বিলের বরাদ্দ প্রতি মাসে না আসায় বিল বকেয়া থাকছে।