সরকারি সংস্থাসমূহ কলুষমুক্ত থাকুক

ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী | শনিবার , ২৩ মার্চ, ২০২৪ at ৪:৫৮ পূর্বাহ্ণ

বিশ্বায়নের সমসাময়িক পরিপ্রেক্ষিতে প্রায় প্রতিটি রাষ্ট্রই গণতন্ত্রকে আর্থসামাজিক উন্নয়নের পূর্বশর্ত এবং প্রণিধানযোগ্য অনুষঙ্গ হিসেবে অধিকতর গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করছে। ধারাবাহিকতায় অধুনা উন্নয়নশীল দেশসমূহেও গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়ার রাজনৈতিক অঙ্গীকার প্রায় প্রতিটি দল এবং দলীয় সরকারের আদর্শউদ্দেশ্য হিসেবে প্রতিষ্ঠিত। ব্যক্তি মানুষের স্বাধীনতা এবং সৃজনশীলতার প্রতি পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ প্রতিটি রাষ্ট্রের শাসনতন্ত্রের মৌলিক বিষয় হওয়া সত্ত্বেও এর প্রতিফলন কতটুকু বাস্তবে গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে, তা বিচার বিশ্লেষণের দাবী রাখে। একবিংশ শতাব্দীর সংঘটিত ঘটনা প্রবাহের পর্যালোচনায় প্রতীয়মান হয় যে, মুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠার বুদ্ধিবৃত্তিক ও নৈতিক শিখরের দ্যোতক বা আইনের শাসন ও ক্ষমতার ভারসাম্যের চিন্তাচেতনা ও ধারণার সমন্বিত প্রয়াস অনেকাংশে সংকুচিত।

বিভিন্ন স্বৈরতন্ত্রের নীতিমালাকে পর্যুদস্ত করে গণমানুষের ইচ্ছাশক্তি, ঋজুতা ও সৃষ্টিশীলতার প্রাসঙ্গিক ক্ষেত্রে মানবতাবাদের বিজয় নিরন্তর বিপন্ন ও বিপর্যস্ত। তবুও সুশাসনের প্রধান নিয়ামকসততা, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার সমৃদ্ধ বিবর্ধন গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থাকে সত্যনিষ্ঠতায় প্রচ্ছাদিত করবেএতে কারো দ্বিমত করার অবকাশ নেই। এটি সুপ্রতিষ্ঠিত যে মানুষ আত্মসম্মানআত্মমর্যাদাআত্মবিশ্বাসের বিবর্ত অবস্থানকে সুদৃঢ় করার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় নাগরিক স্বাধীনতা ও অধিকার ভোগ করার প্রায়োগিক শিক্ষার আরোপিত উপমা হচ্ছে ‘গণতন্ত্র’। রাষ্ট্রবিজ্ঞানের জনক মনীষী এরিস্টটল বিমোক্ষণ দৃষ্টিভঙ্গি ও বস্তুবাদী দর্শনের ঐতিহ্যিক জিজীবিষা জীবনের প্রয়োজনে নয়, বরং উত্তম জীবনপ্রবাহের উৎকর্ষতার প্রয়োজনে রাষ্ট্রের উৎপত্তির কথা স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন। এজন্যেই রাষ্ট্র মানব বিকাশ ও পরিপূর্ণতার জন্য একটি অনিবার্য প্রতিষ্ঠান।

মানুষ, পরিবার ও সমাজের সর্বাঙ্গীন স্বাধীনতা, নিরাপত্তা ও মঙ্গল প্রতিষ্ঠায় রাষ্ট্র ব্যবস্থাপনার সার্থকতা সর্বজনবিদিত। ব্যক্তি, শ্রেণি বা দলীয় স্বার্থ রক্ষার যে ধারণা তথা স্বৈরতন্ত্র, অভিজাততন্ত্রের বিপরীতে মানুষ প্রতিষ্ঠা করেছে জনন্যায়তন্ত্র বা গণতন্ত্র। এখানেই সুসংহত আইনের শাসন, পরিচর্যা ও অনুশীলন অবধৌতিক মহিমায় রাষ্ট্র শাসনকে গৌরবদীপ্ত করে। স্বাধীনতা, সাম্য ও মৈত্রীর বিশ্বজনীন ধারণা ও চেতনায় উর্জস্বী ইউরোপের রেনেসাঁ বা ফরাসী বিপ্লব গণতন্ত্রের যে অবিনাশী শক্তির সোপান নির্মাণ করেছে, তারই ভিত্তিতে রাষ্ট্র জনগণের চরিত্র, আশাআকাঙ্ক্ষা, আর্থসামাজিক পরিবেশ, পারিপার্শ্বিক ও ভৌগোলিক অবস্থানের বিষয়সমূহ বিবেচনায় এনে মুক্ত সমাজ গঠনের প্রক্রিয়াকে সুস্পষ্ট করেছে। এটিই গণতন্ত্রগণতান্ত্রিক ইতিহাসের অনবদ্য বৈশিষ্ট্য ও ঐতিহ্য।

অতিসম্প্রতি বাংলাদেশসহ বিশ্বজুড়ে নষ্ট রাজনৈতিক সংস্কৃতি, ক্ষমতা ও অর্থের দুর্বৃত্তায়ন এবং সুশাসন পরিচর্যায় দুর্ভেদ্য প্রতিবন্ধকতা জাতিরাষ্ট্রের নৈর্ব্যক্তিক উন্নয়ন সমৃদ্ধিকে প্রচন্ড চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছে। সততাযোগ্যতার অবমূল্যায়ন, মিথ্যাভিত্তিহীন অভিযোগে শতভাগ নির্দোষ ব্যক্তির বিরুদ্ধে তদন্তবিচারের নামে হয়রানি, নিরীহদরিদ্রঅসহায় ব্যক্তিদের ন্যায্য বিচার বঞ্চনা প্রভৃতি পুরোদেশকে যেন চরম অস্থিতিশীল করে তুলছে। জনশ্রুতি মতে, অর্থলিপ্সু হিংস মানবরূপী দানবেরা নানা আর্থিক লেনদেনে প্রতিহিংসাপ্রতিশোধপরায়নতার কঠিন চিত্র নির্মাণ করছে। অযথা সম্মানক্ষুণ্নের ভয়ে ক্ষমতাঅর্থপেশীশক্তির কাছে আত্মসমর্পনে নগদ অর্থভূসম্পত্তি বা অন্যান্য নানা উপায়ে প্রকৃত অপরাধীদের মনোরঞ্জন করতে ব্যর্থ হলে ভিটেবাড়িসহ সর্বস্ব হারানোর ভীতি সমাজে নিত্যনৈমিত্তিক বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।

পক্ষান্তরে কথিত বিভিন্ন সংস্থা কর্তৃক প্রতারণামূলক বানোয়াট অভিযোগের ধোঁয়া তুলে সম্মানিত ব্যক্তিদের সমাজে হেয়প্রতিপন্ন করার বিকৃত মানসিকতা সম্পন্ন লোকের অভাব নেহায়েত কম নয়। ব্যক্তিস্বার্থ চরিতার্থে ব্যর্থ কদর্য চরিত্রের মানুষগুলো নানা উপায়ে অর্থের বিনিময়ে অপ্রত্যাশিত অভিযোগ দাখিল এবং তারই প্রেক্ষিতে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে ম্যানেজ করে ঘটনা তদন্তের অপতৎপরতায় লিপ্ত থাকছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের এসব সংকট উত্তরণে ন্যূনতম মনোযোগ আছে বলে মনে হয় না। অভিজ্ঞ মহলের মতে, কারো বিরুদ্ধে কোন ধরনের অভিযোগ যেকোন সংস্থার কাছে প্রদত্ত হলে সংস্থার প্রথম দায়িত্ব হওয়া উচিত; অভিযোগকারীর পরিচয় এবং অভিযোগের উদ্দেশ্য কোন হীনস্বার্থে করা হচ্ছে কিনা তার যথার্থ নিরপেক্ষ অনুসন্ধান। অভিযোগকারী সম্পর্কে পরিপূর্ণ জ্ঞাত হয়ে এবং তার পরিচিতি প্রকাশ করে অভিযোগের তদন্ত কাজ শুরু করা আবশ্যক। এখানে অবশ্যই তদন্তের পূর্বেই যার বিরুদ্ধে অভিযোগ তাকে অভিযোগকারীর নাম ঠিকানা জানানো এবং এর প্রেক্ষিতে আইনি প্রতিকার পাওয়ার সুযোগ থাকা বাঞ্ছনীয়। ন্যূনতম অভিজ্ঞতাদক্ষতাপ্রশিক্ষণবিভিন্ন সংস্থার আইন সম্পর্কে পরিপূর্ণ অজ্ঞ ব্যক্তিদের দিয়ে তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনা কতটুকু যৌক্তিক; তা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অবশ্যই বিবেচনায় আনতে হবে। ব্যক্তিপ্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মামলা করে বিপুল ক্ষেত্রে পরাজিত হওয়ার মুখ্য কারণ হিসেবে উল্লেখ্য অযোগ্যতাকে আমলে নেওয়া জরুরি।

পরিপূর্ণ তদন্ত শেষে অযাচিত মামলার অধিকাংশ ক্ষেত্রে দেখা যায়; অভিযোগকারীর অভিযোগ সম্পূর্ণ উদ্দেশ্য প্রণোদিতচক্রান্তমূলক। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, তদন্ত পরিক্রমায় যার বিরুদ্ধে অভিযোগ তার পরিবার ও সমাজে সম্মানহানির দীর্ঘ ক্ষত তৈরি হয়ে যায়। ইতোমধ্যে বাংলাদেশ সরকারের গৃহীত পদক্ষেপ চমকপ্রদভাবে সর্বত্রই প্রশংসিত ও সমাদৃত। বাংলাদেশের সমগ্র নাগরিক বস্তুনিষ্ঠ প্রক্রিয়ায় এইসব দুরুহ পদক্ষেপের যথার্থ বাস্তবায়নে প্রযুক্ত প্রতিষ্ঠানসমূহ বা আদালত, দুদকসহ অন্যান্য সকল সংস্থার প্রতি গভীরভাবে আস্থাশীল। এখনো দেশের মানুষ নিবিড়ভাবে বিশ্বাস করতে চায় যে, এসব অভিযান যেন নিপীড়ননির্যাতনহয়রানিচরিত্র হনন নয়, অনৈতিক প্রভাব; প্ররোচণা বা অর্থলিপ্সায় নিরীহনির্দোষমার্জিতঅসহায় ব্যক্তিদের ফাঁসিয়ে দেওয়া বা মিডিয়া ট্রাইয়ালের উদ্দেশ্যেই যেন পরিচালিত না হয়।

যথার্থ অর্থেই অভিযোগের সত্যতা নির্ধারণে প্রশিক্ষিত ও পারদর্শী কর্মকর্তাদের অকাট্য প্রমাণ এবং প্রযোজ্য সততার মানদন্ডে উত্তীর্ণ রাষ্ট্র যন্ত্রের বাহন সমূহের চৌকস তদন্তকারীদের সমন্বিত নিগূঢ় ও পুনঃক্রস যাচাই বাছাইয়ের মাধ্যমে দোষী ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে আইনের আওতায় এনে অবশ্যই কঠোর শাস্তির পরিদৃশ্যমান ব্যবস্থা একান্তই প্রয়োজনীয়। প্রহসন বা প্রশ্নবিদ্ধ হতে পারে অথবা আদালতে পরাভূত হওয়ার সমূহ সম্ভাবনা পরিহার করেই যথাযথ প্রক্রিয়ায় আদালতে মামলা বা অভিযোগপত্র প্রদান বাঞ্চনীয়। নির্ধার্য পরাকাষ্ঠা আদালত বা দুদক কর্তৃক দৃষ্টান্ত স্থাপনে ব্যর্থ হলে দুর্বৃত্তায়নই জয়ী হবে। সাবলীল ব্যক্তিত্ব, সৃজনশীল প্রতিভা, মানবতাবাদ, বিবেকভব্যতা এবং গণতন্ত্রে বিশ্বাসী সকলেই প্রাজ্ঞসর নৈতিকতায় প্রোৎসাহিত। আইনের প্রতি প্রগাঢ় শ্রদ্ধাশীল জনগোষ্ঠী আইনআদালতের নৈষ্ঠিক বিচার কার্যক্রমে এখনও পুরোপুরি নির্ভরশীল।

নিঃসন্দেহে বলা যায় যে, প্রভাবিত আদালত বা অন্যান্য সংস্থা কোনভাবেই ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে পারে না। জাতিকে যার জন্য কালপরিক্রমায় কঠিন মূল্য দিতে হয়। দেশে জজমিয়া নাটকসহ কারণেঅকারণে বহু নিরীহনির্দোষ মানুষকে উম্মাদ নষ্ট ব্যক্তিদের জিঘাংসার শিকারে অপরিসীম যন্ত্রণাকাতর, কারাবরণের দৃষ্টান্তও অপ্রতুল নয়। অতএব আদালত, দুদক বা অন্যান্য বিচারিক কার্যক্রম যাতে কোনভাবেই উল্লেখ্য ঘটনার নৈতিক উদাহরণ না হয়; সেদিকে রাষ্ট্রের মনোযোগ আকর্ষিত হওয়া খুবই জরুরি। রবীঠাকুরের ‘প্রশ্ন’ কবিতার পংক্তি উদ্ধৃত করে সমস্বরে যেন আমাদের উচ্চারণ করতে না হয়, ‘ভগবান, তুমি যুগেযুগে দূত পাঠায়েছ বারেবারে দয়াহীন সংসারে,/ তারা বলে গেল “ক্ষমা করো সবে”, ব’লে গেল “ভালোবাসোঅন্তর হ’তে বিদ্বেষবিষ নাশো।”/ বরণীয় তারা, স্মরণীয় তারা, তবুও বাহিরদ্বারে/ আজি দুর্দিনে ফিরানু তাদের ব্যর্থ নমস্কারে।/ আমিযে দেখেছি গোপন হিংসা কপট রাত্রিছায়ে/ হেনেছে নিঃসহায়ে,/ আমিযে দেখেছি প্রতিকারহীন শক্তের অপরাধে বিচারের বাণী নীরবে নিভৃতে কাঁদে।’ প্রচলিত ধারণা এই যে, শুধু স্বল্প সংখ্যক দুর্বৃত্তরাই শাস্তিপ্রাপ্ত হয়, বড়মাপের অপরাধীরা কেন জানি বরাবরই অধরায় থেকে যায়।

বিভীষণ বা ‘ভুতের মুখে রাম রাম’, অবৈধ পেশী ও অর্থশক্তি, বর্ণচোরা, তোষামোদকারী অথবা বিভ্রষ্ট রাজনৈতিক সংস্কৃতি কথিত গণতন্ত্রের মোড়কে ভয়ংকর দাপট এবং ক্ষমতার বলয় সৃষ্টিকারীদের রুখে দেওয়ার জন্য সরকার বা দেশবাসীকে একতাবদ্ধ হতে হবে। একা সরকার প্রধানের পক্ষে সকল ইতিবাচক উদ্যোগের সফল বাস্তবায়ন সম্ভব নয় যদি না জাতিরাষ্ট্রের সকল জনগোষ্ঠীর সমন্বিত শক্তি জোরালো ভূমিকা পালন না করে। রাজনৈতিক সংস্কৃতির দৈন্য দশা এমন এক ডানপিটে পর্যায়ে পৌঁছে গেছে যা পরম শ্রদ্ধেয় কবি, প্রাবন্ধিক ও কলামিস্ট প্রয়াত আব্দুল গাফফার চৌধুরীর বক্তব্যে কিছু কাল আগে সুস্পষ্ট উপস্থাপিত হয়েছে। সম্ভবত তাঁর কোন লেখায় তিনি উল্লেখ করেছেন, ‘আগে রাজনীতিকরা দলের নেতা হতেন, এখন হন ব্যবসায়ীরা। এখন মৎসুদ্দি পুঁজির বিকাশ ঘটেছে দেশে। রাজনীতিতেও তাদেরই দাপট। রাজনীতিকরা দলে বছরের পর বছর কাজ করে নেতৃত্বের আরেকটি ধাপ অতিক্রম করতেন। এখন ব্যবসায়ী ও শিল্পপতিরা দলে যোগ দিয়েই নেতা হতে চায়। তারা টাকা দিয়ে এমপি আসন কেনে। দলের নেতৃত্বেও আসীন হয়। তাদের দাপটে রাজনীতিকরা বিতাড়িত হচ্ছেন।’ এটি সুস্পষ্ট যে, সরকারের সকল সংস্থা যদি সততাস্বচ্ছতাজবাবদিহিতার মানদন্ডে সুবিচার নিশ্চিতকল্পে কার্যকর ভূমিকা পালন করে; সুশাসন তখন আইনের শাসনের সম্পুরকপরিপূরক ধারা প্রবহমান থাকে। সুস্থযোগ্য সামাজিক ও রাজনৈতিক নেতৃত্বের বিকাশমানতা সাবলীল গতিতে উম্মোচিত হয়। প্রকৃত অর্থে দেশ ও সমাজকে সমৃদ্ধঋদ্ধ করার জন্য সংস্থাসমূহকে পর্যাপ্ত কার্যকর করার উদ্যোগ অবশ্যই প্রত্যাশিত। অন্যথায় ক্ষোভবিক্ষোভহতাশা ইত্যাদি গণরোষে পরিণত হয়ে জনগণের প্রতিবাদী কন্ঠকে স্তব্ধপ্রতিরোধ করতে পরাজিত হবেই।

লেখক : শিক্ষাবিদ, সাবেক উপাচার্য চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়

পূর্ববর্তী নিবন্ধহল্যান্ড থেকে
পরবর্তী নিবন্ধইফতারে জুস পান করায় বাংলাদেশিকে হত্যা করলেন পাকিস্তানি