সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিলেন দেড় শতাধিক

আজাদী প্রতিবেদন | সোমবার , ১ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ at ৬:০৪ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) শিক্ষার্থীদের সাথে স্থানীয় গ্রামবাসীর সংঘর্ষের ঘটনায় দেড়শতাধিক শিক্ষার্থী নগরীর সরকারি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। এরমধ্যে গুরুতর আহত একজন শিক্ষার্থীকে বর্তমানে নগরীর বেসরকারি পার্কভিউ হাসপাতালের আইসিইউ’তে ভর্তি করা হয়েছে। এছাড়া নগরীর বেসরকারি ন্যাশনাল হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন গুরুতর আহত চবি ইসলামিক স্টাডিস বিভাগের শিক্ষার্থী নাইমুল ইসলামকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকার ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব কার্ডিওভাস্কুলার ডিজিজ (এনআইসিভিডি) হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।

চট্টগ্রাম জেলার সিভিল সার্জন কার্যালয়ের এক বিবৃতিতে জানা গেছে, সংঘর্ষে আহত ১৪৪ জনের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে ৮৬ জন, বেসরকারি পার্কভিউ হাসপাতালে ৪৩ জন, ন্যাশনাল হাসপাতালে ২৪ জন চিকিৎসা নিয়েছেন। এর বাইরে চট্টগ্রাম মা ও শিশু জেনারেল হাসপাতালে ৬ জন শিক্ষার্থী ভর্তি আছেন বলে জানিয়েছেন হাসপাতালের পরিচালনা পর্ষদের সেক্রেটারি জেনারেল রেজাউল করিম আজাদ। চমেক হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে হাসপাতালে ১১ জন শিক্ষার্থী বিভিন্ন ওয়ার্ডে ভর্তি আছেন। এরমধ্যে নিউরো সার্জারি ওয়ার্ডে ৩ জন, অর্থোপেডিকস ওয়ার্ডে ৪ জন এবং ক্যাজুয়ালটি ওয়ার্ডে ভর্তি আছেন ৪ জন।

চমেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ তসলিম উদ্দীন দৈনিক আজাদীকে বলেন, চবির ঘটনায় অনেকেই জরুরি বিভাগে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন। বর্তমানে হাসপাতালে ওয়ার্ডে ভর্তি আছেন ১১ জন। তবে আইসিইউ’তে কেউ নেই।

চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন ডা. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আমাদের হিসেব মতেএখন পর্যন্ত ১৪৪ জন বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। এর মধ্যে ৩ জনের অবস্থা খুবই গুরুতর। দুই জনের মাথায় আঘাত, অন্যজনের ভাস্কুলার ইনজুরি রয়েছে। যিনি বর্তমানে আইসিইউতে রয়েছেন। তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হচ্ছে।

গতকাল বিকেলে চমেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনে কথা হয় চবির দর্শন বিভাগের ২০২০২০২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী আবিদুর রহমানের সাথে। তিনি চোখের কোনায় সামান্য আহত হয়েছেন। ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাদের এক নারী শিক্ষার্থীকে দারোয়ান হেনেস্থা করেছে। এ ঘটনায় আমরা নিয়মতান্ত্রিকভাবে প্রতিবাদ জানাচ্ছিলাম। আমরা কারো সাথে মারামারি করিনি। কিন্তু শত শত গ্রামবাসী দা, কিরিচসহ বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে কিভাবে আমাদের ওপর হামলা করেছে মিডিয়ার মাধ্যমে সবাই দেখেছেন। আজকে যারা গুরুতর আহত হয়েছেন,সেখানে আমিও থাকতে পারতাম।

অর্থনীতি বিভাগের ২০২৩২০২৪ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী তানজিলা নূর মিম বলেন, চবির ইতিহাসে এরকম ন্যাক্কারজনক ঘটনা আগে কখনো ঘটেনি। সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছেআমাদের ভাইদের গ্রামবাসীরা একাট্টা হয়ে কুপিয়ে আহত করেছে, এ সময় প্রশাসনের কোনো সহায়তা পাওয়া যায়নি।

উল্লেখ্য, এর আগে গত শনিবার মধ্যরাতে একই এলাকায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে স্থানীয় জোবরা গ্রামবাসীর মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী আহত হন। পুলিশ, চবির নিরাপত্তা বাহিনী এবং প্রক্টরের গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। এর জের ধরে গতকাল সকাল থেকে একই এলাকায় আবারও উত্তেজনা এবং একপর্যায়ে সংঘর্ষের শুরু হয়।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবাসা থেকে বর্জ্য নিতে ৭০ টাকার বেশি নয় : মেয়র
পরবর্তী নিবন্ধবর্ধিত ট্যারিফ আদায় না করার আহ্বান