রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ হাসান আরিফ বলেছেন, চট্টগ্রাম হচ্ছে দেশের উদ্যোক্তা তৈরি সূঁতিকাগার। কিন্তু সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর সমন্বয়হীনতার কারণে চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের উদ্যোক্তারা ওয়ান স্টপ সার্ভিসের উপযুক্ত সুবিধা পাচ্ছেন না। গতকাল বিকেলে নগরীর ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে হলে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, গার্মেন্টস সেক্টরসহ ৭টি সেক্টরে লাইসেন্স না থাকলেও ব্যাংক গ্যারান্টি দিয়ে কাঁচামাল আমদানি করে পরবর্তীতে রপ্তানি করার সুযোগ তৈরি করেছে সরকার। এর মাধ্যমে ক্ষুদ্র ও মাঝারি রপ্তানিকারকগণ উপকৃত হবেন। তিনি পণ্য বৈচিত্র্যকরণ এবং নতুন নতুন গন্তব্য সৃষ্টির জন্য ব্যবসায়ীদের আহবান জানিয়ে বলেন–সরকার রপ্তানিকারক পণ্যের বৈশ্বিক পরিচিতির জন্য আগামী ডিসেম্বর ‘গ্লোবাল সোর্সিং এক্সপো’ আয়োজন করবে। যার মাধ্যমে ব্যবসায়ীরা সরাসরি ক্রেতা এবং বিদেশী বিভিন্ন দেশের দর্শনার্থীদের সম্মুখে নিজেদের পণ্য প্রদর্শন করতে পারবে। তিনি চট্টগ্রামের ব্যবসায়ীদের উক্ত এক্সপোতে অংশগ্রহণ করার আহবান জানান।
সভাপতির বক্তব্যে চট্টগ্রাম চেম্বারের প্রশাসক মোহাম্মদ নূরুল্লাহ নূরী বলেন, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো ব্যবসায়ীদের পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে যাচ্ছে। প্রতিষ্ঠানটি সরকারি বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ব্যবসায়িক সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রেও কার্যকরী ভূমিকা রাখতে পারে। তাই পণ্য রপ্তানি বাড়াতে ব্যবসা সংক্রান্ত সকল লাইসেন্স অনুমোদন, প্রণোদনা আবেদন একক অনলাইন পোর্টালের মাধ্যমে সম্পন্ন, বন্দর, কাস্টমস ও ব্যাংকসহ এই তিন সংস্থার মধ্যে তথ্য বিনিময়ে ডিজিটাল ইন্টিগ্রেশন করলে রপ্তানিকারকদের সময় ও খরচ দুটোই কমবে। এছাড়া রপ্তানি ঝুড়িতে পণ্য বাড়াতে হলে তৈরি পোশাকের বাইরে ফার্মাসিউটিক্যালস, ফ্রোজেন ফুড, লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং, আইটি সার্ভিস ইত্যাদি খাতে বিশেষ প্রণোদনা দেওয়া প্রয়োজন। একই সাথে রপ্তানি নীতি, ২০২৪–২৭ অনুযায়ী রপ্তানি প্রবৃদ্ধি ধরে রাখা এবং এলডিসি উত্তরণ পরবর্তী চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি অগ্রাধিকারমূলক চুক্তি, স্পেশাল ইকোনমিক জোনে বিদেশি বিনিয়োগের জন্য রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোকে কার্যকরী ভূমিকা রাখার আহবান জানান।
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন চেম্বারের সাবেক সভাপতি আমীর হুমায়ুন মাহমুদ চৌধুরী, সাবেক পরিচালক আমজাদ হোসেন চৌধুরী, পার্ক শিপিং লাইনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. হুমায়ুন কবির পাটোয়ারী, চট্টগ্রাম বিজনেস ফোরামের এসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি কামরুল হুদা, উইম্যান চেম্বারের পরিচালক আমিনা শাহিন, র্যানকনের সিইও তানভীর শাহরিয়ার রিমন, বাংলাদেশ রাবার গার্ডেন ওনার্স এসোসিয়েশনের সভাপতি লায়ন মোহাম্মদ কামাল উদ্দিন, আইয়ুব এন্ড কোম্পানী লিমিটেডের মোহাম্মদ আইয়ুব। এ সময় অন্যদের মধ্যে সাবেক পরিচালক কামাল মোস্তফা চৌধুরী ও আমান উল্লা আল ছগির, ইপিবি’র চট্টগ্রামের পরিচালক শারমিন আক্তার, মীর গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আব্দুস সালাম, জার ট্রেডের জাহিদুল হাসান, রিহ্যাব চট্টগ্রাম অঞ্চলের কো–চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মোরশেদুল হাসান, ট্রাস্টেড শিপিং লাইন্স লিমিটেডের নির্বাহী পরিচালক ওয়াহিদ আলম, চট্টগ্রাম বিভাগীয় রাবার শিল্প মালিক এসোসিয়েশনের সভাপতি আব্দুর রশিদ ভুলু, প্রিয়াঙ্গন ফেব্রিঙের মোস্তাক আহমদ চৌধুরী, সেন্ট্রাল শপিং কমপ্লেঙের এস এম সাখাওয়াত উল্লাহ ও ব্যবসায়ী প্রতিনিধি নজরুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে বিনিয়োগকারীদের এবং রপ্তানিকারকদের রপ্তানি সনদ নেয়া সহজীকরণ এবং বন্দরসহ বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানের ফি কিংবা মাশুল বাড়ানোর ক্ষেত্রে মতামত ও পরামর্শ নেয়ার আহ্বান জানান ব্যবসায়ীরা।












