একবারের বেশি ব্যবহার করা যায় না অর্থাৎ সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিক–সামগ্রীর বিকল্প পণ্য ও জিনিসপত্র ব্যবহারের নির্দেশ দিয়েছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। প্লাস্টিকের কোন সামগ্রীর বিকল্প হিসেবে কী ধরনের পণ্য বা জিনিস ব্যবহার করতে হবে, তাও নির্দেশনায় বলা হয়েছে। পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানের নির্দেশনার পরিপ্রেক্ষিতে এই পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে বলে মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে তুলে ধরা হয়েছে।
পরিবেশ দূষণ রোধে সরকার অনেক আগে পলিথিন ব্যবহার করলেও বাস্তবে তা কার্যকর হয়নি। এ ছাড়া সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিকের ব্যবহার বন্ধে দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন পক্ষ দাবি জানিয়ে এলেও এ বিষয়ে কার্যকর কোনো উদ্যোগও চোখে পড়েনি। খবর বিডিনিউজের।
অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা প্লাস্টিকের ব্যবহার সীমিত করতে উদ্যোগ নিয়েছেন এবং সেই কাজ তিনি সরকারি অফিস থেকে শুরু করছেন। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের নির্দেশনায় প্লাস্টিকের ফাইল ও ফোল্ডারের পরিবর্তে কাগজ বা পরিবেশবান্ধব অন্য সামগ্রীর তৈরি ফাইল ও ফোল্ডার ব্যবহার করার অনুরোধ করা হয়েছে।
প্লাস্টিক ব্যাগের পরিবর্তে কটন বা জুট ফেব্রিকের ব্যাগ ব্যবহার করতে নির্দেশনা দিয়ে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, প্লাস্টিকের পানির বোতলের পরিবর্তে কাঁচের বোতল ও কাঁচের গ্লাস ব্যবহার করতে হবে।
প্লাস্টিকের ব্যানারের পরিবর্তে কটন ফেব্রিক, জুট ফেরিক বা বায়োডিগ্রেডেবল উপাদানে তৈরি ব্যানার ব্যবহারের অনুরোধ করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। দাওয়াতপত্র, ভিজিটিং কার্ড ও বিভিন্ন ধরণের প্রচারপত্রে প্লাস্টিকের লেমিনেটেড পরিহার করতেও বলা হয়েছে।
বিভিন্ন সভা–সেমিনারে সররাহকৃত খাবারের প্যাকেট যেন কাগজের হয়, পরিবেশ বান্ধব হয় সেটি নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে নির্দেশনায়।
এতে আরও বলা হয়েছে, একবার ব্যবহার্য প্লাস্টিকের প্লেট, গ্লাস, কাপ, স্টু, কাটলারিসহ সব ধরণের পণ্য পরিহার করতে অনুরোধ করা হচ্ছে। প্লাস্টিকের কলমের পরিবর্তে পেনসিল–কাগজের কলম ব্যবহার করতে বলা হয়েছে।
বার্ষিক প্রতিবেদনসহ সব ধরনের প্রকাশনায় লেমিনেটেড মোড়ক ও প্লাস্টিকের ব্যবহার পরিহার করা এবং ফুলের তোড়াতে প্লাস্টিকের ব্যবহার বন্ধ করতে অনুরোধ করা হয়েছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের বিজ্ঞপ্তিতে। এসব নির্দেশনা বাস্তবায়নে যথাযথ কার্যক্রম গ্রহণের লক্ষ্যে সব মন্ত্রণালয়, বিভাগ এবং আওতাধীন দপ্তর ও সংস্থাকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে জ্যেষ্ঠ সচিব, সচিব, বিভাগীয় কমিশনার এবং জেলা প্রশাসকদের প্রতি অনুরোধ করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। অপরদিকে প্লাস্টিক দূষণের বিরুদ্ধে সচেতনতা তৈরি ও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের অংশ হিসেবে বাংলাদেশ সচিবালয়কে সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিক মুক্ত ঘোষণার উদ্যোগ বাস্তবায়নের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে ১৫ অগাস্ট জারি করা এক চিঠির মাধ্যমে সব মন্ত্রণালয়–বিভাগের সচিবদের অনুরোধ করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।
গত ২৮ অগাস্ট পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় জারি করা এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে ১৭ ধরনের বস্তু–সামগ্রী, পদার্থকে সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিক হিসেবে নির্ধারণ করা হয়েছে। ২৯ অগাস্ট জারি করা এক অফিস আদেশে পরিবেশ মন্ত্রণালয় ও এর অধীন দপ্তর–সংস্থাগুলোতে ব্যক্তিগত ও দাপ্তরিক পর্যায়ে সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিকের ব্যবহার বন্ধ ঘোষণা করে কর্মকর্তা–কর্মচারীদের কার্যক্রম গ্রহণের অনুরোধ রাখা হয়েছে।