সময় থাকতেই মানে মানে কেটে পড়ুন

কুমিল্লায় ফখরুল, বিভাগের নাম ‘কুমিল্লা’ই করা হবে

| রবিবার , ২৭ নভেম্বর, ২০২২ at ৭:৫৬ পূর্বাহ্ণ

কুমিল্লাকে নিয়ে গঠন হতে যাওয়া বিভাগের নাম সরকার ‘মেঘনা’ করার উদ্যোগ নিলেও ক্ষমতায় গেলে ‘কুমিল্লা’ নামেই তা প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দিয়েছেন বিএনপি নেতারা। গতকাল বিকালে কুমিল্লা টাউন হল মাঠে বিভাগীয় সমাবেশে তারা এ ঘোষণা দেন। একই সঙ্গে বিভিন্ন দাবিতে ধারাবাহিক বিভাগীয় সমাবেশ কর্মসূচির অংশ হিসেবে কুমিল্লায় আয়োজিত এ জনসভায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম এখনই সরকারের পদত্যাগ দাবি করেন। তিনি বলেন, এখন বাংলাদেশ আপনাদের বিদায় দেখতে চায়। দয়া করে সময় থাকতেই মানে মানে কেটে পড়ুন। তা না হলে এদেশের মানুষ আপনাদেরকে বিদায় করবে। খবর বিডিনিউজের।

নতুন বিভাগ গঠন প্রসঙ্গে সরকার ‘মেঘনা’ নামের কথা বলে আসলেও তা বোঝাতে বিএনপি নেতারা সমাবেশে দেওয়া বক্তব্যে ‘গোমতী’ নাম উচ্চারণ করেন। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল সমাবেশে প্রশ্ন রেখে বলেন, কী গোমতী হবে, না কুমিল্লা হবে? কুমিল্লা। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, আমি বলতে চাই, এই কুমিল্লা ঐতিহাসিক কুমিল্লা। এই কুমিল্লা নিয়ে আমরা গর্বিত। আজকের সরকারপ্রধান কুমিল্লার জনগণকে দেখতে পারেন না। কুমিল্লাকে সেই সরকার আপনারা দেখেছেন নানাভাবে অপবাদ দেয়। আমরা এই সমাবেশ থেকে বলতে চাই, চাঁদপুর, ব্রাক্ষণবাড়িয়া, কুমিল্লা উত্তর, কুমিল্লা দক্ষিণ এবং কুমিল্লা মহানগরের জনগণ ‘কুমিল্লা’র নামে দেখতে চায়।

আগের রাত থেকেই কানায় কানায় পূর্ণ টাউন হল ময়দানে বিএনপির বিভাগীয় এ সমাবেশ গতকাল সকাল ১১টা শুরু হয়ে শেষ হয় বিকাল ৫টায়। সমাবেশের মঞ্চে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের জন্য তাদের ছবি রেখে আসন সংরক্ষিত রাখা হয়। জ্বালানি তেল ও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধি, দলীয় কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া নেতাকর্মীদের ‘হত্যার প্রতিবাদে’ এবং খালেদা জিয়ার মুক্তি ও নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে বিভাগীয় সমাবেশের এ কর্মসূচি চালিয়ে আসছে বিএনপি। সমাবেশে ‘গুম হওয়া’ সাবেক সংসদ সদস্য সাইফুল ইসলাম হিরু ও হুমায়ুন কবির পারভেজের ছেলেরা এবং ব্রাক্ষণবাড়িয়ায় ‘পুলিশের গুলিতে’ নিহত ছাত্রদল নেতা নয়ন মিয়ার বাবা রহমত উল্লাহ বক্তব্য রাখেন। আর নৌকায় জনগণ উঠবে না : মির্জা ফখরুল বলেন, উনি (শেখ হাসিনা) আবার নির্বাচন করবেন। পরশু দিন উনি সরকারি সমস্ত সুযোগ-সুবিধা নিয়ে, রাষ্ট্রের সমস্ত যন্ত্র ব্যবহার করে, হাজার হাজার বাস-ট্রাক নিয়ে যশোরে সভা করেছেন। এমনকি স্টেডিয়ামের গ্যালারি পর্যন্ত ভেঙে দিয়ে তারা সভা করেছেন। এই সভায় তিনি ঘোষণা দিয়েছেন যে, আওয়ামী লীগ আসলে জনগণ শান্তি পায়। শান্তিতে আছেন আপনারা, শান্তিতে নাই আপনারা। আবার বলেছেন, আবার নৌকায় ভোট দেন। শিল্পী আব্বাস উদ্দিনের একটা গান ছিল, ‘আগে জানলে তোর ভাঙা নৌকায় উঠতাম (চড়তাম) না’। বাংলাদেশের সব মানুষ এখন এই গান গাইতে শুরু করেছে, ‘আগে জানলে তোর ভাঙা নৌকায় উঠতাম (চড়তাম) না’। ভুলে যান ওই নৌকার কথা ভুলে যান।

নির্বাচন নিরপেক্ষ হলে ‘আওয়ামী লীগের কি জামানত থাকবে?’ প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, সেজন্য ওরা ফন্দি-ফিকির বের করেছে। কী ফন্দি-ফিকির? বলছে যে, আগের মতো ভোট হবে। অর্থাৎ ওরা থাকবে ক্ষমতায়, শেখ হাসিনা থাকবেন প্রধানমন্ত্রী, এমপিরা থাকবে এমপি, মন্ত্রীরা থাকবে মন্ত্রী। আর আমরা ভোট দেব। আবার কিসে ভোট হবে? ইভিএমে। যেমন খুশি তেমন চুরি করবে। এটার জন্য তারা আবার গায়েবি মামলা দেওয়া শুরু করেছে। ‘মিথ্যা মামলা’ দিয়ে সরকার বিএনপি নেতাদের বিচার কাজ দ্রুত করছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
তার ভাষায়, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে যেভাবে মিথ্যা মামলা দিয়ে সাজা দিয়ে আটক করে রেখেছে চার বছর ধরে, আমাদের তারেক রহমানকে যেভাবে নির্বাসিত করেছে; ঠিক একই কায়দা আমরা যারা এখন লড়াই করছি, সংগ্রাম করছি, তাদেরও আজকে কারাগারে নিক্ষেপ করে সহজেই নির্বাচনী বৈতরণী পার হতে চায়।

তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া কোনো নির্বাচন হবে না, আবারও দাবি করে তিনি দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলতে সকলকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান।

ঢাকায় ১০ তারিখে সমাবেশ হবেই : মির্জা ফখরুল বলেন, ঢাকা শহরেও গায়েবি মামলা আবার দেওয়া শুরু করেছে। ঢাকায় ১০ ডিসেম্বর সমাবেশ করবে-ওইটা যেন না হতে পারে, তার জন্য আগে থেকে মামলা দেওয়া শুরু করেছে ওরা। ঘরে ঘরে অভিযান চালাচ্ছে। তাতে কি ঢাকার সমাবেশ বন্ধ করা যাবে? কুমিল্লারটা বন্ধ করতে পারেনি। রাজশাহী ও ঢাকাতেও বন্ধ করা যাবে না।
অর্থনীতিকে ফোকলা করে দিয়েছে : সরকারি কোষাগার খালি হয়ে পড়েছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের চুরির কথা বলতে গেলে দিন-রাত পার হয়ে যাবে। এত বলতে চাই না, এখন সময় কম। শুধু এইটুকু বলি যে, ফোকলা করে দিয়েছে। ট্রেজারিতে আর কিচ্ছু নাই।

পূর্ববর্তী নিবন্ধকক্সবাজার জেলা জজ আদালত বর্জনের সিদ্ধান্ত আইনজীবীদের
পরবর্তী নিবন্ধকাপ্তাই হ্রদে কচুরিপানা অপসারণ শুরু