মহানগর আওয়ামী লীগের ১৪ নম্বর লালখান বাজার ওয়ার্ডে ৭ মাস আগে (গত বছরের ১৬ নভেম্বর) অনুষ্ঠিত হয়েছিল কর্মী সমাবেশ। ৭ মাস পর গত ৮ জুলাই ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক দিদারুল আলম মাসুম তার ফেসবুক পেইজে লালখান বাজার ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের ৬৯ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটি প্রকাশ করার পর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের বড় এবং অংশসহ নগর আওয়ামী লীগের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের মধ্যে এই নিয়ে বিরূুপ প্রতিক্রিয়া শুরু হয়।
ঘোষিত কমিটিতে সভাপতি করা হয়েছে আলহাজ ছিদ্দিক আহমেদ এবং সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে দিদারুল আলম মাসুমকে।
এই নিয়ে এ ওয়ার্ডের দায়িত্বপ্রাপ্ত সমন্বয় কমিটির আহ্বায়ক এবং নগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বদিউল আলম ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, এই ওয়ার্ডে তো সম্মেলনই হয়নি। সেখানে পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা তো অবান্তর। তিনি বলেন, গত বছরের ১৬ নভেম্বর লালখান বাজার ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সম্মেলনের তারিখ দিয়েছিল মহানগর আওয়ামী লীগ। কিন্তু ৪ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রীর চট্টগ্রাম আগমন এবং পলোগ্রাউন্ড মাঠে জনসভাকে সফল করার লক্ষ্যে ১৫ নভেম্বর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ভাই টেলিফোনে প্রেসিডিয়াম সদস্য সাবেক মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ ভাইকে প্রধানমন্ত্রীর জনসভার আগে মহানগরীতে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সকল সম্মেলন স্থগিত রাখতে বলেছিলেন। পরদিন ১৬ নভেম্বর লেডিস ক্লাবে যেহেতু আগে থেকেই লালখান বাজার ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সম্মেলনের তারিখ ছিল–সেখানে নেতাকর্মীরা হাজির হলে মহানগর আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীনসহ আমরা উপস্থিত হই। যেহেতু আগের দিন কাদের ভাই ফোনে মোশাররফ ভাইকে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সম্মেলন স্থগিত রাখার নির্দেশ দিয়েছিলেন তাই সেদিন ওয়ার্ড সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়নি। উপস্থিত নেতাকর্মীদের উপস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রীর (৪ ডিসেম্বরের জনসভা) জনসভা সফল করার লক্ষ্যে কর্মী সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এই কর্মী সমাবেশে পরবর্তীতে এই ওয়ার্ডের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে বলে ঘোষণা দেয়া হয়। এখন সম্মেলন ছাড়া কিভাবে ওয়ার্ডের পূর্ণাঙ্গ কমিটি হল–তা আমি জানি না। এগুলো সংগঠন বিরোধী কার্যক্রম।
নিজের ফেসবুকে লালখান বাজার ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের ২০২২–২০২৫ পূর্ণাঙ্গ কমিটির যে তালিকা প্রকাশিত করা হয়েছে তা মহানগর আওয়ামী লীগের অনুমোদিত কিনা জানতে চাইলে দিদারুল আলম মাসুম বলেন, গত ১৫–১৬ দিন আগে মহানগর আওয়ামী লীগ লালখান বাজার ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি অনুমোদন দিয়েছেন। ২০২২ সালের ১৬ নভেম্বর লেডিস ক্লাবে সম্মেলনের তারিখ ছিল। কিন্তু রাজনৈতিক কৌশলের কারণে সেদিন সম্মেলন না করে কর্মী সমাবেশ করেছিল। সেই কর্মী সমাবেশে সভাপতি হিসেবে আলহাজ ছিদ্দিক আহমেদ এবং সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দিদারুল আলম মাসুম পুনরায় দায়িত্ব পালন করবেন বলে ঘোষণা দিয়েছিলেন। সেদিন যেহেতু আমাদেরকে আবারো সভাপতি–সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে সুতরাং আমরা এখন পূর্ণাঙ্গ কমিটি করে মহানগর আওয়ামী লীগের কাছে জমা দিয়েছি। মহানগর আওয়ামী লীগ থেকে এই কমিটি অনুমোদন দিয়েছে।
এদিকে আলহাজ ছিদ্দিক আহমেদ বলেন, ২০২২ সালের ১৬ নভেম্বর কর্মী সমাবেশে সভাপতি–সাধারণ সম্পাদক ঘোষণা করেছিলেন। পূর্ণাঙ্গ কমিটি আমাদেরকে করতে বলেছিলেন। গত মাসে আমরা পূর্ণাঙ্গ কমিটি করেছি। ৬৯ সদস্যের কমিটি মহানগর থেকে অনুমোদন হয়ে গেছে।
এদিকে লালখান বাজার ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সম্মেলনে সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী ছিলেন ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সদস্য তৌহিদ আজিজ। তিনি আজাদীকে বলেন, যে কমিটি ফেসবুকে প্রকাশ করা হয়েছে তাতে মহানগর আওয়ামী লীগের কোন অনুমোদন নেই। তাছাড়া খুলশী থানার সমন্বয় কমিটির আহ্বায়ক বদি ভাই (থানা এবং ওয়ার্ডের দায়িত্বপ্রাপ্ত সমন্বয় কমিটির আহবায়ক এবং নগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক) সম্মেলন করলে–কমিটি হলে তিনি জানবেন। যেখানে সম্মেলনই হয়নি–সেখানে কিভাবে কমিটি হয়ে গেল–আমরা দলের ত্যাগী নেতাকর্মীরা অবাক হয়েছি। ২০২২ সালের ১৬ নভেম্বর সম্মেলনের তারিখ থাকলেও সেদিন কেন্দ্রের স্থগিতাদেশের কারণে সম্মেলন হয়নি। তাহলে ৭ মাস পর কিভাবে পূর্ণাঙ্গ কমিটি হলো? এই নিয়ে লালখান বাজার ওয়ার্ডের নেতাকর্মীদের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া শুরু হয়েছে।












