চকবাজার ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সম্মেলন হলেও কমিটি ঘোষণা না করে সভা স্থগিত করে চলে যান মহানগর আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ। সভায় উপস্থিত কাউন্সিলররা সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে ভোটাভুটি চাইলেও মহান আওয়ামী লীগ নেতৃত্বে ভোটাভুটি না করে কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের সাথে কথা বলে পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত জানাবেন বলে সভা স্থগিত করে চলে যান। এই নিয়ে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক প্রার্থীসহ কাউন্সিলরদের অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। গতকাল বিকাল ৪টায় চকবাজারস্থ একটি কমিউনিটি সেন্টারে মহানগর আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দসহ চকবাজার ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের প্রায় ১২৩ জন কাউন্সিলরের উপস্থিতিতে কাউন্সিল অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়।
চকবাজার ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সম্মেলনে সভাপতি পদে ৪ জন এবং সাধারণ সম্পাদক পদে ৫জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ছিলেন।
সভাপতি পদে ছিলেন সদ্য বিদায়ী কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আমিনুল হক রমজু, সদ্য বিদায়ী কমিটির সাধারণ সম্পাদক মোজাহেরুল ইসলাম চৌধুরী, সদ্য বিদায়ী কমিটির অর্থ সম্পাদক আলহাজ্ব মুজিবুর রহমান বাবুল, সদ্য বিদায়ী কমিটির সহ সভাপতি খালেদ জামাল।
সাধারণ সম্পাদক পদে ছিলেন সদ্য বিদায়ী কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট নোমান চৌধুরী, হাজী সেলিমুর রহমান, একে এম আনিসুজ্জামান, অ্যাডভোকেট দেলোয়ার হাসান নয়ন ও অ্যাডভোকেট শাহেদুল আজম শাকিল। এদের মধ্যে সভায় সাধারন সম্পাদক প্রার্থী অ্যাডভোকেট নোমান চৌধুরীর সমর্থনে অপর তিন প্রার্থী হাজী সেলিমুর রহমান, একে এম আনিসুজ্জামান, অ্যাডভোকেট দেলোয়ার হাসান নয়ন তাদের প্রার্থিতা তুলে নেন।
কাউন্সিল অধিবেশন স্থগিত করা বিধি সম্মত নয় উল্লেখ করে নগর আওয়ামীলীগের সহ সভাপতি ও চসিকের সাবেক প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজন আজাদীকে জানান, সম্মেলনের প্রথম অধিবেশনের পর দ্বিতীয় অধিবেশন (কাউন্সিলর অধিবেশন) কাউন্সিলরদের মতামতের ভিত্তিতে ভোটাভুটি অথবা হাততোলা ভোটে সম্পন্ন করতে হবে। কাউন্সিল অধিবেশন স্থগিত বিধিসম্মত নয়। চকবাজার ওয়ার্ডের সম্মেলনের প্রথম অধিবেশনে আমিও ছিলাম। দ্বিতীয় অধিবেশনে আমি ছিলাম না। নিয়ম হচ্ছে ওয়ার্ড সম্মেলনের কাউন্সিল অধিবেশনে সভাপতিত্ব করবেন থানা কমিটির সভাপতি। কিন্তু চকবাজার ওয়ার্ডে সভাপতিত্ব করেছেন মহানগর আওয়ামীলীগের সভাপতি। কাউন্সিলররা যদি সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক নির্বাচনের ক্ষেত্রে ভোটাভুটি চান তাহলে কাউন্সিলরদের মতামতকে সম্মান করতে হবে তো। কাউন্সিলরদের মতামতের ভিত্তিতে কমিটি না হলে-পুরনো কমিটি বহাল থাকলে সম্মেলন করার দরকার কি?
এই ব্যাপারে মহানগর আওয়ামীলীগের কার্যনির্বাহী সদস্য সাইফুদ্দিন খালেদ বাহার আজাদীকে জানান, প্রথম অধিবেশনের পর দ্বিতীয় অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়েছে। কাউন্সিলর অধিবেশনে একাধিক প্রার্থী থাকায় কেউ কাউকে ছাড় দিচ্ছিল না। এজন্য আমাদের মহানগর আওয়ামীলীগ নেতৃবৃন্দ প্রার্থী এবং কাউন্সিলরদের ৪৮ ঘন্টার সময়সীমা দিয়েছেন- কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের সাথে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত জানাবেন বলে। কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের একটি দিকনির্দেশনা আছে। মহানগর আওয়ামীলীগের সর্ব সম্মত সিদ্ধান্ত ছিল-যে ওয়ার্ডে যারাই আছেন-তারাই থাকবেন। ৪১ নম্বর ওয়ার্ডের সম্মেলনেও আগের কমিটি বহাল আছে। এখানে চকবাজার ওয়ার্ডে সেটা তারা মানেননি।
সভাপতি প্রার্থী আলহাজ্ব মুজিবুর রহমান বাবুল জানান, কাউন্সিলর অধিবেশনে মহানগর আওয়ামীলীগ নেতৃবৃন্দ আমরা যারা সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী তাদেরকে ৫ মিনিট করে সময় দিয়েছেন সমঝোতার জন্য। সমঝোতা হয়নি। তবে সাধারণ সম্পাদক পদে ৫ জনের মধ্যে এড. নোমান চৌধুরীকে আরো ৩জন সমর্থন জানিয়েছেন। আমরা মহানগরকে বলেছি, আপনারা বসে একটি সিদ্ধান্ত দেন। মহানগরের সিদ্ধান্ত না মানলে তাহলে কাউন্সিলরদের নিয়ে ভোটাভুটি দেন। মহানগরের নেতৃবৃন্দ আমাদেরকে কেন্দ্রের সাথে কথা বলে সিদ্ধান্ত জানাবেন বলে জানিয়েছেন। আমরা চাই চকবাজার ওয়ার্ডে একটি স্বচ্ছতা আসুক।
এদিকে সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী অ্যাডভোকেট নোমান চৌধুরী জানান, মহানগর আওয়ামীলীগের নেতৃবৃন্দ কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদকের সাথে কথা বলে সিদ্ধান্ত দিবেন বলেছেন। শুক্রবারের মধ্যে আমাদেরকে কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত জানাবেন বলেছেন।