সম্পৃক্ততা পেলে আমাকেও ফায়ার করুন : পিএসসি চেয়ারম্যান

| বুধবার , ১০ জুলাই, ২০২৪ at ৬:০২ পূর্বাহ্ণ

চাকরিতে নিয়োগ দেওয়ার ক্ষেত্রে অসৎ কাজের প্রমাণ পেলে খোদ নিজের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বললেন সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) চেয়ারম্যান সোহরাব হোসাইন। তিনি বলেছেন, কোন অসৎ কাজে যদি আমারও সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়, আমাকেও ফায়ার করুন। এটা নিশ্চিত করা হোক। বিভিন্ন নিয়োগ পরীক্ষায় প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগে পিএসসির সাবেক ও বর্তমান সাত কর্মীসহ ১৭ জনকে গ্রেপ্তারের পর গতকাল নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান। খবর বিডিনিউজের।

সোহরাব হোসাইন বলেন, এই প্রতিষ্ঠানের দিকে লাখ লাখ তরুণ তাকিয়ে আছে। আপনারা নিশ্চয়ই জানেন, এই প্রতিষ্ঠানে কোনো তদবির পর্যন্ত হয় না। সেই প্রতিষ্ঠানটি যাতে তার দায়িত্ব পালন করতে পারে, সেজন্য সবার সমর্থন আমরা চাই। অযথা যেন এই প্রতিষ্ঠানের মর্যাদা নষ্ট না হয়। অনেকে প্রশ্ন নিয়ে প্রতারণার শিকার হন। অনেকে বোর্ডের প্রশ্নে মত অনুরূপ একটি প্রশ্ন করে একটি প্রতারক চক্র সেগুলো বিক্রি করে টাকা কামাচ্ছে। সেটাও বিবেচনা করে দেখতে হবে।

বিসিএসের প্রশ্নপত্র তৈরি করে তা লটারির মাধ্যমে নির্বাচন করা হয় জানিয়ে সোহরাব হোসাইন বলেছেন, লটারির আগে কারও পক্ষে জানা সম্ভব নয় কোন প্রশ্ন আসবে। তিনি বলেন, লটারির আগে তো আল্লাহ ছাড়া কেউ বলতে পারবেন না। তবে প্রশ্নফাঁস যে হয়নি বা হতে পারে না তা ১০০ ভাগ নিশ্চিত করে কেউ বলতে পারবে না। কারণ এটা এককভাবে কেই মেইনটেইন করে না। এই প্রক্রিয়ার সঙ্গে অনেকে সমন্বয় করেন।

বিসিএসের প্রশ্ন ফাঁস করা ‘ভীষণ কঠিন’ জানিয়ে তিনি বলেন, কারণ প্রশ্নফাঁস করতে হলে ছয় সেট ফাঁস করতে হবে, ছয় সেট মানে হল ছয় দুগুণে ১২শ প্রশ্ন। লটারির আগে তো কেউ বলতে পারবে না কোন প্রশ্নে পরীক্ষা হবে।

বিসিএসের প্রশ্ন প্রণয়ন নিয়ে পিএসসির চেয়ারম্যান বলেন, যারা বিভিন্ন বিষয়ে দক্ষ, নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্ন তৈরি করেন, তার পরিচয় সম্পূর্ণ গোপন থাকে। অনেক সময় তারা প্রশ্ন তৈরি করে সরাসরি, অনেক সময় ডাকেও পাঠান। সেটা ট্রাঙ্কে সিলগালা করা থাকে। ১০ জনের কাছ থেকে প্রশ্ন পাওয়ার পর একদিন আমরা প্রশ্নপত্র মডারেশনের জন্য তারিখ নির্ধারণ করি। গোপন রুমে সিলগালা করা সেই প্রশ্ন খোলা হয়। সেখানে উনারা উনাদের মত মডারেশন করে আবার সিলগালা করে জমা দেন। সেখান থেকে প্রশ্ন প্রেসে যায়। প্রেস থেকে আসার পর আমাদের বিসিএসের ২০টা প্যাকেট বিভিন্ন বিভাগে যায়। ঢাকারগুলো এখানে পুলিশ পাহারায় সংরক্ষিত থাকে।

পরীক্ষার দিন দুইজন ‘বিশিষ্ট নাগরিকের’ উপস্থিতিতে লটারি হয় বলে জানান তিনি। বলেন, সকাল ১০টায় পরীক্ষা হলে ৯টা ২০ মিনিট থেকে ৯টা ২৫ মিনিটে লটারি করে ৯টা ৩০ মিনিটে আমরা কেন্দ্রে পাঠাই। বিসিএসের ক্ষেত্রে ছয় সেট থেকে একটি সেট লটারির মাধ্যমে বেছে নেওয়া হয়। আর ননক্যাডার বা দশম গ্রেড ও তার পরের গ্রেডগুলোর জন্য চারটি সেট থাকে, সেখান থেকে লটারিতে একটি নেওয়া হয়। এ প্রক্রিয়ায় প্রশ্ন ফাঁস করাটা কঠিন।

প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগে আগে চাকরি হারিয়ে পরে অনেকে আবার চাকরিতে ফিরে এসেছেন জানিয়ে পিএসসি চেয়ারম্যান বলেন, তারা কোর্টে গিয়ে সেখান থেকে ছাড়া পেয়ে এসেছেন। আমরা প্রস্তুত; যেই মুহূর্তে কোনো সরকারি কর্মচারীকে গ্রেপ্তার করা হবে, সেই মুহূর্তে তাকে সাসপেন্ড করা হবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসারা দেশে আজ সকাল-সন্ধ্যা অবরোধের ঘোষণা
পরবর্তী নিবন্ধআদালতে স্বীকারোক্তি দিলেন ছয় জন