সম্পর্কের উন্নতি চায় পাকিস্তান, ক্ষমা চাওয়ার শর্ত ঢাকার

| সোমবার , ৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ at ৫:২৮ পূর্বাহ্ণ

একাত্তরে গণহত্যার জন্য পাকিস্তানকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন। শ্রীলঙ্কায় সম্প্রতি দ্বিপক্ষীয় এক বৈঠকে তার এ আহ্বান নিজেদের কিছু ‘সীমাবদ্ধতার কথা’ তুলে ধরে এড়িয়ে গেছেন পাকিস্তানের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী হিনা রাব্বানি খার।

শ্রীলঙ্কা সফর শেষে ফিরে গতকাল রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় সাংবাদিকদের প্রশ্নে তাদের আলোচনার বিষয়বস্তু তুলে ধরে মন্ত্রী বলেন, উনি আমাদের সাথে সম্পর্ক বাড়াতে চান। আমি বলেছি, ‘সম্পর্ক বাড়ানোর একটি বড় মহৌষধ, আপনারা যে নৃশংসতা করেছিলেন ১৯৭১ সালে, এটার জন্য আপনারা পাবলিকলি ক্ষমা চান। এটা যদি হয় আমি আপনাদের হয়ে ওকালতি করব, সম্পর্ক বাড়ানোর বিষয়ে। খবর বিডিনিউজের।

শ্রীলঙ্কার ৭৫তম স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গিয়ে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেন মোমেন ও হিনা রাব্বানি খার। সেখানে ক্ষমা চাওয়ার বক্তব্যের জবাবে হিনা রাব্বানির কী প্রতিক্রিয়া ছিল, সে বিষয়ে এক প্রশ্নে মোমেন বলেন, কিছুটা অ্যাভয়েড করেছেন, আমি বলতে পারি। সরাসরি কোনো উত্তর দেন নাই। উনি বললেন যে, ওনাদের কিছু সীমাবদ্ধতা আছে। আমি বলি যে, আমাদের এখানেও কিছু সীমাবদ্ধতা আছে।

একাত্তরে গণহত্যার জন্য ক্ষমা চাওয়ার বিষয়ে বক্তব্যের পাশাপাশি বাণিজ্য বাড়ানো নিয়ে এ খাতের বাধা বিশেষ করে অ্যান্টি ডাম্পিং তুলে নিতে পাকিস্তানি মন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা হওয়ার কথা তুলে ধরেন মোমেন। তিনি বলেন, পাকিস্তানের সঙ্গে বাংলাদেশের ব্যবসাটা ‘এক পক্ষীয় হয়ে গেছে’। বাংলাদেশ পাকিস্তানে রপ্তানি করে ১০ কোটি ডলারের নিচে। বিপরীতে পাকিস্তান থেকে আমদানি করে ৮০৯০ কোটি ডলার। আমি বললাম যে, এটা তো ঠিক না। আপনারা আমাদের কিছু জিনিস নেন। কারণ, তারা অনেকগুলো বাধ্যবাধকতা দিয়ে রেখেছে, তারা অ্যান্টি ডাম্পিং দিয়ে রাখছে। আমি বললাম, এগুলো উইড্রো করেন। আপনি সম্পর্ক বাড়াতে চান, প্রথম অর্থনৈতিক খাতে করতে হবে। সম্পর্ক বাড়ানোর বিষয়ে হিনা রাব্বানির বক্তব্য ‘খুবই ইতিবাচক’ ছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, তারা চাচ্ছে, আমাদের সঙ্গে সুসম্পর্ক করতে। শুধু আমাদের সঙ্গে নয়, ভারতবর্ষের সঙ্গে সম্পর্ক ভালো করতে চান তারা।

মোমেন বলেন, উনি বলেছেন, প্রথম ধাপে আমরা অর্থনৈতিক সম্পর্কটা বাড়াই। তারপর সামনে এগোতে পারি। আমি বলি, আপনারাই তো ব্যবসা করছেন, আমাদের উপর অনেক অ্যান্টি ডাম্পিং দিয়ে রাখছেন। উনি বললেন, দিস ইজ এ গুড পয়েন্ট, আমরা এগোতে পারি। তারা ফরেন অফিস কনসালটেন্ট (এফওসি) চাচ্ছে। অনেক দিন ধরে এটা হয় নাই। তারা সম্পর্কটা বাড়াতে চায়। আমি বলেছি, আপনি প্রথম পাবলিক অ্যাপলজি চাইতে হবে। নতুবা আমার রাজনৈতিক কারণ আছে যে, ওইটা হলে পরে আমি এটার জন্য যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করতে পারব। তাছাড়া, আমার জন্য খুব কষ্ট হবে। আমি পারব না। এটা পিওর অ্যান্ড সিম্পল।

সার্ক শীর্ষ সম্মেলন আয়োজনের বিষয়ে নেপালের দিক থেকে আলোচনা তোলার কথা তুলে ধরে মোমেন বলেন, নেপাল বলল, গত আট বছর ধরে সার্কের সম্মেলন হচ্ছে না। এটা তারা চায়। আমি বলেছি, আপনারা এটা তোলেন। এটা ভারতপাকিস্তানের সঙ্গে আলাপ করেন, তারপরে আমাদের বলেন। আমাদের কোনো আপত্তি নেই সার্কের সম্মেলন হতে। আপনাদেরকে নেতৃত্ব নিতে হবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধমহেশখালীতে পাহাড়ে মদের কারখানা
পরবর্তী নিবন্ধভরাট করা পুকুর আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনার নির্দেশ