ইউরোপের কোনো দেশ যদি রাশিয়ার সম্পদে হাত দিতে চায়, তাহলে মস্কোও পাল্টা ব্যবস্থা নেবে বলে সতর্ক করেছে ক্রেমলিন। খবর বিডিনিউজের।
ইউক্রেনকে সহায়তা করতে ইউরোপীয় ইউনিয়ন হাজার হাজার কোটি ডলারের জব্দ রুশ সম্পদ কাজে লাগানোর পথ খুঁজছে, এমন খবর প্রকাশিত হওয়ার পর সোমবার মস্কো এ হুঁশিয়ারি দিল। ২০২২ সালে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রেনে সেনা পাঠানোর পর যুক্তরাষ্ট্র ও তার পশ্চিমা মিত্ররা রাশিয়ার কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে লেনদেন নিষিদ্ধ করে এবং ৩০ থেকে ৩৫ হাজার কোটি ডলারের সার্বভৌম রুশ সম্পদ জব্দ করে।
এসব সম্পদের বেশিরভাগই হচ্ছে ইউরোপীয়, মার্কিন ও ব্রিটিশ সরকারি বন্ড, যা ইউরোপের সিকিউরিটিজ ডিপোজিটরিতে রাখা ছিল। জব্দ এসব সম্পদ থেকে আসা অর্থ ইউক্রেনের প্রতিরক্ষায় ব্যয় করতে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) যেন নতুন উপায় বের করে, ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ফন দার লিয়েন তাই চাইছেন বলে প্রতিবেদনে জানিয়েছিল বার্তা সংস্থা রয়টার্স। রাশিয়ার মালিকানাধীন বন্ড পরিপক্ব হয়ে যে নগদ অর্থ ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংকে জমা হচ্ছে, সেই টাকা দিয়ে ইউরোপীয় কমিশন এখন ইউক্রেনের জন্য ক্ষতিপূরণমূলক ঋণ তহবিল বানানোর কথা ভাবছে বলে জানিয়েছে পলিটিকো। যদি এমন কিছু ঘটে, তাহলে ইইউভুক্ত দেশগুলো, ব্রাসেলসের ইউরোপীয় দুস্কৃতিকারী এবং পৃথক ইইউ দেশ যারা আমাদের সম্পদ দখলে নেওয়ার চেষ্টা করবে, তাদের পিছু ধাওয়া করবে রাশিয়া, টেলিগ্রামে এমনটাই লিখেছেন রাশিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট দিমিত্রি মেদভেদেভ। ইউরোপীয় দেশগুলোকে সম্ভাব্য সব উপায়ে এবং সম্ভাব্য সব আন্তর্জাতিক ও দেশীয় আদালতে এবং আদালতের বাইরেও রাশিয়া ধাওয়া করবে, বলেছেন এখন রুশ নিরাপত্তা পরিষদের ডেপুটি চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করা মেদভেদেভ। মস্কো বলছে, তার সম্পদ নেওয়া বা ব্যবহারকে পশ্চিমাদের চুরি হিসেবে গণ্য করা হবে এবং এমন কিছু হলে তা যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের বন্ড ও মুদ্রার ওপর আস্থা নষ্ট করবে। অন্যদিকে ইউরোপীয় দেশগুলো বলছে, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইউরোপে এখন পর্যন্ত হওয়া সবচেয়ে প্রাণঘাতী স্থলযুদ্ধে ইউক্রেনের যে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তার জন্য রাশিয়া দায়ী, এবং মস্কোকে ক্ষতিপূরণ দিতে বাধ্য করতে হবে। অনেক বিশেষজ্ঞ এবং ব্যাংকারই বলছেন, সার্বভৌম সম্পদ ও তার আয় দখলে নিলে তা খারাপ নজির সৃষ্টি করবে এবং অন্য দেশগুলো এরপর পশ্চিমা সরকারি বন্ডে অর্থ বিনিয়োগে আস্থা হারাবে। ন্ডন সমপ্রতি বলেছে, তারা জব্দ রুশ সম্পদ থেকে আসা প্রায় ১৩০ কোটি ডলার ইউক্রেইনের জন্য অস্ত্র কেনায় ব্যয় করবে।
এর পাল্টায় চলতি মাসের শুরুর দিকে মেদভেদেভ বলেছিলেন, তেমন কিছু হলে রাশিয়া ইউক্রেইনের আরও ভূমি দখলে নেবে এবং বিশ্বজুড়ে ব্রিটিশ সম্পদের পিছু ধাওয়া করবে। উরোপের দেশগুলো রাশিয়ার সম্পদে হাত দিলে রুশ অর্থনীতিতে যে ২৮ হাজার ৫০০ কোটি ডলার সরাসরি বিনিয়োগ আছে তাও ঝুঁকির মুখে পড়বে, বলেছে রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা রিয়া।