সম্পত্তি নিয়েই এত কিছু

বাঁশখালী প্রতিনিধি | রবিবার , ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ at ৬:০২ পূর্বাহ্ণ

মো. হাসান ও ছেনোয়ারা বেগমের সংসারে মোস্তাফিজ (৩৬) ও সফিকুর (৩৫) নামে দুই ছেলে এবং রাজিয়া বেগম নামে এক মেয়ে রয়েছে। সামাজিকভাবে বড় ছেলে মোস্তাফিজকে বিয়ে করানো হয়। তবে স্ত্রী থাকে বাপের বাড়ি। মেয়ে রাজিয়াকে চাম্বলে ও সরলে দুইবার বিয়ে দেওয়া হয়। বর্তমানে তার সন্তানেরা মা ছেনোয়ারা বেগমের সাথে থাকে।

বাঁশখালী উপজেলার কাথরিয়া ইউনিয়নের বরইতলী গ্রামে আধাপাকা দোচালা একটি ঘর। সেই ঘরে কর্তা মো. হাসান স্ত্রী ছেনোয়ারার সঙ্গে ঝগড়া করে বাড়ি ছাড়েন। সেই যাত্রায় ২৭ বছর বাইরে ছিলেন। সেই সময় সিলেটের রামগড় সীমান্তে কাজ করতে গিয়ে ভারতীয় বাহিনীর হাতে আটক হয়ে জেলে ছিলেন। পরিবারের লোকজন তার খোঁজ না পেয়ে তার নামে ধর্মীয় সকল কার্যক্রম করে। ছাড়া পেয়ে এক বছর আগে সিলেট থেকে দেশে এলেও পরিবারের লোকজন তাকে মেনে নিতে পারেনি। ফলে তিনি বাধ্য হয়ে নানাজনের বাড়িতে এবং মসজিদে থাকতেন।

হাসান চট্টগ্রাম শহরে জাহাজের পাহারাদারের চাকরি নেন। যে টাকা পেতেন তা পরিবারের সদস্যদের দিতেন। স্থানীয়দের সহযোগিতায় এক মাস আগে কাথরিয়া ইউনিয়নের ইউপি সদস্য ছৈয়দ আহমদ তাকে বাড়িতে রাখার জন্য বনিবনা করে দেন। হাসান জায়গাজমি বিক্রি করে আবার আত্মগোপন করবেনএ শঙ্কায় পরিবারের সদস্যরা ভিটা ও জমি লিখে দিতে বলে। তা নিয়ে বিরোধের সূত্রপাত হয়।

জানা যায়, বর্তমানে ভিটাবাড়ি মিলে হাসানের প্রায় ৭ গণ্ডা জায়গা রয়েছে। গতকাল সকালে হাসানের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, বাড়ি তালাবদ্ধ। বাড়ির সামনে বসে আছে মেয়ে রাজিয়া বেগমের দুই ছেলে আরাফাত () ও জাবেদ (১২)

নিহত হাসানের বড় ভাই মাহাবু আলী বলেন, আমার ভাইয়ের সাথে বউয়ের মিল ছিল না। তাই নানা সময়ে ঝগড়া হতো। বউয়ের সাথে ঝগড়া করে বাড়ি ছেড়ে চলে গিয়ে রামগড় এলাকায় ভারতীয় পুলিশের হাতে আটক হয়। সে ২৭ বছর ধরে জেলে ও বাড়ির বাইরে ছিল। এক বছর আগে দেশে ফিরলেও পরিবারের সদস্যরা তাকে মেনে নিতে পারেনি। বাইরে বিয়ে করেছে এমন অভিযোগে বাড়িতে থাকতে না দেওয়ায় মানুষের বাড়ি এবং মসজিদে থাকত অনেক সময়। ভিটার জায়গাজমি স্ত্রী ও ছেলেমেয়েদের নামে লিখে দিতে চাপ দিয়েছিল।

চাচাত ভাই দেলাল আহমদ বলেন, হাসান ফিরে আসার পর স্ত্রী ও ছেলেমেয়েরা তাকে রোহিঙ্গা বলত এবং মেনে নিতে পারেনি। পরে নতুন করে তার নামে আইডি কার্ড করা হয়। আমি তার পক্ষ নিয়ে কথা বলায় হাসানের ছোট ছেলে সফিউর নানাভাবে আমাকেও হুমকি দিত।

কাথরিয়া ইউনিয়নের সদস্য ছৈয়দ আহমদ বলেন, জায়গাজমি নিয়ে স্ত্রী ও ছেলেমেয়েদের সাথে হাসানের বিরোধ ছিল। এক মাস পূর্বে আমি ঠিক করে দিয়েছিলাম। দীর্ঘদিন বাইরে থাকায় ছেলেমেয়েরা তাকে বিশ্বাস করত না।

এদিকে হাসানের লাশের খণ্ডিত অংশ কখন কাথরিয়ায় আনা হবে এ ব্যাপারে স্থানীয়রা জানেন না।

বাঁশখালী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. কামাল উদ্দিন বলেন, ঘটনাটি যেহেতু চট্টগ্রামে ঘটেছে সেহেতু পতেঙ্গা থানা পুলিশ প্রয়োজনীয় কার্যক্রম শেষে স্বজনদের কাছে লাশ হস্তান্তর করবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধজাতীয় নির্বাচনের আগে স্কুলের পুরাতন ভবন ভাঙা নয়
পরবর্তী নিবন্ধস্ত্রী-সন্তানদের হাতেই আট টুকরা হন তিনি