পুরনো কালুরঘাট সেতুর উপর দিয়ে কক্সবাজার রুটের আধুনিক উচ্চ গতির ট্রেন চলাচল উপযোগী করে তুলতে সমীক্ষা চালিয়ে দেখার জন্য শেষ পর্যন্ত বুয়েটের সাথে রেলওয়ের ৮ কোটি টাকায় সমঝোতা হয়েছে।
সমীক্ষা ফি নিয়ে রেল ভবনে বুয়েটের সাথে রেল কর্তৃপক্ষের বেশ কয়েকবার বৈঠকে এ বিষয়ে সমঝোতা হয়নি। সমীক্ষা চালিয়ে দেখার জন্য বুয়েট রেলওয়ের কাছে প্রথমে ১২ কোটি ৬৫ লাখ টাকা প্রস্তাব দিয়েছিল। শেষ পর্যন্ত দীর্ঘ দরকষাকষির পর বুয়েটের সাথে ৮ কোটি টাকা পরমর্শ ফি’য়ে রেল কর্তৃপক্ষের সমঝোতা হয়েছে। এই ব্যাপারে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের প্রধান প্রকৌশলী আবু জাফর মিয়া আজাদীকে জানান, বিদ্যমান কালুরঘাট (পুরনো সেতু) সেতু মেরামতের জন্য বুয়েটের সাথে সমঝোতা হয়ে গেছে। আগামী সপ্তাহে চুক্তি হবে। তারপর বুয়েটের প্রতিনিধিরা ফিল্ড ভিজিট করবেন। প্রায় ৮ কোটি টাকায় বুয়েটের সাথে সমঝোতা হয়েছে। ফিল্ড ভিজিটের পর তারা পুরোদমে সমীক্ষা কাজ শুরু করবেন। তারপর শতবছরের জরাজীর্ণ সেতুটি মেরামতের জন্য সমীক্ষা রিপোর্ট দেবেন। এর উপর ভিত্তি করেই পুরনো কালুরঘাট সেতুটি মেরামত করা হবে বলে জানান তিনি।
বুয়েটের পরামর্শ মোতাবেক সেতুটি মেরামত করার পর ২০২৩ সালের শেষে দিকে ঢাকা-চট্টগ্রাম হয়ে কক্সবাজার রুটের উচ্চ গতির ট্রেন চলানো হবে বলে জানা গেছে।
রেলওয়ের সেতু প্রকৌশলী দপ্তর থেকে জানা যায়, জরাজীর্ণ কালুরঘাট সেতু দিয়ে আগামী ৫-৬ বছর (নতুন সেতু না হওয়া পর্যন্ত) কক্সবাজার রুটের উচ্চ গতির ট্রেন চলানোর জন্য বুয়েট বিশেষজ্ঞ দলের দেয়া প্রস্তাবনা অনুযায়ী সংস্কার করতে চায় রেল কর্তৃপক্ষ। বর্তমান সেতু দিয়ে ঘণ্টায় ১০ কিলোমিটার গতিতে ট্রেন চলছে কোন মতে। তাও শুধুমাত্র পটিয়া পর্যন্ত দুটি ডেমু ট্রেন চলাচল করছে। দোহাজারী রুটের সব লোকাল ট্রেন চলাচল প্রায় ২ বছর ধরে বন্ধ রয়েছে।
২০২৩ সালের ডিসেম্বরের দিকে কক্সবাজার রুটে পর্যটকবাহী এবং যাত্রীবাহী ও লোকাল ট্রেন চালানোর পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের। এজন্য চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেল লাইনে পুরোদমে কাজ চলছে। এখন পর্যন্ত প্রকল্পের ৭২ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। এর মধ্যে ৪০ কিলোমিটার রেল লাইন বসেছে বলে জানিয়েছেন প্রকল্প পরিচালক। কিন্তু এই সময়ের মধ্যে নতুন কালুরঘাট সেতু নির্মাণের কোনো সম্ভাবনা নেই বলে জানিয়েছেন রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের প্রকৌশল বিভাগ।
বর্তমান কালুরঘাট সেতু দিয়ে কক্সবাজার রুটে দ্রুতগতির ট্রেন চালানো একেবারেই অসম্ভব বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন বুয়েটের বিশেষজ্ঞ দল। একই কথা স্বীকার করেছেন রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের সেতু প্রকৌশল বিভাগের সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীরা। তাই বাধ্য হয়ে রেল কর্তৃপক্ষ শতবছরের পুরনো কালুরঘট সেতু বুয়েটের বিশেষজ্ঞ দলের দেয়া প্রস্তাবনা অনুযায়ী মেরামতের উদ্যোগ নিয়েছেন।