সমাজের সবক্ষেত্রে নারীর প্রতিনিধিত্ব সমান করা প্রয়োজন

মর্জিনা হক চৌধুরী পপি | বৃহস্পতিবার , ২৫ নভেম্বর, ২০২১ at ৬:০৮ পূর্বাহ্ণ

মানবচক্রের যেই মাধ্যমে আমাদের এই দুনিয়াতে আসা তার একটি অপার মাধ্যম এই নারী। নারী কখনো আপনার স্নেহময়ী মা, আপনার আদরের বোন, আবার আপনার প্রেয়সী স্ত্রী। ধর্মেও আছে নারীর সন্মানের স্থান। হাজার সম্পর্কের মাঝেও তাদের সঙে আপনার আমার সম্পর্ক অন্যতম। নারীরা নিজের সুখ বিসর্জন দিয়ে দিতে পারে অন্যের জন্য।
তাই হয়তো একাই সমস্যা ও সমাধানের হালটি নিজ কাঁধে তুলে নেন। নানা ঘাত প্রতিঘাত পার করেই চলে এই নারী। যেই ঘরে বাইরে উভয় ক্ষেত্রে অবদান রাখছে। সেই নারীকে ঘরে বাইরে উভয়ক্ষেত্রেই সমানভাবে নির্যাতিত হচ্ছে। নারীকে সর্বক্ষেত্র মূল্যায়ন করার বদলে নারীকে করা হচ্ছে অবমূল্যায়ন। আজকাল আধুনিক নারীরা স্বয়ংসম্পন্ন। ঘরে বাইরে সমান ভাবে সংসার ও কর্মক্ষেত্রে রাখছে তাদেরই যোগ্যতার স্বাক্ষর। আমাদের সমাজে এখনো নারীর প্রতি সমাজের দৃষ্টিভঙ্গি বৈষম্যমূলক। ধর্ষণ ও যৌন নির্যাতন সহ নানাধরনের সহিংস অপরাধের ক্ষেত্রে হ্রাস পায়নি। দিন দিন যেনো দেশে নারী ধর্ষন, খুন ও অত্যাচার বেড়েই চলছে। পারিবারিক সম্মান সন্তান এবং নানা সামাজিক দিক চিন্তা করে তাঁদের অধিকাংশই এই নির্যাতনের কথা প্রকাশ করেন না। আর নারী যদি অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে যান নির্যাতনের পরিমাণ আরো বেড়ে যায়। তাছাড়া পারিবারিক ও উত্তরাধিকার আইনে অধিকার ভোগের ক্ষেত্রে নারী ও পুরুষের এখনো বৈষম্য রয়ে গেছে। নারীর উন্নয়ন নীতি ঘোষিত হয়েছে কিন্তু এখনো বাস্তবায়ন হয়নি। বাল্যবিবাহ সারাপৃথিবীতে কমলেও বাংলাদেশে বেড়েছে। সরকারের হিসাব মতে ৫২ শতাংশ। এছাড়াও নারীদের বিভিন্ন কর্মক্ষেত্রে হয়রানি ও যৌন হয়রানি করা হয়ে থাকে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানও এ ক্ষেত্রে পিছিয়ে নেই। বাংলাদেশে নারী নির্যাতনের ঘটনায় যারাই সাহস করে মাামলা করেন তারাও বিচার পান না। শতকরা ৯৭ ভাগ মামালায়ই আসামিরা সাজা পান না জামিনে বের হয়ে যায়। আসলে সমস্যা হলো নারী কর্তৃত্ব না থাকায়। যে নারী নির্যাতন করে সে পুরুষ। আইন যে করে সে পুরুষ। বিচার যে করে সেও পুরুষ। ফলে নির্যাতনের বিচার হয় না। তাই নারীর ক্ষমতায়ন ও সমাজের সবক্ষেত্রে তাদের প্রতিনিধিত্ব সমান করা প্রয়োজন। ধর্ষণ ও অন্যান্য সহিংসতার শিকার নারীদের ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে হবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধতরুণ সমাজকে নারীর প্রতি সহিংসতা রোধে ভূমিকা রাখতে হবে
পরবর্তী নিবন্ধদেশ, পতাকা এবং আমাদের বোধ