সমাজসেবায় সাইফুদ্দিন কাদের চৌধুরী ছিলেন নিবেদিতপ্রাণ

স্মরণসভায় ড. হোসেন জিল্লুর রহমান

আজাদী প্রতিবেদন | শনিবার , ৩১ মে, ২০২৫ at ১১:১৪ পূর্বাহ্ণ

বিশিষ্ট শিক্ষানুরাগী মানবহিতৈষী সাইফুদ্দিন কাদের চৌধুরীর ১০তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে স্মরণ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল শুক্রবার রাতে চিটাগং ক্লাব অডিটোরিয়ামে স্মরণসভা অনুষ্ঠিত হয়। এই স্মরণ সভায় সাইফুদ্দিন কাদের চৌধুরীর পরিবারের, রাউজান ও রাঙ্গুনিয়াসহ চট্টগ্রামের বিভিন্ন জায়গার পাঁচ শতাধিক বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।

স্মরণসভায় প্রধান অতিথি ছিলেন ব্র্যাক চেয়ারম্যান, সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ড. হোসেন জিল্লুর রহমান, গেস্ট অব অনার ছিলেন সাবেক মহাহিসাব নিয়ন্ত্রক ও নিরীক্ষক এবং সোনালী ব্যাংকের বর্তমান চেয়ারম্যান মো. মুসলিম চৌধুরী, বিশেষ মেহমান ছিলেন শিপিং ব্যবসায়ী, মরহুমের কনিষ্ঠ ভ্রাতা জামাল উদ্দিন কাদের চৌধুরী। স্বাগত বক্তব্য দেন, সাইফুদ্দিন কাদের চৌধুরীর কনিষ্ঠ সন্তান সাকিব কাদের চৌধুরী। বিশিষ্ট সাংবাদিক ওসমান গণি মনসুরের সভাপতিত্বে এবং চট্টগ্রাম ক্লাবের সাবেক সভাপতি ডা. মইনুল ইসলাম মাহমুদের সঞ্চালনায় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন, ডা. সুভাষচন্দ্র ধর, বার্থ অপারেটর এসোসিয়েশনের সভাপতি ইকরাম চৌধুরী, মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ উল্লাহ, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সদস্য সচিব জাহেদুল করিম কচি, ডা. ওমর ফারুক, সেলিমা কাদের চৌধুরী ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ মোহম্মদ হোসাইন মোহাম্মদ, রহিমপুর ফজলুল কাদের চৌধুরী স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ আবুল মনসুর ফজলে হাবিব, মানবাধিকার আইনজীবী জিয়া হাবিব আহসান, মরহুমের দীর্ঘদিনের সহকর্মী মো. হাসান রুমি।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, একজন গুণী মানুষের জন্য অনেকগুলো গুণী মানুষ আজকে এখানে একত্রিত হয়েছে। আমরা সাইফুদ্দিনসহ অনেকে ছিলাম আজ সবাই নেই। আজকে সাইফুদ্দিনের জীবনের অনেকগুলো দিক সম্পর্কে নতুন করে জানলাম। এর থেকে আমি অনেক কিছু শিখেছি। তিনি বলেন, আজকাল আমাদের মধ্যে আত্মপ্রচার বিমুখ সেবার মানসিকতা কমে গেছে। কিন্তু সেটা সাইফুদ্দিনের মধ্যে প্রবলভাবে ছিল। আত্মপ্রচার বিমুখ সেবার মানসিকতা আমার বন্ধুর ছিল। তৃণমূলের প্রতি তার অগাধ শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা ছিল। রাউজান, রাঙ্গুনিয়া ও আনোয়ারায় অনেক সেবামূলক কার্যক্রম সাইফুদ্দিন করেছে। সাইফুদ্দিনের শিক্ষার প্রতি প্রবল আগ্রহ ছিল। সে ছিল শিক্ষানুরাগী। আজকে এখানে সাইফুদ্দিন অনেক কিছু জেনেছি, এটা তাকে আবিষ্কারের একটা মুহূর্ত বটে। আমরা তার জীবনের শিক্ষণীয় দিকগুলো গ্রহণ করতে পারি। তিনি বলেন, তার ক্রীড়ার প্রতি অনেক আগ্রহ ছিল। ক্রীড়া অনুশীলনের মাধ্যমে অন্যরকম এক মানুষ হওয়া যায়।

গেস্ট অব অনারের বক্তব্যে মোহাম্মদ মুসলিম চৌধুরী বলেন, সাইফুদ্দিন কাদের চৌধুরী অসাধারণ ব্যক্তিত্বের অধিকারী ছিলেন। মানুষকে ভালোভাবে মূল্যয়ন করতেন তিনি। আমার সম্পর্কে পূর্বেই ধারণা ছিল উনার। আজকে এখানে পুরো হাউজ মানুষে ভরা। রাত ১০টা বাজে তবু মানুষ যাচ্ছে না এটাই সাইফুদ্দিন কাদের চৌধুরীর সবচেয়ে বড় পাওয়া। তিনি বলেন, উনি রাজনীতি করেননি কিন্তু রাজনীতি সম্পর্কে সব খোঁজখবর তিনি রাখতেন। আমি খুব বড় কিছু না হলে তিনি আমাকে খুব সমীহ করেছেন।

এরশাদ উল্লাহ বলেন, মানুষ হওয়া যায় কিন্তু ভালো মানুষ হওয়া কষ্টকর। সাইফুদ্দিন কাদের চৌধুরী অনেক বড় মাপের মানুষ ছিলেন। তিনি রাজনীতি পরিবারের সন্তান হয়েও রাজনীতি করতেন না কিন্তু তিনি রাজনীতি করাতেন। সব খোঁজখবর রাখতেন। দুই কারণে আমরা তাকে চিনি এক ভালো মানুষ হিসাবে আর সমাজসেবক হিসাবে।

সাইফুদ্দিন কাদেরের ছোট ছেলে সাকিবকে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, তার কাছ থেকে লিগ্যাসি শিখেছি। সে যেভাবে পিতার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এ আয়োজন করেছে এটা সত্যি শিক্ষণীয়। সে অনেক উদ্যােগ গ্রহণ করেছে। সে তার পূর্বপুরুষের দায়িত্বটা দারুণভাবে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধমীরসরাইয়ে দীঘিতে বিষ ঢেলে মাছ নিধন
পরবর্তী নিবন্ধইউরোপে প্রীতি ম্যাচ খেলতে চায় বাফুফে