সমপ্রীতির বিরুদ্ধে কালো হাত

নাহিদ নেওয়াজ | মঙ্গলবার , ১৯ জুলাই, ২০২২ at ৫:৩৫ পূর্বাহ্ণ

এ দেশ চর্যাপদ, শ্রীকৃষ্ণকীর্তন, মহুয়ার পালা থেকে অসামপ্রদায়িক চেতনায় বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলাদেশের সংবিধানের চারটি মূলনীতির একটি ধর্মনিরপেক্ষতার দেশ। সোনার এ বাংলাদেশে ধর্ম নিয়ে রাজনীতির চেষ্টা বহুবছরের অপসংস্কৃতি। একসাথে মিলেমিশে বসবাস করে সকল ধর্মের মানুষ। সকলে ভাগাভাগি করে নেয় নিজেদের আনন্দ। তবে একজনের অন্যায় কাজের দায় হাজার মানুষের উপর কেন বর্তায়? একজন আকাশ সাহার কারণে কেন নিরীহ মানুষের ঘর পুড়বে? আহাজারি আর কান্নায় আকাশ বাতাস ভারী হয়ে উঠবে?

যে প্রতিবেশী সকালে হাসিমুখে একসাথে গল্প করতে করতে বাজার করে, একসাথে কলেজে যায়, কখনোবা একসাথে খাবার পর্যন্ত ভাগাভাগি করে খায়, পূজোর সময় নাড়ু, মিষ্টি, বাতাসা সনাতন ধর্মের বন্ধুর কাছে চেয়ে খায়, যে হিন্দু প্রতিবেশী ঈদের সময় মার্কেটে গিয়ে কাপড় কিনে বন্ধুর সাথে ঈদে ঘুরে বেড়ায়, সেই প্রতিবেশীই কী পারে একজনের অন্যায় বা অপরাধের কারণে তার অন্য প্রতিবেশীদের ঘরে আগুন দিতে? পারে কি তারা ছারখার করে দিতে এক একটি পরিবারের স্বপ্নকে? পারে কী ধ্বংস করতে সামাজিক সমপ্রীতি ও সৌহার্দ্য? যে অপরাধ করেছে সবাই তার শাস্তি প্রত্যাশা করে তবে একজন অপরাধীর জন্য দশটি পরিবারের উপর বিবেকসম্পন্ন সুনাগরিক পারে কী এমন জঘন্যতম হামলা করতে?

প্রকৃতপক্ষে যারা হামলা করেছে তারা কী প্রতিবেশী নাকি কোন বিশেষ দুষ্ট চক্রের অপরাধী যাদের কাজই অসামপ্রদায়িক বাংলাদেশে সামপ্রদায়িকতা, ধর্মীয় উন্মাদনা অর্থাৎ ধর্মান্ধতাকে উস্কে দেওয়ার একটি নোংরা খেলার ছক কষা। উন্নয়ন ও অগ্রগতিতে বাংলাদেশ এগিয়ে চলেছে দুর্বার গতিতে। তবে কী এ গতিরোধে ধর্মকে ব্যবহার করে অপপ্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে বিভেদ সৃষ্টির জন্য? নবী করীম হযরত মোহাম্মদ (সঃ)কে নিয়ে আকাশ সাহার কটুক্তির সঠিক তদন্তের মাধ্যমে যেমন বিচার হওয়া উচিত তেমনই ভাবে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে যারা নিরপরাধ মানুষের ঘরবাড়িতে আগুন দিয়েছে তাদেরও শাস্তি হওয়া উচিত বলে মনে করি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধটিকটক যখন মৃত্যুর কারণ
পরবর্তী নিবন্ধস্মরণ : সাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদ