সভার তথ্য সংবাদ মাধ্যমে ফাঁস হওয়া নিয়ে নাছিরের উষ্মা, বাবুলের জবাব

আজাদী প্রতিবেদন | শুক্রবার , ৫ জুলাই, ২০২৪ at ৬:৪৫ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের বিভিন্ন সাংগঠনিক সভার তথ্য সংবাদ মাধ্যমে ফাঁস হয়ে যাওয়া নিয়ে উষ্মা প্রকাশ করেছেন নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন। আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও জাতীয় সংসদের হুইপ আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপনের উপস্থিতিতে গতকাল বৃহস্পতিবার নগরীর দারুল ফজল মার্কেটের দলীয় কার্যালয়ে মহানগর আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সভায় বক্তব্যে তিনি এই ক্ষোভ প্রকাশ করেন। সভায় উপস্থিত নগর আওয়ামী লীগের দুই নেতা আজাদীকে বলেন, সভায় আ জ ম নাছির উদ্দীন তার বক্তব্যে মহানগর আওয়ামী লীগের বিভিন্ন সাংগঠনিক সভার তথ্য সংবাদ মাধ্যমে ফাঁস হয়ে যাওয়া নিয়ে উষ্মা প্রকাশ করেন। এছাড়াও তিনি সংগঠনের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা দায়িত্ব পাওয়ার পরও অনেকেই দায়িত্ব পালন করছেন না বলে কড়া সমালোচনা করেন। বক্তব্যে তিনি বলেন, আমরা সভায় পজেটিভ কথা বলি কিন্তু অর্পিত দায়িত্ব পালন করি না। খোলার দিনে মিটিং ডাকলে অনেকেই অনীহা প্রকাশ করেন।

আ জ ম নাছির উদ্দীনের বক্তব্যের পাল্টা কড়া জবাব দেন নগর আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি অ্যাডভোকেট ইব্রাহিম হোসেন চৌধুরী বাবুল। এই নিয়ে সভা অনেকটা উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। সভায় উপস্থিত আরও কয়েকজন নেতা উভয় নেতার বক্তব্যের পক্ষেবিপক্ষে বক্তব্য দেয়ার চেষ্টা করলে সভার প্রধান অতিথি কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপনের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি বেশি দূর গড়ায়নি।

সভায় আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেন, সম্মেলনের মাধ্যমে দক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নেতৃত্ব নির্বাচনের জন্য সকল স্তরের নেতাকর্মীকে আন্তরিকভাবে কাজ করে যেতে হবে। এই কার্যপরিধি পরিচালনার ক্ষেত্রে অবশ্যই শতভাগ সাংগঠনিক শৃঙ্খলা বজায় রাখতে হবে এবং কোন ধরনের দলীয় আদর্শ ও নীতিনৈতিকতা বিরোধী আচরণকে কিছুতেই প্রশ্রয় দেয়া হবে না। তিনি আরো বলেন, আমাদের মধ্যে অবশ্যই নেতৃত্ব ও পদপদবীর জন্য প্রতিযোগিতা থাকতে পারে। আওয়ামী লীগের মতো একটি বিশাল সংগঠনে এই প্রতিযোগিতা থাকাটাই স্বাভাবিক। তাই বলে দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হওয়ার মতো কোন ঘটনা বা আচরণ যাতে না হয় সেদিকেও সকলকে লক্ষ্য রাখতে হবে এবং সর্বোপরি কোনভাবেই যাতে বিভেদ ও অনৈক্যের হানাহানি না ঘটে সেদিকেও লক্ষ্য রাখতে হবে। অনেকের সঙ্গে সাংবাদিকদের যোগাযোগ বেশি। সাংগঠনিক সভায় কোনো কথা হলে সেটা পত্রিকায় চলে যায়। উনারা আবার দলের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের ছোট করে, সম্মানহানি করে পত্রিকায় বক্তব্যও দেন। তিনি এও স্মরণ করিয়ে দেন যে, সুনির্দিষ্ট প্রমাণ ও তথ্যউপাত্ত ছাড়া কারো বিরুদ্ধে ঘরপরতা ও ঢালাও অভিযোগ কিছুতেই কাম্য হতে পারে না। এ ধরনের কল্পিত অভিযোগ দলের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকারক।

জানা গেছে, আ জ ম নাছির উদ্দীনের বক্তব্যের জবাবে নগর আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি অ্যাডভোকেট ইব্রাহিম হোসেন চৌধুরী বাবুল বলেন, ‘চরম সংকটেদুর্দিনে যুদ্ধ করে এ দলকে আমরা টিকিয়ে রেখেছি। ১৯৯৪ সালে এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর নির্বাচনের সময় রাতজেগে পাহারা দিয়ে বিজয় ছিনিয়ে এনেছি। সেদিন মহিউদ্দিন ভাই মেয়র নির্বাচিত হয়েছিলেন বলেই চট্টগ্রাম শহরে আওয়ামী লীগ ফের শক্ত ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়েছিল। সেদিন আজকে যারা বড় বড় কথা বলেন, তারা কে, কোথায় ছিলেন একটু জানতে চাই। এখানে কেউ ভেসে আসেনি। সবাই চট্টগ্রাম শহরের বাসিন্দা। সাংবাদিকরাও চট্টগ্রাম শহরের। কেউ যদি মনে করেন ভেসে এসেছি, সেটা ন্যায্য হবে না।’

পূর্ববর্তী নিবন্ধসাবেক এমপি মোস্তাফিজের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা
পরবর্তী নিবন্ধশেখ হাসিনাকে ‘ইকেবানা’ উপহার পাঠালেন বাবা হারানো জাপানি কন্যা