সব বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের ছাত্রত্ব বাতিল চায় ছাত্রদল

কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ‘মার্চ ফর জাস্টিস’ কর্মসূচি ক্যাম্পাসে আন্ডারগ্রাউন্ড রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবি

| রবিবার , ১৯ জানুয়ারি, ২০২৫ at ৭:০৭ পূর্বাহ্ণ

দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ‘আন্ডারগ্রাউন্ড রাজনীতি’ নিষিদ্ধের দাবি জানিয়েছেন ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম। গতকাল শনিবার বিকালে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ‘মার্চ ফর জাস্টিস’ কর্মসূচিতে কোনো সংগঠনের নাম তুলে না ধরে তিনি বলেন, বাংলাদেশে যেহেতু ‘খুনি হাসিনার’ মত ভয়ংকর ফ্যাসিবাদের পতন হয়েছে, তাই এখানে আর কোনো আন্ডারগ্রাউন্ড রাজনীতির বাস্তবতা নেই। তারপরও যদি কোনো রাজনৈতিক দল আন্ডারগ্রাউন্ড রাজনীতিতে লিপ্ত থাকে, আমরা ধরে নেব, তারা আবারও একাত্তর সালের মত কোনো ষড়যন্ত্র করছে। জুলাই ঘোষণাপত্রের দিকে ইঙ্গিত করে রাকিব বলেন, ছাত্রদলের ১৫ বছরের ত্যাগ, শ্রম ও সংগ্রাম অস্বীকার করে কোনো ইতিহাস রচনা করা হলে তা ডাস্টবিনে নিক্ষেপ করা হবে। খবর বিডিনিউজের।

এদিন বিকাল ৩টায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটের সামনে থেকে শুরু হয় ‘মার্চ ফর জাস্টিস’ কর্মসূচি। এতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ও ঢাকা মহানগরসহ ছাত্রদলের বিভিন্ন ইউনিটের নেতাকর্মীরা অংশ নেন। পরে মিছিল নিয়ে শাহবাগ হয়ে তারা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে জড়ো হন। সেখানে ছাত্রদল সভাপতি বলেন, জুলাইআগস্টে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বে সব রাজনৈতিক দল ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। আমরা ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে এক এবং ঐক্যবদ্ধ আছি। কিন্তু যারা জুলাইআগস্টের আন্দোলন কুক্ষিগত করতে চায়, তারা যেন দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করে। আমি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলতে চাই, আপনারা এমন কোনো কর্মকাণ্ড করবেন না, যা দ্বারা ঐক্য নষ্ট হয়।

ছাত্রলীগের ব্যাপারে তিনি বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের কোনো বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাদের বিচারের আওতায় আনতে ন্যূনতম সদিচ্ছা দেখাচ্ছে না। সরকার ভেবেছে, ছাত্রলীগকে শুধু দায়সারা নিষিদ্ধ করলেই চলবে। তিনি বলেন, জুলাইআগস্ট অভ্যুত্থানে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলাকারীদের শনাক্ত করতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন ক্যাম্পাসে তদন্ত কমিটি হয়েছে। কিন্তু সাড়ে পাঁচ মাসেও আমরা কোনো প্রতিবেদন দেখিনি। দ্রুত ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন দিতে হবে। তাদের ছাত্রত্ব বাতিল ও আইনের আওতায় আনতে হবে। আমরা কোনো আল্টিমেটাম দিচ্ছি না। তবে আমরা বিচার প্রক্রিয়া চালুর দাবি জানাচ্ছি। আপনারা যত দেরি করবেন, তাদের পুনর্বাসন প্রক্রিয়া তত সহজ হবে।

ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিন বলেন, গত সাড়ে ১৫ বছর ধরে যারা গণতন্ত্র ধ্বংস করেছে, সে খুনি সংগঠনকে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। কিন্তু আমরা দেখলাম ছাত্রলীগের এখনো কোনো শীর্ষ সন্ত্রাসীকে অন্তর্বর্তী সরকার গ্রেপ্তার করতে পারেনি।

সংগঠনের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি গণেশ চন্দ্র রায় বলেন, বিভিন্ন ক্যাম্পাসে স্বৈরাচারের দোসররা এখনও বহাল তবিয়তে। যারা হাসিনাকে সাহায্য করেছে, তারা থেকে গেলে জুলাইআগস্টের স্পিরিট বিনষ্ট হবে।

মার্চ ফর জাস্টিস কর্মসূচিতে ছাত্রদলের অন্যান্য নেতার মধ্যে জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি আবু আফসান মোহাম্মদ ইয়াহইয়া, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আমানুল্লাহ আমান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক নাহিদুজ্জামান শিপন, ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি সালাহউদ্দিন আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুর রহমান, দক্ষিণের সভাপতি শামীম মাহমুদ, সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহিম ভুঁইয়া, ঢাকা মহানগর পূর্বের সভাপতি সোহাগ ভুইয়া, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হান্নান মজুমদার, ঢাকা মহানগর পশ্চিমের সভাপতি রবিন খান ও সাধারণ সম্পাদক আকরাম আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধগাজায় যুদ্ধবিরতি আজ থেকে
পরবর্তী নিবন্ধযৌতুক নেই, মোহরানা কম, নগদে পরিশোধ