সব বিলবোর্ডের চুক্তি বাতিলের নির্দেশ

স্থানীয় সরকার বিভাগের কমিটির সভায় মেয়র যদি চুক্তিতে থাকে যার নামে দোকান বরাদ্দ তাকেই চালাতে হবে, কিন্তু সে যদি অন্যকে ভাড়া দেয় তাহলে এই চুক্তিগুলো বাতিল করতে পারি

আজাদী প্রতিবেদন | শুক্রবার , ৩ জানুয়ারি, ২০২৫ at ৫:৫৬ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনকে স্বাবলম্বী করতে অতীতের হওয়া বিভিন্ন অনিয়ম দূর করার পাশাপাশি বিভিন্ন প্রশাসনিক পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম সিটি মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন।

গতকাল বৃহস্পতিবার টাইগারপাসস্থ চসিক কার্যালয়ে চসিকের সার্বিক কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য স্থানীয় সরকার বিভাগের গঠিত কমিটির সাথে আয়োজিত বিশেষ সাধারণ সভায় মেয়র বলেন, দুর্নীতি কমাতে হবে। এই দুর্নীতির কারণে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন সঠিক রেভিনিউ পাচ্ছে না। আর্থিক সংকটে সেবামূলক কার্যক্রমগুলো চালাতে আমরা খুব বাধাগ্রস্ত হচ্ছি। যার কারণে সমস্ত নিয়মকানুনকে ডেভিয়েট করে যে নির্দেশগুলো দেওয়া হয়েছে বিশেষ করে ট্যাঙ কালেকশনের ক্ষেত্রে সেগুলো বাতিল করতে হবে।

তিনি বলেন, ‘যেসব শপিং কমপ্লেক্সে, মার্কেটে যাদেরকে আমরা ভাড়া দিয়েছি যাদের সাথে আমাদের চুক্তি হয়েছে। যদি চুক্তিতে থাকে যার নামে দোকান বরাদ্দ তাকে ব্যবসা পরিচালনা করতে হবে কিন্তু সে যদি আরেকজনকে ভাড়া দিয়ে থাকে তাহলে এই ধরনের চুক্তিগুলো নতুন করে অথবা এই চুক্তিগুলো আমরা বাতিল করতে পারি।’

চসিকের বিলবোর্ডের চুক্তি বাতিলের নির্দেশনা দিয়ে মেয়র বলেন, যত বিলবোর্ড আছে সমস্ত বিলবোর্ডের চুক্তি বাতিল করে দিন। আমরা অনিয়মের কারণে অসম্ভব বেশি ট্যাক্স থেকে বঞ্চিত হচ্ছি। আমি একটা উদাহরণ দিচ্ছি বিলবোর্ডের। সেন্ট্রাল প্লাজাতে ৭টা বিলবোর্ড দেয়া হয়েছে। এসব বিলবোর্ড থেকে তারা বছরে চারপাঁচ কোটি টাকা ইনকাম করছে। কিন্তু আমরা পাচ্ছি বছরে মাত্র ২১ লাখ টাকা। আমার মনে হয় এইসব ব্যাপার নিয়ে আমাদেরকে খুব স্ট্রিক্টলি আগাতে হবে। আমরা সমস্ত বিলবোর্ড এবং সমস্ত সৌন্দর্য বর্ধনের চুক্তি বাতিল করে নতুন বছরে নতুনভাবে শুরু করতে চাই।

চসিককে আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী করতে নেয়া পদক্ষেপ সম্পর্কে মেয়র বলেন, আল্লাহর রহমতে আমরা প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটি ফেরত পেয়ে যাচ্ছি। এ বিষয়ে কার্যক্রম আল্লাহর অসীম রহমতে অলমোস্ট শেষের দিকে। আমরা বন্দর থেকে যে এক শতাংশ হারে মাসুল যেটা চেয়েছি সেটা পজিটিভলি আগাচ্ছে। আরেকটি সুখবর এখন বন্দরের দুইজন ভদ্রলোক ফিন্যান্সের যারা দায়িত্বে আছে তারা আমাদের সাথে দেখা করেছেন। বন্দর থেকে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন যে হোল্ডিং ট্যাঙ পায় তা বাণিজ্যিক হারে পাওয়ার আশ্বাস পেয়েছি। সম্ভবত সেটা ১৬২ কোটি টাকা বাৎসরিক হবে। ওইটার কার্যক্রমের অংশ হিসেবে তারা দুজন এসেছেন, আমার সাথে কথা বলেছে। আমি বন্দরের চেয়ারম্যান সাহেবের সাথেও কথা বলেছি। উনিও পজিটিভ আছেন। সচিব মহোদয় পজিটিভ আছেন। আমার মনে হয় এটা যদি হয়ে যায় আল্লাহ রহমতে আমাদের একটা ভালো এমাউন্ট আমরা আশা করি পাব। এজন্য বলছি আমরা একটা পজিটিভ ফ্রেম অফ মাইন্ড নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছি। আমরা প্রতিটি জায়গায় আমি চাচ্ছি যে ইরেগুলারিটিসগুলো হয়েছে সেগুলো ঠিক করতে।

সবার সহযোগিতা চেয়ে মেয়র বলেন, আমরা চাচ্ছি যে সিটি কর্পোরেশনকে একটা আয়বর্ধক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করতে। এটা হলে নাগরিকদের শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে আরও বেশি সেবা করতে পারবো আমরা। আমাদের সবাইকে সেজন্য পজিটিভ এবং মাইন্ড নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে এবং আমাদেরকে সবাইকে একটিভ হতে হবে, ডায়নামিক হতে হবে এবং আমাদেরকে সবারই সবার জায়গা থেকে এই কাজে সার্বিকভাবে সহযোগিতা করতে হবে।

সভায় চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম, সচিব মো. আশরাফুল আমিনসহ চসিকের বিভাগীয় ও শাখা প্রধানগণ এবং নগরীর বিভিন্ন সরকারি সংস্থার প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধঅবশেষে কাজী নজরুল ইসলামকে জাতীয় কবির রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি
পরবর্তী নিবন্ধটাকার বিনিময়ে রিয়াল দেবে বলে ৫ লাখ টাকা আত্মসাৎ