দক্ষিণ আফ্রিকায় প্রবাসী বাংলাদেশিদের দেওয়া সংবর্ধনায় অংশ নিয়ে আগামী জাতীয় নির্বাচনে নৌকায় ভোট চাওয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সমালোচনা করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। পূর্বঘোষিত ঢাকা মহানগর উত্তরের কালো পতাকা মিছিলের আগে গতকাল বিকালে শ্যামলী ক্লাব মাঠের সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন।
সরকারের পদত্যাগ দাবিতে ১২ জুলাই ঘোষণা করা এক দফা আন্দোলনের অংশ হিসেবে এটি ছিল বিএনপি ও সমমনা জোটের পঞ্চম কর্মসূচি। আজ একই দাবিতে অন্যান্য মহানগরেও একই কর্মসূচি পালন করবে তারা। খসরু বলেন, ওইখানে প্রবাসী বাংলাদেশিদের উদ্দেশে বক্তব্য রেখেছেন, ওই বক্তব্যে নৌকায় ভোট দিতে বলেছেন। চিন্তা করেন, আরে কোথায় যাইয়া কি কয়? ভোট হবে বাংলাদেশে, উনি দক্ষিণ আফ্রিকা গিয়ে ভোট চাইছেন…অবস্থা কি বুঝেন। আর কি করছেন সেখানে বিএনপিকে গালিগালাজ করছেন। স্বভাবজাতভাবে যা করেন, এটা তো প্রত্যেকদিন আপনি বাংলাদেশে করতেছেন। জনগণের করের টাকা খরচ করে দলবল নিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকা গিয়ে বিএনপিকে গালিগালাজ করার প্রয়োজন নাই। খবর বিডিনিউজের।
ব্রিকসে বাংলাদেশের না থাকা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, দক্ষিণ আফ্রিকা গিয়েছেন বাংলাদেশের অনির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী। দলবল নিয়ে, পরিবার নিয়ে, বাংলাদেশের জনগণের করের টাকা খরচ করে দক্ষিণ আফ্রিকা গিয়েছেন, কি জন্য? ব্রিকসের মেম্বার হবেন, কি হয়েছে? যে কাজে গিয়েছেন ওই কাজ তো হয় নাই। সুতরাং প্রত্যেক জায়গা থেকে প্রত্যাখ্যাত হবেন। সবাই প্রত্যাখ্যান করবে অবৈধকে। মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরে গ্রহণযোগ্যতা পাবেন না।
তিনি বলেন, আজকে এই সমাবেশে আসার সময় একটা ছবি দেখলাম। দক্ষিণ আফ্রিকায় যারা গেছে ব্রিকসে, সবাই তো মেম্বার হয় নাই, বাংলাদেশও হয় নাই। তবে সবাই মিলে একটা ছবি তুলেছেন… এই ছবি হচ্ছে অফিশিয়াল ছবি। ওই ছবিতে সবাই আছে কিন্তু আমাদের অনির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী নাই। উনার ছবি কার সাথে? উনি আর উনার মেয়ে চায়নার প্রধানমন্ত্রীর সাথে। চীনের প্রধানমন্ত্রীর এর সাথে বাইলেটারাল মিটিং করার জন্য দক্ষিণ আফ্রিকায় যেতে হবে কেন? তৃতীয় কোনো দেশে গিয়ে কেউ বাইলেটারাল মিটিং করে না। বাইলেটারাল মিটিং হয় যেদেশে যাচ্ছেন সেই দেশের সাথে। তৃতীয় দেশে গিয়ে বাইলেটারাল মিটিং উনাকে করতে হচ্ছে।
আমীর খসরু বলেন, সবার কাছে আমাদের বার্তা, দেয়ালের লিখন পড়তে শিখুন। দেয়ালে কি লেখা আছে, শেখ হাসিনা বিদায় হও। যারা এখনো দেয়ালের লিখন পড়তে পারছেন না তাদেরকে বলছি দেয়ালের লিখন পড়েন, সিদ্ধান্ত নেন, জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে পারবেন না। আর নিলে এই দায়–দায়িত্ব আপনাদের ওপরে বর্তাবে।
সরকার ‘জঙ্গি নাটক’ করে জনগণের দাবিকে পাশ কাটানোর কৌশল নিয়েছে অভিযোগ করে আমীর খসরু বলেন, আওয়ামী লীগের মতো এত বড় সন্ত্রাসী দল পৃথিবীর কোথাও পাবেন না। যারা সরকারি রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করে, পুলিশের একটি অংশকে ব্যবহার করে, আইনশৃক্সখলা বাহিনীর একটি অংশকে ব্যবহার করে, বিচারককে ব্যবহার করে দণ্ডিত করছে–এই রকম কোনো দেশে দেখবেন না। এদের মতো সন্ত্রাসীদের আর ক্ষমতায় থাকতে দেওয়া যাবে না।