মাহে রমজান ইবাদত–বন্দেগির মাধ্যমে আল্লাহ্র নৈকট্য অর্জনের মাস। জাকাত প্রদান করে গরীব–দুখী মানুষের ভাগ্য বদলে দেয়ার সুমহান সুযোগ মাহে রমজান।
স্থবির জীবনযাত্রা হয় সচল ও প্রাণবন্ত হয় মাহে রমজানে। অলসতা জীর্ণতা ঝেড়ে মুছে সবাই ঘুরে দাঁড়ায় এই রমজানে। একদিকে আল্লাহ্র বন্দেগিতে নিয়োজিত হওয়ার তৃপ্তি এবং অন্যদিকে আর্থিক মানসিক উন্নতি ও সান্ত্বনার পরম উপলক্ষ যেন মাহে রমজান।
অন্য সময়ের চেয়ে বাড়তি ইবাদত–বন্দেগির মতো বেশি বেশি কেনাকাটা হয় এই মাসে। যার ফলে ব্যবসা–বাণিজ্যেও রমরমা অবস্থা বিরাজ করে।
চৈত্র মাসে প্রখর রোদে যখন মাঠ–ঘাট ফেটে চৌচির ও পিপাসার্ত থাকে এবং ওই সময় বৃষ্টি নামলে প্রকৃতি–পরিবেশ যেমন সজীব ও প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে তেমনি মাহে রমজানে ঈমানদার জনতার পিপাসার্ত চিত্ত রহমতের বারিধারায় সিক্ত হয়, ভিজে প্রশান্ত হয়। মাহে রমজানে আল্লাহ্র অফুরন্ত রহমত আমরা প্রতি মুহূর্তেই টের পাই। শুধু ঈমানদাররা নয়; অন্য ধর্মের মানুষও মাহে রমজান ও ঈদের নানা আয়োজনের দ্বারা নানাভাবে ফায়দা অর্জন করে। মাসভর রোজা শেষে আসে আনন্দের বড় উপলক্ষ ঈদুল ফিতর। এই ঈদকে সামনে রেখে রমজানের দিনগুলোতে চলে হরেক রকম বেচাকেনার উৎসব। এতে সামিল হয় সর্বস্তরের মানুষ। সর্বস্তরের ব্যবসায়ীরা। সবার রোজগার তখন বেড়ে যায় মাহে রমজান ও ঈদের উসিলায়। সকলের প্রতি আল্লাহ্র রহমত মূলত এখানেই, এভাবেই।
রোজার মাসের আরেকটি দিক তো আরো চমৎকার। আমাদের চারপাশে হাজারো অভাবী–গরীব মানুষ অভাবের কারণে খেয়ে না খেয়ে দিন কাটালেও রমজান মাসে তাদের অবস্থার উন্নতি হয়। রোজাদাররা গরীব–দুখীদের দিকে মমতার হাত বাড়ান। সামর্থ্যবানরা জাকাতের টাকায় গরীবের দুখ–দুর্দশা মোচনে এগিয়ে আসেন। কেননা, গরীবের জীবনকে সমৃদ্ধ জীবনে নিয়ে আসতেই দেয়া হয়েছে জাকাতের বিধান। অসহায় নিঃস্ব মানুষের স্বাভাবিক শান্তিময় জীবনযাত্রা নিশ্চিত করতেই আল্লাহ্পাক জাকাত ফরয করেছেন বিত্তবানদের ওপর। আর বিত্তবানরাও মাহে রমজানে অধিক সওয়াবের আশায় বিপন্ন মানুষের দিকে নজর দেয়, তাদের অভাব–অভিযোগ দূর করতে এগিয়ে আসে। মূলত এভাবেই মানুষে মানুষে দূরত্ব ও ব্যবধান ঘুচে যায় মাহে রমজানে। সবাই দিন কাটায় সুখে শান্তিতে। রোজার আনন্দধারা সবাইকে ছুঁয়ে যায়। এ কারণেই রোজার মাসটি মহিমান্বিত।