সবজির বাজারে আগুন

কমেনি আলুর দাম, অন্য সবজিও ৬০ টাকার ওপরে

আজাদী প্রতিবেদন | শুক্রবার , ১৬ অক্টোবর, ২০২০ at ৪:০৩ পূর্বাহ্ণ

বেশ কয়েক সপ্তাহ ধরে সবজির বাজারে আগুন ঝরছে। এত বছর একমাত্র আলু পাওয়া যেতো ২০-৩০ টাকায়, এখন সেই আলুও ঠেকেছে ৫০ এর কোটায়। আলু ছাড়া বলতে গেলে ৬০ টাকার নিচে কোনো সবজিই বাজারে পাওয়া যাচ্ছে না। এমনকি আগাম শীতকালীন সবজি বিক্রি হচ্ছে একশত টাকারও বেশি দরে। ফলে গরীবের ভাতের প্লেট থেকে দিন দিন উধাও হয়ে যাচ্ছে সবজি। সবজির জায়গা নিয়েছে আমিষ ও প্রোটিনযুক্ত খাবার। একই অবস্থায় পড়েছে মধ্যবিত্ত পরিবারগুলোও। যাদের আয়-ব্যয় হিসেব করে চলতে হয়। সবজি ব্যবসায়ীরা জানান, সাম্প্রতিক সময়ে বৃষ্টিপাতের কারণে উত্তরাঞ্চল থেকে সবজির সরবরাহ কমে গেছে।
গতকাল নগরীর কাজীর দেউরি ও ২ নম্বর গেট কর্ণফুলী কমপ্লেক্স কাঁচাবাজারে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শীতকালীন সবজি শিম গত সপ্তাহের তুলনায় ১০ টাকা বেড়ে গিয়ে বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকায়। এছাড়া শসা ১০ টাকা বেড়ে ৮০ টাকা, ঝিঙ্গা ১০ টাকা বেড়ে ৮০ টাকা এবং চিচিঙ্গা ১০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে এখন ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া আলু ৫ টাকা বেড়ে ৫০ টাকা, পটল ১০ টাকা বেড়ে ৮০ টাকা, টমেটো দেশি ২০ বেড়ে টাকা ১২০ টাকা, ভারতীয় টমেটো ১০ টাকা বেড়ে ১৩০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া কাঁচা গত সপ্তাহের দামে ৭০ টাকা এবং মিষ্টি কুমড়া পাঁকা বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকায়। অন্যদিকে পেঁপে ১০ টাকা বেড়ে ৬০ টাকা, বেগুন বিক্রি হচ্ছে ২০ টাকা বেড়ে ৯০ টাকা, বরবটি ২০ টাকা বেড়ে এখন বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকায়, ঢেড়শ ১০ টাকা বেড়ে ৮০ টাকা, লাউ ১০ টাকা বেড়ে ৬০ টাকা, ফুলকপি ১০ টাকা বেড়ে ১৪০ টাকা, কাকরল ১০ টাকা বেড়ে ৯০ টাকা এবং বাঁধাকপি ১০ টাকা বেড়ে ৮০ টাকা এবং মূলা ১০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৯০ টাকায়।
কাজীর দেউরি বাজারের সবজি বিক্রেতা মোহাম্মদ আজম জানান, গত দুই সপ্তাহে বাজারে সবজির সরবরাহ কিছুটা কমে গেছে। যার ফলে দামও বেড়ে গেছে। নগরীতে উত্তরাঞ্চল ছাড়া স্থানীয় উপজেলাগুলো থেকে সবজি আসে। বিশেষ করে সীতাকুণ্ড, হাটহাজারী, বাঁশখালী এবং চন্দনাইশ থেকে বেশি আসে। কিন্তু এই সপ্তাহে এসব অঞ্চল থেকে সবজি এসেছে কম। চাহিদা সাথে যোগানের সামঞ্জস্য না থাকার কারণে দাম বাড়ছে। চাকরিজীবী মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন জানান, বাজারে প্রত্যেক সবজির দাম আকাশ ছোঁয়া। বেশ কয়েক সপ্তাহ যাবত ব্যসায়ীরা বলছেন বৃষ্টির কারণে দাম বেড়েছে। বৃষ্টি হয়েছে তো অনেক আগে। এখন তো আর বৃষ্টির প্রভাব থাকার কথা নয়।
কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) চট্টগ্রাম বিভাগীয় সভাপতি এসএম নাজের হোসাইন দৈনিক আজাদীকে বলেন, শুধুমাত্র কাঁচাবাজার নয়, প্রত্যেকটি ভোগ্যপণ্যের বাজার এখন আগুন। অথচ মানুষের ক্রয় ক্ষমতা দিন দিন কমে যাচ্ছে। করোনা মহমারীতে অনেকে চাকরি হারিয়েছেন। অনেক শহরে পরিবার চালাতে না পেরে বাড়িতে পাঠিয়ে দিয়েছেন। এই সময়টাকে পুুঁজি করে ব্যবসায়ীরা যার যার মতো অতিরিক্ত মুনাফা করে যাচ্ছেন। আমাদের দেশে শুধুমাত্র রজমান এলেই সবজির বাজারে অভিযান চালানো হয়। অথচ সামান্য বর্ৃষ্টি হলেই ব্যবসায়ীরা পরিকল্পিতভাবে দাম বাড়িয়ে দেন। এটি প্রশাসনকে অবশ্যই দেখতে হবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধনিক্সন চৌধুরীর বিরুদ্ধে ইসির মামলা
পরবর্তী নিবন্ধখুলশী থেকে কিশোর গ্যাং লিডার শরীফ গ্রেপ্তার