সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের অবস্থান নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র যা জানাল

| রবিবার , ৩ ডিসেম্বর, ২০২৩ at ৭:৫৪ পূর্বাহ্ণ

সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি বাস্তবায়নে জোর দিয়ে আসছে বাংলাদেশ। সবশেষ গত বছর আদালত চত্বর থেকে জঙ্গি ছিনতাই এবং পার্বত্য অঞ্চলে নতুন জঙ্গি দলের তৎপরতা মেলার পর চলেছে ব্যাপক অভিযান।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর অবস্থানের মধ্যেও ২০২২ সালে বাংলাদেশে ‘সন্ত্রাসমূলক সহিংসতার কিছু ঘটনা ঘটেছে’ বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্ট। সেখানে বলা হয়, গত বছর কিছু ঘটনা ঘটেছে, যেহেতু সরকার আল কায়েদা সংশ্লিষ্ট জামাতউলমুজাহিদিন (জেএমবি) ও আইএসআইএস সহযোগী নব্য জেএমবি সদস্যদের কঠোরভাবে দমনের চেষ্টা চালিয়ে গেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও অন্যান্য সরকারি কর্মকর্তারা বারবার সন্ত্রাসবাদের বিষয়ে জিরোটলারেন্স নীতির উপর জোর দিয়েছেন। যদিও বাংলাদেশে আলকায়েদা এবং আইএসআইএসের উপস্থিতি অস্বীকার করে আসছে সরকার। খবর বিডিনিউজের।

কান্ট্রি রিপোর্টস অন টেরোরিজম ২০২২ : বাংলাদেশ’ শীর্ষক প্রতিবেদনে বলা হয়, গত বছরের অক্টোবরে পাহাড়ে আলকায়েদা অনুপ্রাণিত গোষ্ঠী জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ার বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনার ঘোষণা দেয় বাংলাদেশ। যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত বাংলাদেশ পুলিশ ইউনিট কয়েক ডজন সন্ত্রাসীকে গ্রেপ্তার করে।

জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া নামের দলটি মূলত হরকাতুল জিহাদ (হুজি), জেএমবি ও আনসার আল ইসলাম থেকে দলছুট কিছু লোক মিলে গঠন করেছে। সংগঠনটি র‌্যাবের নেটওয়ার্কে ধরা পড়লেও এতে কত সদস্য, নেতৃত্বে কারা কিংবা কী পরিমাণ অস্ত্র রয়েছে তাদের হাতে, সেসব নিয়ে এখনও স্পষ্ট ধারণা নেই।

নতুন এই জঙ্গি দলের পাহাড়ি যোগের তথ্য সামনে আসার পর পার্বত্য চট্টগ্রামে সমন্বিত অভিযান শুরু করে বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। জঙ্গিদের অবস্থানের তথ্য প্রদানকারীকে লাখ টাকা পুরস্কার দেওয়ারও ঘোষণা দেওয়া হয়।

মার্কিন প্রতিবেদনে এই ঘটনা তুলে ধরার পাশাপাশি ২০ নভেম্বরে ঢাকার আদালত চত্বর থেকে প্রকাশক ফয়সাল আরেফিন দীপন হত্যা মামলার দুই আসামি মইনুল, হাসান শামীম ও আবু সিদ্দিক সোহেলকে ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনার কথাও বলা হয়। অপরদিকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিরুদ্ধে বিচার বহির্ভূত হত্যা ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের কথাও বলেছে যুক্তরাষ্ট্র।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০০৯ সালের সন্ত্রাসবিরোধী আইন অনুযায়ী গ্রেপ্তার ছাড়াও ২০১৮ সালের ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট অনুযায়ী জঙ্গিদের প্রচারণা, অর্থায়ন, মৌলবাদ, জঙ্গিদের নিয়োগ ও বিদ্বেষমূলক বক্তব্য নিয়ন্ত্রণ করতে পারে পুলিশ। তবে দেশ ও বিদেশের সমালোচকরা দাবি করেন, ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টে সরকারের সমালোচকদেরও টার্গেট করা হয়। অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা ও সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতার কথাও তুলে ধরা হয়েছে।

স্টেট ডিপার্টমেন্ট বলছে, যুক্তরাষ্ট্র সরকার পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট (সিটিটিটিসিইউ) ও অ্যান্টি টেরোরিজম ইউনিটকে (এটিটি) বিভিন্ন সহায়তা দিয়েছে। সন্ত্রাসবিরোধী ট্রাইব্যুনাল (এটিটি) বিচারক ও প্রসিকিউটরদের প্রশিক্ষণও দিয়েছে।

বাংলাদেশে রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরে সহিংসতার উদ্বেগ নিয়ে বলা হয়েছে, ২০২২ সালে সেখান থেকে বড় ধরনের কোনো সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের হুমকির খবর পাওয়া যায়নি। জাতিসংঘের পর্যবেক্ষকদের মতে, পুলিশ, শিক্ষাবিদ, সুশীল সমাজ সংগঠন এবং অন্যরা জাতীয় সন্ত্রাস দমন সমন্বয় কৌশলের খসড়া প্রণয়ন অব্যাহত রেখেছে। তবে এর অগ্রগতি জানা যায়নি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধভোটাররাই তাদের প্রতিনিধি নির্বাচন করবেন : মাহতাব
পরবর্তী নিবন্ধহরতালের নামে অপকর্ম ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিরোধ করতে হবে