সন্তানের প্রতি দায়িত্ববোধ এবং ইন্টারনেট প্রেম

রূপম চক্রবর্ত্তী | শুক্রবার , ২৬ নভেম্বর, ২০২১ at ৭:৪৬ পূর্বাহ্ণ

আজকে এমন একটা অবস্থা যেখানে তথ্য প্রযুক্তি আর ইন্টারনেট ব্যাতীত আমরা থাকতে পারি না। যতদিন যাচ্ছে তত প্রযুক্তির প্রতি আমরা দুর্বল হয়ে পড়েছি। স্মার্ট ফোন আর মোবাইল গেমের ভালোবাসায় আজকের দিনের শিশুরা এতো বেশি আসক্ত হয়ে পড়ছে যেটা এখন আমাদের চিন্তার একটা বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমাদের ছেলেমেয়েরা দিনদিন খুব বেশি আসক্ত হয়ে পড়ছে। অনেক মা বাবা আছি যারা দুইজনেই চাকুরি করি। চাকুরির কারণে দুইজনকে ব্যস্ত থাকতে হয়। বাসায় আসার পর আমরা অনেক মা বাবা আছি যারা ফোন নিয়ে বসে থাকি অবসর সময় কাটানোর জন্য। একটা সময় ছিল যখন আমাদের বাসায় অভ্যন্তরীণ খেলাধুলার ব্যাবস্থা ছিল। কিন্তু এখন ফেসবুক এবং অন্যান্য সোশ্যাল মিডিয়ার কারণে সেই খেলাগুলো হারিয়ে যেতে বসেছে। আরেকটা বিষয় আমি খুব কাছ থেকে খেয়াল করেছি। আমি মোবাইল হাতে নিয়েছি মাস্টার্স পড়ার সময়। আর এখন আমার ছেলেমেয়েটি দোলনা থেকে মোবাইল হাতে নিয়ে বড় হয়। মোবাইল হাতে না থাকলে অনেক শিশু ভাত খাওয়া পর্যন্ত বন্ধ করে দেয়। শিশুটির কান্না থামানোর জন্য স্মার্ট ফোনটি তার শিশুর হাতে তুলে দিচ্ছে। যারা ধূমপান করেন তারা যেমন ধূমপান না করলে মনে হয় কাজটি ঠিকমত করতে পারছেনা তেমনি একজন শিশু মোবাইল ছাড়া ভাত খেতে পারেনা। শিশুটি মোবাইল নেশা নিয়েই বড় হয়। অনেক শিশুকে দেখা যায় পড়তে বসেছে। অথচ পড়ার টেবিলে তার মন নেয়। মন রয়েছে বাবার পকেটের মোবাইলের দিকে।
শিশু থেকে শুরু করে আবাল বৃদ্ধ পর্যন্ত অনেকেই অপ্রয়োজনীয় ইন্টারনেট ব্যবহারে আমরা অভ্যস্ত হয়ে যাচ্ছি। যে সময় আমরা সৃজনশীল অনেক কাজ করতে পারতাম ঠিক সে সময় আমরা বৃথা সময় নষ্ট করে আমাদের আগামী প্রজন্মকে কিছু কিছু ক্ষেত্রে নষ্ট করার প্রতিযোগিতায় নেমেছি। মাত্রাতিরিক্ত কিছুই আমাদের জন্য শুভ হবেনা। আমাদের প্রিয় ছাত্রছাত্রী, ভাইবোনদের প্রতি প্রত্যাশা থাকবে আমরা নিজের লেখাপড়া ঠিকমত করব। যেহেতু বর্তমান সময়ের সাথে আমাদের তাল মিলিয়ে চলতে হবে সেহেতু ভেবেচিন্তে আমরা এগিয়ে যাব। প্রয়োজনের বাইরে আমরা মোবাইল ফোন ব্যাবহার করবনা। কর্মজীবি অবিভাবকদের প্রতি আমি অনুরোধ জানাব আপনারা আপনাদের ছেলেমেয়েদের পর্যাপ্ত সময় দেওয়ার চেষ্টা করুন। ভালো ভালো বইয়ের সাথে আমরা আমাদের ছেলেমেয়েদের পরিচয় করিয়ে দিতে পারি। শিশুরা বেড়ে উঠুক পারবারিক বন্ধনে আর আমার তরুণ সমাজ এই ডিজিটাল যুগে বেড়ে উঠুক নব সৃষ্টির নব আনন্দ নিয়ে। লেখক : প্রাবন্ধিক

পূর্ববর্তী নিবন্ধযেখানে সেখানে প্রচারপত্র লাগানো থেকে বিরত থাকতে হবে
পরবর্তী নিবন্ধমানসিক প্রসন্নতা আমাদের প্রাজ্ঞতার শিক্ষা দেয়