সন্তানদের উচিত মা-বাবা ও গুরুজনদের মান্য করা

শরণংকর বড়ুয়া | বুধবার , ১৪ আগস্ট, ২০২৪ at ৭:১৯ পূর্বাহ্ণ

বতর্মানে এমন সময় এসেছে বা চলছে অধিকাংশ সন্তান মা বাবার অবাধ্য হয়ে পড়েছে। মা বাবা সন্তানদের ভালো উপদেশ দিলে তা গ্রহণ করতে চায় না। নিয়মিত পড়াশুনার কথা বললে কথা শুনে না। ধর্মীয় রীতি পালন করতে বললে অনীহা দেখায়। সারা দিনরাত জেগে মোবাইল নিয়ে ব্যস্ত থাকে। মোবাইল এখন ছোট বড় সকলের কাছে মানসিক ক্যান্সারে রূপ নিয়েছে। জীবন গড়া নিয়ে অমনোযোগ। সন্ধ্যায় ছাত্রছাত্রীদের লেখা পড়ার সময়, কিন্তু ঐ সময় ঘরের বাইরে ছেলেদের আড্ডা মারতে দেখা যায়। রাস্তা ঘাটে চায়ের দোকানে বা নির্জন কোনো জায়গায়। মোবাইলে টাকা দিয়ে গেম খেলে। সেই সময় ছোট বড় কোনো পার্থক্য থাকে না, কাণ্ডজ্ঞানহীন হয়ে পড়ে। একটি সত্য ঘটনা বলিএক জায়গায় প্রতিদিন সন্ধ্যায় কিছু ছেলেরা আড্ডা দেয়, তাদের সব কথাবার্তা এক বয়ষ্ক( ৯০) উপরে গুরুজন শুনেন কারণ তিনি কিছু দূরে প্রতিদিন চেয়ারে বসে সন্ধ্যাকালীন সময়টা পার করেন। ছেলেদের অশুভনীয় কার্যকলাপ লক্ষ্য করেন। একদিন তিনি কাছে গিয়ে বললেন তোমাদের স্কুল কলেজ আছে এই সময় পড়াশুনার দরকার। প্রতিদিন তোমরা মোবাইল আর আড্ডায় ব্যস্ত থাক, তোমাদের ভবিষ্যৎ আছে সময় নষ্ট না করে জীবনটা কেন শেষ করে দিচ্ছো। তোমাদের মা বাবারা কিছু বলে না। গুরুজনের কথা তাদের কারো কানেই গেল না। এক ছেলে উত্তর দিল, পড়ে কী হবে। ‘বৌ ছাড়তে পারবো মোবাইল ছাড়তে পারবো না’। কী অদ্ভুত উত্তর! উত্তর পেয়ে গুরুজন হতভম্ব হয়ে গেল, উনার সম্মানে লাগলো। লজ্জীত হয় নিজের জায়গায় ফিরে গেলেন। এই হচ্ছে এখনকার ছেলেদের শিক্ষা আচার আচরণ। একটি বারও ভাবে না মা বাবার সামাজিকতা ও সম্মানের কথা। একদিন আমাকে পেয়ে গুরুজন দুঃখ করে কথাটা বললেন। আজকাল সন্তানেরা গুরুজন বা মা বাবাকে সম্মান করে না। তাই গুরুজনরাই নিজের সম্মান নিয়ে চলতে চেষ্টা করে। কথায় কথায় বড়জনদের সাথে উচ্চৈস্বরে কথা বলতে শুনি। মা বাবাকে বলে তোমারা বুঝবে না। তোমাদের সেই আগের যুগ নেই এখন স্মার্ট যুগ। এই শব্দগুলো মা বাবার জন্য কতটুকু অপমানজনক তা সন্তানরা বুঝে না। এখন স্মার্ট প্রজন্ম সন্তানদের কথা মা বাবাকে শুনতে হচ্ছে। কী আর করা যায়, আসলে মা বাবারা কখনই বুঝে না। বুঝে কম ত্যাগ করে বেশি। সন্তানদের ভবিষ্যৎ গড়ার জন্য জীবন শেষ করে দেয়। পেট ভরে খাওয়ার জন্য, জ্ঞানী হওয়ার জন্য, মানুষের মত মানুষ হাওয়ার জন্য কত না ত্যাগ করে। কখনো কি শুনেছেন পশুর বাচ্চাকে পশু করার জন্য কষ্ট করতে বা ত্যাগ করতে। কিন্তু মানুষের বাচ্চাকে মানুষ করার জন্য জীবনের শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত মা বাবা চেষ্টা করে যায়। কখনো প্রতিদান চায় না। সন্তানদের সুন্দর জীবনের কথা ভেবে দুঃখ বেদনা বুকে নিয়ে চোখের জলে রাত জাগে। তা কি সন্তানরা জানে? এই আধুনিক যুগের সন্তানরা কি কখনো বুঝবে?

পূর্ববর্তী নিবন্ধরাজনৈতিক ও ধর্মীয় বিভেদ সৃষ্টিকারীদের কঠোর শাস্তি দেওয়া হোক
পরবর্তী নিবন্ধআমাদের সন্তানেরা আমাদের সূর্য সন্তানদের মর্যাদা দিতে জানে