হাটহাজারী মির্জাপুর ইউনিয়নের সরকারহাট বাজারের আবর্জনা ফেলা হচ্ছে সড়কের পাশেই। বাজারের উত্তর পশ্চিমে চট্টগ্রাম–খাগড়াছড়ি সড়কের পাশে আবর্জনার স্তূপের কারণে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন পথচারীরা। স্থানীয়দের অভিযোগ, সড়কের পাশে বাজারের আবর্জনা ফেলে পরিবেশ দূষণ করা হলেও যথাযত কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না।
গত সোমবার বিকালে সরেজমিনে দেখা গেছে, উল্লেখিত স্থানে মির্জাপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের উত্তর–পশ্চিম পাশে আবর্জনার বিশাল স্তূপ। এর দক্ষিণ–পশ্চিমে মির্জাপুর উচ্চ বিদ্যালয় জামে মসজিদ এবং পশ্চিমে মির্জাপুর জগন্নাথ আশ্রম মন্দির। আবর্জনার দুর্গন্ধে মসজিদের মুসল্লি, আশ্রমের বাসিন্দা, বিদ্যালয়ের শিক্ষক–শিক্ষার্থী, ব্যবসায়ী ও পথচারীদের চলাচলে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। দিন যত যাচ্ছে আবর্জনার এই স্তূপ বাড়ছে। বাজারের নষ্ট হওয়া শাক–সবজি, হোটেলের পচা বাসি খাবার, জবাই করা মুরগি উচ্ছিষ্ট–সহ পচনশীল আবর্জনা ফেলার কারণে তীব্র দুর্গন্ধের সৃষ্টি হচ্ছে এবং দূষিত হচ্ছে ওই এলাকার পরিবেশও। এতে ঝুঁকির মধ্যে পড়ছে এলাকার পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্য। এছাড়া আবর্জনার স্তূপ থেকে পলিথিন, প্লাস্টিক নালা নর্দমায় আটকে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি করে বলে জানান স্থানীয়রা।
মির্জাপুর উচ্চ বিদ্যালয় জামে মসজিদের মুসল্লি নাহিদুল ইসলাম, সাইফুল হক, মামুন আকবর, বশির মিয়া, ইলিয়াস, বেলাল, মোবারকসহ অনেকেই জানান, এই ময়লা আবর্জনার দুর্গন্ধের কারণে নামাজ পড়তে খুবই কষ্ট হয়। খুব বিশ্রি একটা পরিস্থিতির মধ্যে আছি।
মির্জাপুর জগন্নাথ আশ্রমের সাধারণ সম্পাদক উত্তম কুমার দাস, মন্দিরের পূজারী রুপম, সূমনসহ অনেকে জানান, আশ্রমের ও ব্যক্তি মালিকানা জায়গায় অনেকটা জোর করে বাজারের সব ময়লা আবর্জনা ফেলা হচ্ছে। এ সব ময়লা আবর্জনার দুর্গন্ধে পূজা করতে আসা পূজারীদের নিশ্বাঃস বন্ধ হয়ে যাবার উপক্রম। এ বিষয়ে বাজার সমিতি ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে জানিয়েও কোন ফল পায়নি।
মির্জাপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক মো. একরামুল হক আজাদীকে জানান, স্কুলের পাশে বাজারের ফেলা ময়লা আবর্জনার স্তূপ থেকে ছড়ানো দুর্গন্ধে বিদ্যালয়ের পশ্চিম পাশের ক্লাস রুমগুলোতে ক্লাস করতে খুবই কষ্ট হয়। আমি জনস্বার্থে যত দ্রুত সম্ভব ওখানকার আবর্জনাগুলো সরিয়ে সকলকে এ দুর্ভোগ থেকে মুক্তি দিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করছি।
আবর্জনার স্তূপের আশে পাশের একাধিক দোকানদার জানান, এ দুর্ভোগের কারণে এখান থেকে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে হয়তো নতুন কোনো জায়গায় গিয়ে ব্যবসা চালু করতে হবে। এখানে কাস্টমার দাঁড়াতে চান না, দুর্গন্ধের কারনে দাঁড়াতে পারেন না। তারা এ দুর্ভোগ থেকে মুক্তি দিতে যথাযত কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
সরকারহাট বাজার ইজারাদার মহিউদ্দীনের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, আমরা কয়েকজন মিলে চলতি বছর সরকারহাট বাজারটি ইজারা নিয়েছি। বাজারের ময়লা আবর্জনা ফেলার নিদিষ্ট কোন জায়গা নেই বলে বাধ্য হয়ে ময়লা ওখানে ফেলতে হচ্ছে। আমরা ময়লা আবর্জনা ফেলার নিদিষ্ট একটা স্থান চাই। সরকারহাট বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আকবর সওদাগর জানান, খুবই নাজুক অবস্থা। কী করবো, স্থানীয় চেয়ারম্যান থেকে শুরু করে বিভিন্ন জায়গায় জানানোর পরও আজ পর্যন্ত কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। হাটহাজারী উপজলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবিএম মশিউজ্জামান আজাদীকে জানান, এ ব্যাপারে আমি খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছি।