বাঁশখালীর গুনাগরি পাহাড়কে পূর্বাবস্থায় ফিরিয়ে আনা ও পাহাড় কাটার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের নিকট থেকে খরচ আদায়ে ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় পাট ও বস্ত্র মন্ত্রণালয়ের সচিব আবদুল মান্নানসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার রুল জারি করেছেন হাই কোর্ট। গতকাল রোববার বিষয়টি আজাদীকে জানিয়েছেন রিটকারী আইনজীবী হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের চেয়ারম্যান মনজিল মোরসেদ। তিনি জানান, ৩০ জুন আদালত অবমাননার এক আবেদনের ওপর শুনানি শেষে বিচারপতি মামনুন রহমান ও বিচারপতি খোন্দকার দিলীরুজ্জামানের আদালত এ রুল জারি করেন। আগামী ৪ সপ্তাহের মধ্যে সংশ্লিষ্টদের রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে। আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ।
রুল জারি হওয়া অন্যরা হলেন চট্টগ্রামের বর্তমান জেলা প্রশাসক মো. মমিনুর রহমান, চট্টগ্রামের সাবেক পুলিশ সুপার একেএম হাফিজ আখতার, বর্তমান পুলিশ সুপার এস এম রাশিদুল হক, বাঁশখালীর সাবেক ইউএনও সাব্বির ইকবাল (বর্তমানে চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী হিসেবে কর্মরত), বাঁশখালীর বর্তমান ইউএনও সাইদুজ্জামান চৌধুরী, বাঁশখালী থানার সাবেক ওসি আবদুল মালেক ও মো. সাজাহান খান এবং বর্তমান ওসি শফিউল কবির। পাট ও বস্ত্র মন্ত্রণালয়ের সচিব আবদুল মান্নান ঘটনার সময় চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক ছিলেন।
অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ বলেন, বাঁশখালী উপজেলার গুনাগরিতে ২০১১ সালে স্থানীয় কতিপয় প্রভাবশালী সরকারি পাহাড় কেটে মাটি বিক্রি করে লাখ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন। পাহাড় ধ্বংস করেছেন। এ নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে জনস্বার্থে আমাদের সংগঠন রিট করে। পরবর্তীতে ২০১৮ সালের ৭ মে এ রিটের রুলের শুনানি করে বিচারপতি জিনাত আরা ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারূল হক আকন্দের দ্বৈত বেঞ্চ রুলটি যথাযথ ঘোষণা করে কয়েকটি নির্দেশনাসহ রায় ঘোষণা করেন।
হাই কোর্টের ওই নির্দেশনায় ছিল, বিশেষজ্ঞ মতামত গ্রহণ করে আগামী এক বছরের মধ্যে গুনাগরি পাহাড়কে পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে আনা, সরকারের নিকট হতে এ ব্যাপারে কাজের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ সংগ্রহ করা। পাহাড়কে পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে যে অর্থ খরচ হবে, তা যারা মাটি বিক্রি করার জন্য দায়ী তাদের নিকট হতে ক্ষতিপূরণ হিসেবে আদায় করা। যেসব সরকারি অফিসার দায়িত্ব পালনের সময় তাদের নিষ্ক্রিয়তায় পাহাড় ধ্বংস করা হয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সরকারকে নির্দেশ দেওয়া হয়। ওই রায় অনুসারে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনে ওই সময়ে এবং বর্তমানে দায়িত্ব পালনকারী ৯ জন সরকারি অফিসারের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ দায়ের করা হয়। ওই অভিযোগের ভিত্তিতে নতুন করে আদালত অবমাননার রুল জারি করা হয়।