চট্টগ্রাম কাস্টমসে অনলাইন মাধ্যমে (ই-পেমেন্ট) শুল্ক কর পরিশোধ বাধ্যতামূলক করা হয় পহেলা জানুয়ারি। এদিন শনিবার সরকারি ছুটির দিন হওয়ায় পণ্য খালাসে স্বাভাবিকভাবে চাপ কম ছিল। তবে গতকাল পণ্য খালাসে ই-পেমেন্ট করতে গিয়ে ভোগান্তি পড়েছেন বলে অভিযোগ করেন ব্যবসায়ীরা। বরাবরের মতোই অনেক ব্যবসায়ী সকালে ই-পেমেন্ট করে বিকেলেও শুল্ক পরিশোধের কনফার্মেশন ম্যাসেজ পাননি। তবে কাস্টমস কর্তারা বলছেন, ই-পেমেন্টের জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সার্ভারের সাথে ব্যাংকের সার্ভার সংযুক্ত থাকে। কোনো একটি সার্ভারে ত্রুটি দেখা দিলে সমস্যা হতে পারে। বিষয়টি পুরোপুরি টেকনিক্যাল। অধিকাংশ ক্ষেত্রে কোনো সমস্যা হয়নি বলে দাবি করেন তারা। তবে কিছু কিছু পেমেন্টে সমস্যার কথা জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
আমদানি-রপ্তানি সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ইউজার আইডি দিয়ে আরটিজিএস (রিয়েলটাইম গ্রস সেটেলমেন্ট) গেটওয়ের মাধ্যমে শুল্ক পরিশোধ করা বিশ্বব্যাপী একটি স্বীকৃত পন্থা। গত বছরের জুলাই থেকে এটি পরীক্ষামূলকভাবে চালু করা হয় কেবল ২ লাখ টাকার ওপরের শুল্ক পরিশোধের ক্ষেত্রে। তখনও সমস্যা ছিল। কিন্তু সেই সমস্যা সমাধান না করে সব অংকের শুল্ক পরিশোধ অনলাইনে বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। যার খেসারত দিতে হচ্ছে ব্যবসায়ীদের।
জানা গেছে, বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) নির্দেশনা মোতাবেক বাণিজ্য সহজীকরণের অংশ হিসাবে এনবিআর গত ২০১৭ সাল থেকে ই-পেমেন্ট সিস্টেম চালু করে। এ পদ্ধতিতে আমদানিকারক বা তার মনোনীত সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট নিজস্ব ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের মাধ্যমে সরকারি ট্রেজারিতে শুল্ক-করের অর্থ পরিশোধ করতে পারেন।
ই-পেমেন্টে ভোগান্তির বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম কাস্টমস সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের যুগ্ম সম্পাদক গোলাম রাব্বানি রিগ্যান বিলু দৈনিক আজাদীকে বলেন, শতভাগ ই-পেমেন্ট চালু হওয়ার প্রথম চাপ কম ছিল। তবে আজকে (গতকাল) ১৫-২০ শতাংশ ব্যবসায়ীকে ই-পেমেন্ট করতে গিয়ে ভোগান্তির শিকার হতে হয়েছে। শতকরা হিসেবে বেশি না হলেও যার একটা চালানের শুল্ক সমস্যা হয়েছে তার জন্য তো শতভাগ। ই-পেমেন্ট মানে হলো আমি এখন অনলাইনে পেমেন্ট করলাম, পেমেন্ট করার ৫-১০ মিনিটের মধ্যে আমার কাছে শুল্ক পরিশোধের ম্যাসেজ আসবে। তারপর আমরা নির্বিঘ্নে পণ্য খালাস করে নিয়ে যাবো। কিন্তু এখানে এমন হচ্ছে, ই-পেমেন্ট করার পর ব্যাংক থেকে টাকা কেটে নিচ্ছে, কিন্তু শুল্ক পরিশোধের কনফার্মেশন ম্যাসেজ আসছে না।
জানতে চাইলে চট্টগ্রাম কাস্টমসের সিস্টেম এনালিস্ট আহসান হাবীব সুমন দৈনিক আজাদীকে বলেন, ই-পেমেন্টে কিছু কিছু টেকনিক্যাল সমস্যা হতে পারে। তবে কোনোটাই দীর্ঘস্থায়ী নয়। হয়তো একসাথে অনেকে পেমেন্ট করছেন তখন সার্ভারে জট লাগতে পারে। তবে নির্দিষ্ট করে বলা যাবে না, এটা কি ব্যাংকের সার্ভারের সমস্যা নাকি এনবিআরের সার্ভারের সমস্যা।