রাষ্ট্র সংস্কারে আসা সুপারিশগুলো নিয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ ঠিক করতে কমিশনগুলোকে আরও এক মাস সময় দেওয়া হবে বলেছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। তিনি বলেন, এক মাসের মধ্যে আমরা একটা রোডম্যাপ তৈরি করতে সক্ষম হবো বলে মনে করি। গতকাল বুধবার চারটি সংস্কার কমিশন সুনির্দিষ্ট সুপারিশ রেখে প্রধান উপদেষ্টার কাছে প্রতিবেদন পেশ করার পর বিকালে এ বিষয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে আসেন রিজওয়ানা হাসান। প্রধান উপদেষ্টার দপ্তরের এই সংবাদ সম্মেলনে তিনি ছাড়াও উপদেষ্টা আসিফ নজরুল, আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ও প্রেস সচিব শফিকুল আলম উপস্থিত ছিলেন। খবর বিডিনিউজের।
উপদেষ্টা রিজওয়ানা বলেন, এই রিপোর্টগুলো নিয়ে কমিশন প্রধানেরা বসে পরবর্তী পদক্ষেপ ঠিক করবেন। কোথায় কোথায় প্রাধান্য দেওয়া হবে, সেই জায়গাগুলো কমিশন প্রধানরা ঠিক করবেন। এজন্য আগামীকালকেই একটা প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে ছয়টি কমিশনের মেয়াদ আরও একমাস বাড়িয়ে দেওয়া হবে। ৩১ জানুয়ারির মধ্যে ছয়টি কমিশনের পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট প্রকাশ করা হবে বলেছেন তিনি। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে মতৈক্যের ভিত্তিতে সরকার কমিশনের সুপারিশগুলো বাস্তবায়নে হাত দেবে বলেছেন এই উপদেষ্টা। রিজওয়ানা হাসান বলেন, যেহেতু কমিশন প্রধানরা স্বাধীনভাবে প্রতিবেদন তৈরি করেছেন, এখন সমন্বয়ের কাজটিও তারা স্বাধীনভাবে করবেন। কোন প্রস্তাবগুলোর দিকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হবে অর্থাৎ অগ্রাধিকার কী হবে, সেটা ঠিক করা হবে। একদিকে রাজনৈতিক দলগুলোর কিছু দাবি আছে, অন্যদিকে জনগণের কিছু দাবি আছে, আবার দুই পক্ষের কিছু যৌথ দাবিও আছে। একমাসের মধ্যে আমরা একটা রোডম্যাপ তৈরি করতে সক্ষম হবো বলে মনে করি। সরকারের ম্যান্ডেট নিয়ে করা এক প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা রিজওয়ানা বলেন, প্রেক্ষাপট যেন আমরা ভুলে না যাই, একটা গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে কিন্তু এই সংস্কার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এখন যদি আমাদেরকে একটা আইনি কাঠামো ধরে কিছু করতে বলা হয়, সংবিধানের অনুচ্ছেদগুলো দেখিয়ে যদি সেই অনুযায়ী কাজ করতে বলা হয়, তখন গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষাটা এনডোর্স করা কঠিন হবে।
তিনি বলেন, আমরা গণঅভুত্থানকেই হৃদয়ে ধারণ করেছি এবং সব রাজনৈতিক দলের মতামতের ভিত্তিতে এই সংস্কার প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলোর মতামতের প্রতিফলন হিসেবেই এই রিপোর্ট তৈরি করা হয়েছে। প্রস্তাবগুলো থেকে যতটুকু তারা প্রয়োজন মনে করছেন ততটুকু নিয়েছেন। কিন্তু সংস্কার কমিশনগুলোর প্রতিবেদনই শেষ করা নয়। এটা নিয়ে আলোচনার আরও প্রক্রিয়া রয়েছে। প্রয়োজনে চার ধাপে বা তারও বেশি ধাপে আলোচনা করা হবে।
এর পরের কমিশনটা হবে পলিটিক্যাল কনসেনসাসের কমিশন। প্রধান উপদেষ্টা নিজেই সেই কমিশনের নেতৃত্বে থাকবেন। যা করা হবে, রাজনৈতিক মতৈক্যের ভিত্তিতেই হবে। সংস্কারের প্রয়োজন আছে বলেই রাজনৈতিক দলগুলো তাদের প্রস্তাব দিয়েছেন, বলেন তিনি।