সংস্কার নিশ্চিত হলে আগামীকালও নির্বাচন হতে পারে : হাসনাত

রাজপথের লড়াকু রুমিন আপাকে সাইবার বুলিং করা হচ্ছে

| বুধবার , ২৭ আগস্ট, ২০২৫ at ৪:৪৮ পূর্বাহ্ণ

নির্বাচনের সময়সূচি নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্ব তৈরি করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ। সংস্কার বাস্তবায়নের বিষয়টি নিশ্চিত হলে নির্বাচন আগামীকালও হতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন তিনি। গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে মানবাধিকার সংগঠন ‘মায়ের ডাক’ আয়োজিত আলোকচিত্র প্রদর্শনীতে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। খবর বাংলানিউজের।

হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, আমাদের কাছে নির্বাচনের সময় মুখ্য নয়; সেটা ফেব্রুয়ারিতে হতে পারে, ডিসেম্বরে হতে পারে কিংবা প্রয়োজনে আগামীকালও হতে পারেকোনো সমস্যা নেই। কিন্তু নির্বাচন হওয়ার আগে সংস্কার বাস্তবায়নের সুনির্দিষ্ট সিদ্ধান্ত ও আইনি কাঠামো নিশ্চিত করতে হবে।

জাতীয় নাগরিক পার্টির এ নেতা বলেন, সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবনা কীভাবে বাস্তবায়িত হবে সে বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। সংস্কার বাস্তবায়ন ও বিচার প্রক্রিয়ার সুস্পষ্ট বার্তা ছাড়া নির্বাচনের দিকে যাওয়া মানে জাতিকে আবারও অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দেওয়া। আমরা ৯০ ও ৭১ সালের মতো ব্যর্থতার পুনরাবৃত্তি চাই না।

তিনি বলেন, কে জিতবে, আর কে হারবেএটা জনগণ নির্ধারণ করবে। আগে থেকে নির্ধারণ করে দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। তিনি দাবি করেন, প্রতিষ্ঠানগুলো জনগণমুখী না হয়ে উল্টো জনগণের রোষের কারণ হয়ে উঠেছে। আমরা চাই রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠানগুলো জনগণের জন্য কাজ করুক। প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনুসকে অবশ্যই একটি সুস্পষ্ট রোডম্যাপ ও নীতিমালা প্রকাশ করতে হবে।

গুম কমিশন প্রসঙ্গে হাসনাত আবদুল্লাহ অভিযোগ করে বলেন, গুম কমিশনকে স্বাধীনভাবে কাজ করতে দেওয়া হচ্ছে না। রাষ্ট্রীয় এজেন্সির চাপের কারণে তারা কার্যকর হতে পারছে না। নিখোঁজদের ফিরে পাওয়ার দাবিতে হাসনাত বলেন, হাসিনা পালিয়ে গেলেও আমরা মুক্ত হইনি। এখনো বহু মানুষ গুম হয়ে নিখোঁজ রয়েছেন। রাষ্ট্র রক্ষকের পরিবর্তে ভক্ষকের ভূমিকায় পরিণত হয়েছে। গুমের জন্য যারা দায়ী, তাদের অবশ্যই বিচারের আওতায় আনতে হবে।

গণতন্ত্রে মতপার্থক্য স্বাভাবিক উল্লেখ করে তিনি বলেন, ভিন্নমত প্রকাশই গণতন্ত্রের শক্তি। অথচ দেশে ভিন্নমত দমন, ব্যক্তিগত চরিত্র হনন এবং রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে হেয় করার প্রবণতা বেড়েছে। এটি গণতন্ত্রের শত্রু। আওয়ামী লীগকে আর ফ্যাসিবাদী চর্চার সুযোগ দেওয়া যাবে না।

রুমিন ফারহানার প্রতি সাইবার বুলিংয়ের ঘটনা তুলে ধরে হাসনাত বলেন, রাজনৈতিক মতপার্থক্যের কারণে কোনো নারীকে নিয়ে কুৎসা রটানো অনভিপ্রেত। এই সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। তিনি বলেন, আমি দেখতে পাচ্ছি দীর্ঘদিন রাজপথে লড়াই করা আমাদের রুমিন আপাকে সাইবার বুলিং করা হচ্ছে। বিভিন্নভাবে ওনাকে নিয়ে বাজে কমেন্ট করা হচ্ছে। আমি আহ্বান জানাবো, এ ধরনের চর্চা থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে। কোনো রাজনৈতিক মতপার্থক্যের কারণে ব্যক্তিগত আক্রমণ করা, নারীকে নিয়ে কোনো বাজে মন্তব্য করা, শুধু মতপার্থক্যের কারণে সিলেক্টিভভাবে কাউকে আক্রমণ করা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।

তিনি বলেন, আমাদের মতপার্থক্য থাকবে, ভিন্ন মত থাকবে এবং সেগুলো গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় হবে। আমরা ফ্যাসিবাদবিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো ছোট ছোট পার্থক্য ভুলে গিয়ে একটা বেটার বাংলাদেশ গড়ে তুলবো।

পূর্ববর্তী নিবন্ধধান শুকাতে সড়ক ব্যবহার
পরবর্তী নিবন্ধজামায়াতের সঙ্গে জোটের সম্ভাবনা নেই : সালাহউদ্দিন