বেড়িবাঁধ সংস্কারের দুই বছর না পেরোতেই পুনরায় ভাঙনের কবলে সীতাকুণ্ডের সোনাইছড়ি ইউনিয়নের ঘোড়ামাড়া সাগর উপকূলীয় বেড়িবাঁধ। অব্যাহত ভাঙনের মধ্যে থাকা বেড়িবাঁধটি দ্রুত সংস্কারের উদ্যোগ না নেয়া হলে তা অচিরেই বিলিন হয়ে যাবে বলে শঙ্কা স্থানীয়দের। তবে বেড়িবাঁধটি সংস্কারে জন্য কর্তৃপক্ষের নিকট বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) কর্মকর্তারা।
পাউবো জানায়, ২০২১ সালে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান হুইজকিড ইন্টারন্যাশনাল ভাঙনের কবলে পড়া ১৮০ মিটারের বেড়িবাঁধের সংস্কার কাজ শেষে তাদের বুঝিয়ে দেয়। সে সময় বেড়িবাঁধের এ অংশটি সংস্কারে ব্যয় হয় ১৫ লাখ টাকা।
স্থানীয়রা জানান, ২০০৪ সালে সীতাকুণ্ডের সোনাইছড়ি ইউনিয়নের ঘোড়ামরা অংশের বেড়িবাঁধ সাগর উপকূলে বিলিন হয়ে যায়। এর ১৪ বছর পর ২০২১ সালে ভাঙা ১৮০ মিটার বেড়িবাঁধ সংস্কার করে পাউবো। কিন্তু সংস্কার কাজে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের কারণে বাঁধের টেকসই সংস্কার হয়নি। ফলে সংস্কার কাজের দুবছর না পেরোতেই ফের ভাঙনের কবলে পড়েছে বেড়িবাঁধটি। বর্তমানে জোয়ারের সাথে অল্প অল্প করে ভাঙছে বেড়িবাঁধটি। ক্রমাগত ভাঙতে থাকা বেড়িবাঁধটি সংস্কার কাজের মাধ্যমে ঠেকাতে না পারলে অচিরেই বিলিন হয়ে যাবে বলেও জানান তারা।
সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, ফের ভাঙনের কবলে পড়া ১৮০ মিটার বেড়িবাঁধের বাইরের অংশে মাটি আটকে রাখতে বালি ভর্তি জিও ব্যাগ দেওয়া হয়েছে। তবে ক্রমাগত আসা জোয়ারের ঢেউয়ের তোড়ে তার অধিকাংশই সরে গেছে। অধিকাংশ স্থানে জোয়ারের পানিতে মাটি সরে গিয়ে ছোট–বড় ভাঙনের সৃষ্টি হয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা সুবল জলদাস বলেন, ভাঙা বেড়িবাঁধটি সংস্কারের আগে দিনে দুবার তাদের বাড়িঘর জোয়ারের পানিতে ডুবে যেত। এভাবে টানা ১৪ বছর তাদের অবর্ণনীয় দুর্ভোগ পোহাতে হয়। ২০২২ সালে বেড়িবাঁধের ভাঙা অংশটি মেরামতের পর দীর্ঘদিনের দুর্ভোগের অবসান ঘটে। কিন্তু সংস্কারের দুবছর না পেরোতেই বেড়িবাঁধটি ফের ভাঙনের কবলে পড়ায় আবারও দুর্ভোগের শঙ্কায় রয়েছেন তারা।
রুহুল আমীন বলেন, সংস্কারের আগে জোয়ারের পানিতে আশপাশের পাঁচ গ্রাম প্লাবিত হতো। লবণাক্ত পানির কারণে চাষাবাদ ছাড়া পরিত্যক্ত পড়ে থাকতো শত শত একর জমি। তবে দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর বেড়িবাঁধটি সংস্কার হলে চাষাবাদে গতিশীলতা ফিরে আসার পাশাপাশি স্বস্তি ফিরে পেয়েছিল উপকূলীয় লোকজন। কিন্তু দুবছর না পেরোতেই বেড়িবাঁধটিতে পুনরায় ভাঙন দেখা দেওয়ায় আবারো আতঙ্কে ভুগছেন তারা। ক্রমাগত ভাঙতে থাকা বেড়িবাঁধের ভাঙন ঠেকাতে দ্রুত সংস্কারের দাবি জানান তিনি।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ–সহকারী প্রকৌশলী এস এম তারেক বলেন, ফের ভাঙনের কবলে পড়া বেড়িবাঁধটি সংস্কারে সাত লাখ টাকা বরাদ্দ চেয়ে আবেদন করেছেন তারা। বরাদ্দ পেলে সহসাই সংস্কার কাজ শুরু করা হবে।