আমরা একটা ছেলের ইনকামকে দেখি কিন্তু সেই ছেলের পরিবারের জন্য সেক্রিফাইজকে দেখি না! আমরা একটা ছেলে সন্তান চাই বংশ রক্ষার জন্য। কিন্তু সেই ছেলেকে বড় করতে করতে দায়িত্বের পাহাড় চাপিয়ে দেয়াকে দেখি না! একটা ছেলে… মা, বাবা, ভাই, বোন, স্ত্রী আর সন্তানের বিশাল পাহাড় সমান বোঝাকে মুখ বুঝে টানতে থাকে সেটা তার দায়িত্ব কর্তব্য ভেবে। কিন্তু আমরা কেউ তার এই জাহাজ টানার পরিশ্রমকে দেখি না, কারণ সে ছেলে! আর এটাই তার নিজেকে প্রকাশ করার অহংকার। একটা ছেলে সেও যে মানুষ, তারও যে নিজের মতো বাঁচার ইচ্ছে থাকতে পারে ওইটা আমরা বা আমাদের সমাজ দেখে না! তারও যে প্রেম, ভালোবাসা, শখ, বাঁচার সব ইচ্ছা থাকতে পারে সেটাকে বুঝি না! কিন্তু সব ইচ্ছাকে বিসর্জন দেয়া নামক সেক্রিফাইজকে পুরুষত্বের অহংকার ভাবি। একটা জমির উপর কতোটা ফসল ফলেছে কিংবা কতোটা সুন্দর দালান উঠেছে সেটাকে দেখি কিন্তু সেই জমির উপর কতোটা পরিমাণ ধকল গেছে সেটাকে দেখি না। আমরা সৌন্দর্য দেখি কিন্তু ভিত্তিকে দেখি না। তেমনি একটা মেয়েকে বড় করতে করতে তাকে শেখাই কিভাবে পরনির্ভরশীল হতে হবে! কিভাবে একটা লক্ষী মেয়ে হতে হবে! মেয়ে মানে তাকে বাবার বাড়িতে বড় হলেও শ্বশুর বাড়িকে নিজের করতে হবে। তার স্বামীর উপর নির্ভর হতে হবে। সেই যেমনই গুণের অধিকারী হোক কিংবা নিজের পরিচয় বহন করার অধিকারী হোক তাকে স্বামীর নাম আর পরিচয়ের শো অফ করতে হবে। কারণ মেয়েদের সকল যোগ্যতা হীন হয়ে যায় বাপ আর স্বামীর পরিচয়ের কাছে।
এভাবে আমরা একটা মেয়েকে সামাজিক কৃতী সন্তানের লোগোকে এচিভমেন্ট ভেবে যেমন পাহাড় সমান বোঝা চাপিয়ে দেই ঠিক তেমনই একটা ছেলের উপর সংসারের ইনকামের বোঝাকে বহন করতে পারাকে পুরুষত্বের অহংকার হিসেবে দায়িত্ব চাপিয়ে দেই আসলে আমাদের বাঙালি সেন্টিমেন্টালে সন্তান মানেই সেক্রিফাইজ করতে জানতে হবে, সে ছেলে হোক বা মেয়ে হোক! না হয় আমাদের চোখে তারা কুসন্তান হিসেবে পরিচয় পাবে!