সংসদ কার্যকরে বিলম্ব হলে অস্থিরতা বাড়বে : তারেক

| সোমবার , ২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ at ৮:০৩ পূর্বাহ্ণ

অন্তর্বর্তী সরকার তাদের লক্ষ্য থেকে কিছুটা হলেও বিচ্যুত হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। সরকারের বিভিন্ন ব্যক্তির বক্তব্যে বিভ্রান্তি তৈরি হচ্ছে এবং এতে মানুষ বিভিন্নভাবে বিভ্রান্ত হচ্ছেন বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

গতকাল রোববার ঢাকা বার জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এই মন্তব্য করেন। যত দ্রুত সম্ভব দেশকে স্থিতিশীল অবস্থায় আনা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারসহ প্রতিটি মানুষের মূল লক্ষ্য হওয়া উচিত বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, সারা পৃথিবীতে যেটি গ্রহণযোগ্য বিষয় যে, রাজনৈতিক অস্থিরতা বলুন বা রাজনৈতিক আলোচনা বলুন, রাজনৈতিক তর্কবিতর্ক বলুন সেটিকে সংসদের মধ্যে নিয়ে আসা। সংসদই হচ্ছে সবচেয়ে মূল জায়গা যেখানে আলোচনা, সিদ্ধান্ত যাই হোক না কেন সেটি সংসদের ভেতরে হয়ে থাকে। খবর বিডিনিউজের।

তারেক রহমান বলেন, আমরা একটি সংসদকে কার্যকর করতে দেরি করলে এই অস্থিরতা, এই তর্কবিতর্ক সবকিছু সংসদের বাইরে চারদিকে ছড়াতে থাকবে। সংসদের বাইরে যত বেশি এটি ছড়াবে ততই সব জায়গায় বিভিন্নভাবে অর্থনীতি থেকে শুরু করে, সামাজিক অবস্থা থেকে শুরু করে সকল জায়গায় অস্থিরতা দেখা দেবে, যা সামগ্রিকভাবে দেশকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে। লন্ডনে থাকা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেন, আমরা লক্ষ্য করছি যে, সরকারের বিভিন্ন ব্যক্তির কথাবার্তা থেকে আমাদের কাছে মনে হচ্ছে, তারা এবং বিভিন্ন ব্যক্তির আলোচনা থেকেও ফুটে উঠছে যে, তারা (অন্তর্বর্তীকালীন সরকার) সম্ভবত তাদের লক্ষ্য থেকে কিছুটা হলেও বিচ্যুত হচ্ছেন ক্ষেত্রে বিশেষে। বিভিন্ন ব্যক্তির বিভিন্ন স্টেটমেন্ট থেকে বিভিন্ন রকম কনফিউশন তৈরি হচ্ছে মানুষ বিভিন্নভাবে কনফিউজড হচ্ছে।

রাজনীতিতে যখন বিভ্রান্তি থাকবে তখন অস্থিরতা দেখা দেবে মন্তব্য করে তিনি বলেন, আমাদের এই অস্থিরতার কারণে দেশের প্রত্যেকটি মানুষ সমস্যার সম্মুখীন হবে। কারণ যখনই রাজনৈতিক অস্থিরতা থাকবে, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা যদি আমরা এনসিউর করতে না পারি, তাহলে আমরা যে যত সংস্কারই ঘোষণা করি না কেন, যে যত নীতি গ্রহণ করি না কেন, কোনোটাই সাকসেসফুল হবে না। তারেক মনে করেন, রাজনীতি অস্থির হলে তা অর্থীতিকে প্রভাব ফেলবে এবং অর্থনীতি প্রভাব ফেলবে সব কিছুতে।

যারা আইন পেশায় আছেন তাদের পেশায়ও রাজনৈতিক অস্থিরতার প্রভাব পড়বে তুলে ধরে তিনি বলেন, একজন ক্ষুদ্র মুদির দোকানদার বলি, একজন রিকশাচালক বলি, একজন সিএনজি চালক বলি, একজন মাঝারি ব্যবসায়ী বলি, যে কারো কথাই বলি না কেন, প্রত্যেকটি ক্ষেত্রে অ্যাফেক্ট করবে এবং প্রতিটি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

নির্বাচন হলে কি সব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবেকারো কারো এমন বক্তব্যের প্রসঙ্গ টেনে তারেক বলেন, নির্বাচন হলেই কি সব সমস্যা সমাধান হয়ে যাবে? সে কথাটি এভাবে না বলে আমরা চিন্তা করতে পারি, নির্বাচন হলে দেশে একটি স্থিতি অবস্থা আসবে। ধীরে ধীরে রিফর্মের কাজগুলো শুরু হবে, সমস্যাগুলোর তীব্রতা ধীরে ধীরে কমা শুরু করবে। নির্বাচন হলে সমস্যাগুলোর সমাধান কিভাবে করা যায় এটি দায়িত্বপ্রাপ্ত হবেন বিভিন্ন মানুষ, যখন দায়িত্বপ্রাপ্ত হবেন স্বাভাবিকভাবে তারা বসবেন, আলোচনা করবেন, তারা কাজ করবেন। একদিনে কোনো কিছুই হবে না। কিন্তু সমস্যা সমাধানের সম্ভাবনা শুরু হবে।

বিভিন্ন ব্যক্তি এবং সংবাদমাধ্যমে বিভিন্নজনের বক্তব্যের প্রসঙ্গ টেনে বিএনপির ভাপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, আমরা মনে করি, দেশের মানুষ যে সিদ্ধান্ত নিতে চায় সেই সিদ্ধান্তের সাথে একমত পোষণ করা এবং দেশের মানুষকে সিদ্ধান্ত নিতে সহযোগিতা করা, রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত নিতে তাদের সহযোগিতা করার ব্যবস্থা করা, এটি হওয়া উচিত তাদের (অন্তর্বর্তী সরকার) মূল লক্ষ্য। যারা সংস্কারের কথা বলছেন, ওইসব সংস্কারের বাস্তবায়নে সংসদের প্রয়োজন হবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধজুনের পরেই নির্বাচনী রোডম্যাপ
পরবর্তী নিবন্ধঅনুতাপ ও বিবেকবোধ থেকে ছাত্রশিবিরের মধুর ক্যান্টিনে আসা উচিত নয় : ছাত্রদল