ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন ও গণভোটের তফসিল পর্যালোচনায় সভায় বসতে যাচ্ছে এএমএম নাসির উদ্দিন নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন। আজ রোববার সকাল সাড়ে ১০টায় নির্বাচন কমিশনে এ সভা হবে, যাতে চার নির্বাচন কমিশনার ও ইসি সচিব উপস্থিত থাকবেন। ডিসেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে তফসিল ঘোষণা করার কথা রয়েছে; আর ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে একই সময়ে সংসদ নির্বাচন ও গণভোট হবে।
ভোটগ্রহণের সময় একঘণ্টা বাড়ানোসহ মনোনয়নপত্র জমা, বাছাই, প্রত্যহারের শেষ সময় ও ভোটের তারিখ চূড়ান্ত করা হবে রোববারের সভায়। ভোটের কাজের সার্বিক বিষয়ে অগ্রগতির পাশাপাশি পোস্টাল ভোটিংয়ের ব্যালট পেপার আনা–নেওয়ার সময়ও চূড়ান্ত হবে এ সভায়। খবর বিডিনিউজের।
এর আগে আইনশৃঙ্খলা সভা ও আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা করেছে ইসি। প্রথা অনুযায়ী, রাষ্ট্রপতির কাছে সার্বিক প্রস্তুতি অবহিত করতে ১০ ডিসেম্বর বঙ্গভবনে যাবে নির্বাচন আয়োজনকারী সাংবিধানিক সংস্থাটির সদস্যরা। এরপরে কয়েকদিনের মধ্যে তফসিল ঘোষণা করবেন সিইসি। ইতোমধ্যে ডিসি, ইউএনওসহ মাঠ প্রশাসন ও এসপি, ওসিসহ পুলিশে ব্যাপক পরিবর্তন আনা হয়েছে। তফসিল ঘোষণার পর পরিস্থিতি বিবেচনা করে রদবদল দরকার হলে তাও করবে ইসি।
রোববারের কমিশন সভার সিদ্ধান্ত ও রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতে সব ধরনের প্রস্তুতি অবহিত করে দুই ভোটের তফসিল ঘোষণা করা হবে বলে জানায় ইসি। নির্বাচন কমিশনার মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার বলেন, রোববারের কমিশন সভায় তফসিলের সময়সূচি নিয়ে সিদ্ধান্ত হবে। এরপর মহামান্য রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করে তফসিল চূড়ান্ত করা হবে। তিনি জানান, তফসিল ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে কারা রিটার্নিং অফিসার, সহকারী রিটার্নিং অফিসার হচ্ছে তাও প্রজ্ঞাপন আকারে জানিয়ে দেওয়া হবে।
ইসি আনোয়ারুর বলেন, আইন–বিধি–নীতিমালায় নানা ধরনের সংস্কার হওয়া হয়েছে এবার। আইন–বিধি শতভাগ প্রতিপালনে ইসির শক্ত অবস্থান থাকবে এবং সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দেওয়া হবে। সেই সঙ্গে প্রার্থী, দল, ভোটারসহ সব অংশীজনের সহযোগিতা চান তিনি।
সবশেষ ২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারি ভোট হয় দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের। ওই বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর রাষ্ট্র সংস্কারের উদ্যোগ নেয় অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার। গেল বছর নভেম্বরে এএমএম নাসির উদ্দিন নেতৃত্বাধীন ইসি গঠনের পর ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনের সব ধরনের প্রস্তুতি শেষ করে। এরমধ্যে গণভোটের বিষয়টিও যুক্ত হয়। দলগুলোর নানা অবস্থানের মধ্যে সরকারের তরফে দুই নির্বাচন একসাথে করার ঘোষণা আগে।
প্রথমবারের মতো প্রবাসী বাংলাদেশি ভোটারের জন্য পোস্টাল ভোটিংয়ের ব্যবস্থা নেওয়া হয়। প্রধান উপদেষ্টা ঘোষিত ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে ভোট হতে যাচ্ছে। এ ধারাবাহিকতায় নির্বাচন আয়োজনকারী সাংবিধানিক সংস্থাটি ভোটের তফসিল ঘোষণা করবে। বিএনপি, জামায়াত, এনসিপিসহ নিবন্ধিত অর্ধশতাধিক দল রয়েছে। আওয়ামী লীগের নিবন্ধন স্থগিত থাকায় ভোটের বাইরে থাকতে হচ্ছে দলটিকে।
আলোচ্যসূচি : নির্বাচন কমিশনের দশম সভা আজ রোববার সকাল সাড়ে ১০টায় প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সভাপতিত্বে তার সভা কক্ষে অনুষ্ঠিত হবে। এ সভায় তফসিলসহ দশটি বিষয় নিয়ে আলোচনা হওয়ার কথা রয়েছে। এর মধ্যে আছে– তফসিলের আগের ও পরের কার্যক্রম, গণভোট আয়োজনসহ ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সার্বিক প্রস্তুতির সর্বশেষ অবস্থা, মাঠ পর্যায়ে সর্বোচ্চ যোগাযোগ, মতবিনিময়, সমন্বয় সংক্রান্ত বিষয়।
বিটিভি–বেতারে জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণের মাধ্যমে তফসিল দেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার। তফসিল ঘোষণার আগে এ সংক্রান্ত প্রস্তুতি নিতে চিঠি দিয়ে থাকে ইসি সচিবালয়। এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে বিটিভির মহাপরিচালক মো. মাহবুবুল আলম বলেন, ২৪ থেকে ৩৬ ঘণ্টার মধ্যে এখন সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া সম্ভব। নির্বাচন কমিশনে যেমন রেকর্ড করা যায়, তেমনই স্টুডিও রেডি রাখা সম্ভব। সরাসরি কিংবা রেকর্ডেড সম্প্রচার– ইসির যেমন নির্দেশনা তেমন ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য প্রস্তুতি নেওয়া হবে।
তিনি বলেন, ইসির চিঠি পেলেই সরাসরি প্রচার কিংবা রেকর্ড করার ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সরাসরি সম্প্রচারের আয়োজন আমাদের সব সময় রেডি আছে। ইতোমধ্যে পোস্টাল ভোট বিডি অ্যাপের উদ্বোধন সরাসরি সম্প্রচার করা হয়েছে। রেকর্ড করেও সম্প্রচার করতে পারেন। যে ধরনের নির্দেশনা দেবেন, সেভাবে সম্প্রচারের ব্যবস্থা নেওয়া হবে।












