লোহাগাড়ার চরম্বায় প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হলেও করা হয়নি ব্রিজের দুই পাশে মাটি ভরাট করে সংযোগ সড়ক নির্মাণের কাজ। যার ফলে অকেজো পড়ে আছে ৩৩ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত ব্রিজ। এতে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে ওই সড়ক দিয়ে যাতায়াতকারীদের।
জানা যায়, ২০২৩–২৪ অর্থ বছরে উপজেলার চরম্বা ইউনিয়নের বাইয়ার পাড়া হতে হাতির ডেবা পর্যন্ত রাস্তায় জব্বরের ভাঙায় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে গ্রামীণ রাস্তায় ১৫ মিটার দৈর্ঘ্য পর্যন্ত সেতু/কালভার্ট নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় ৯.১৫ মিটার দৈর্ঘ্যের বঙ কালভার্ট নির্মাণ করা হয়। যার প্রাক্কলিত মূল্য ৩৩ লাখ ১৭ হাজার ৯৫১ টাকা, ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স চৌধুরী ইন্টারন্যাশনাল ও বাস্তবায়নে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয়। ব্রিজ নির্মাণ কাজ শেষ হলেও হয়নি দুই পাশে মাটি ভরাটের কাজ। পরে ব্রিজের দুই পাশে মাটি ভরাটের জন্য ২০২৪–২৫ অর্থবছরে গ্রামীণ অবকাঠামো সংস্কার কাবিটা–নগদ টাকা (উন্নয়ন) কর্মসূচির আওতায় ‘চরম্বা জব্বারের ভাঙায় রাস্তা নির্মাণ’ এর জন্য সাড়ে ৫ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। বরাদ্দের মেয়াদ চলতি সনের জুন মাসে শেষ হয়ে গেছে। কিন্তু এখনো পর্যন্ত করা হয়নি বরাদ্দের কাজ।
গত রোববার সরেজমিনে দেখা যায়, বালু আর কাঠবাহী ভারী যানবাহন চলাচলের কারণে ওই সড়কের দুই পাশে দেবে বড় বড় গর্ত সৃষ্টি হয়েছে। ব্রিজের এক পাশে অনেক আগে ভরাট করা কিছু মাটি রয়েছে। অন্যপাশে নতুনভাবে ভরাটের কিছু মাটি দেখা গেছে। সংযোগ সড়ক না থাকায় ব্রিজ দিয়ে চলাচল করা সম্ভব হচ্ছে না। যার ফলে মানুষ ও যানবাহন বাধ্য হয়ে ব্রিজের পাশে অস্থায়ী সড়ক দিয়ে চলাচল করছেন। তবে বৃষ্টি হলে যোগাযোগ একেবারে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে। স্থানীয়রা জানান, ওই স্থানে ব্রিজ নির্মাণে দীর্ঘায়িত হওয়া ও নির্মাণ কাজ শেষে ব্রিজে সংযোগ সড়ক না থাকায় দীর্ঘদিন যাবত স্থানীয়দের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এই সড়ক পার্বত্য বান্দরবান জেলা পর্যন্ত বিস্তৃত। যোগাযোগ ব্যবস্থা খারাপ হওয়ার কারণে কৃষকরা তাদের উৎপাদিত পণ্য বাজারজাত করতে নানা সমস্যার সম্মুখিন হচ্ছে। এছাড়া সামান্য বৃষ্টি হলে এই সড়ক যাতায়াতের একেবারে অনুপযোগী হয়ে পড়ে। দ্রুত ব্রিজের সংযোগ সড়ক নির্মাণ করার দাবি জানিয়েছেন তারা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় কয়েকজন জানান, ব্রিজ নির্মাণ শেষে ঠিকাদার উভয় পাশে মাটি ভরাট করে দিয়েছিল। কিন্তু বর্ষায় পানির স্রোতে অনেক মাটি চলে গেছে। এরপর আর কোনো কাজ করা হয়নি। ‘শুনেছি ব্রিজের দুই পাশে সংযোগ সড়ক নির্মাণের জন্য বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। বরাদ্দের মেয়াদও শেষ হয়ে গেছে। কিন্তু কোনো কাজ করা হয়নি। যা খুবই দুঃখজনক।’
চরম্বা জব্বারের ভাঙায় রাস্তা নির্মাণ প্রকল্পের সভাপতি ও স্থানীয় ইউপি সদস্য শওকত ওসমান জানান, ব্রিজের দুই পাশে সংযোগ সড়ক নির্মাণের জন্য মাটি দেয়া হয়েছিল। কিন্তু বর্ষায় পানির স্রোতে মাটি ভেসে গেছে। পুণরায় ব্রিজের দুই পাশে মাটি দিয়ে সংযোগ সড়ক নির্মাণ করে দেয়া হবে।
লোহাগাড়া উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মোহাম্মদ নাহীদ আহম্মেদ জাকির জানান, বর্ষায় বৃষ্টির কারণে কাজ করা যায়নি। প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হলেও চরম্বা জব্বারের ভাঙায় রাস্তা নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে। আশা করছি দ্রুত কাজ শেষ হয়ে যাবে।












