সংযোগের কাজ শেষ হয়নি, তাই অপেক্ষা

ওয়াসার ভান্ডালজুড়ি প্রকল্পের কমিশনিং শেষ দুটি কারখানা ছাড়া আর কোনো শিল্প প্রতিষ্ঠান আগ্রহ দেখায়নি

আজাদী প্রতিবেদন | বুধবার , ৮ জানুয়ারি, ২০২৫ at ৮:০৯ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম ওয়াসার ভান্ডালজুড়ি পানি শোধনাগার প্রকল্পের ট্রায়াল রান গত অক্টোবর থেকে শুরু হয়ে নভেম্বরের মাঝামাঝি সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। কমিশনিং কার্যক্রম সম্পন্ন হলেও এখনো বাণিজ্যিক এবং আবাসিক গ্রাহকদের সংযোগের কাজ শেষ হয়নি। তাই প্রকল্পের উদ্বোধনসহ পানি সরবরাহ শুরু করা যাচ্ছে না। এর আগে ওয়াসা জানিয়েছিল, প্রকল্পের কমিশনিংয়ের কাজ শেষে নভেম্বরের মাঝামাঝি পানি সরবরাহ শুরু হবে।

চট্টগ্রাম ওয়াসা সূত্রে জানা যায়, দৈনিক ৬ কোটি লিটার পানি উৎপাদন সক্ষমতায় নির্মাণ কাজ শেষ হওয়া ভান্ডালজুড়ি প্রকল্প থেকে এখন পর্যন্ত দুটি শিল্প কারখানা এবং ১২০০ আবাসিক গ্রাহক সংযোগ নিতে রাজি হয়েছেন। এই দুটি শিল্প কারখানা এবং ১২০০ আবাসিক গ্রাহকসহ মিলে ২ কোটি লিটারের মতো পানির চাহিদা থাকবে বলে জানান ওয়াসার সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীরা। এই প্রকল্পের অধীনে বাণিজ্যিক গ্রাহক ছাড়াও প্রাথমিক পর্যায়ে প্রায় তিন হাজার আবাসিক গ্রাহককে সংযোগ দেওয়া হবে। এখন পর্যন্ত সংযোগের জন্য আবেদন করেছেন ১২০০ গ্রাহক। এর মধ্যে পটিয়ায় ৮০০ এবং বোয়ালখালীতে ১০০ গ্রাহকের বাসাবাড়িতে সংযোগ দেওয়া হয়েছে। অবশিষ্ট গ্রাহকদের সংযোগের কাজ চলছে। সর্বশেষ গত অক্টোবর থেকে নভেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে এই প্রকল্পের ট্রায়াল রান সম্পন্ন হলেও বাণিজ্যিক এবং আবাসিক গ্রাহকদের সংযোগের কাজ শেষ না হওয়ায় উদ্বোধনের বিষয়টি এখনো ঠিক করতে পারেনি ওয়াসা কর্তৃপক্ষ। যার কারণে এই প্রকল্প থেকে পানি সরবরাহও বিলম্বিত হচ্ছে।

প্রকল্প পরিচালক ও ওয়াসার তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মুহম্মদ মাহবুবুল আলম গতকাল আজাদীকে বলেন, ভান্ডালজুড়ি পানি সরবরাহ প্রকল্প উদ্বোধনের বিষয়টি এখনো ঠিক হয়নি। প্রকল্পের কানেকশনের কিছু কাজ বাকি আছে। আবাসিকের কানেকশন, পাইপলাইনের কিছু কানেকশনের কাজ বাকি রয়েছে। তাছাড়া এখনো পর্যন্ত চিটাগাং ইউরিয়া ফার্টিলাইজার (সিইউএফএল) এবং ড্যাপ (ডাই অ্যামোনিয়াম ফসফেট কারখানা) ছাড়া আর কোনো শিল্প কারখানা পানির সংযোগের ব্যাপারে আগ্রহ দেখায়নি। সিইউএফএল এবং ড্যাপে সংযোগ দেওয়া হয়েছে। আবাসিকে পটিয়া এবং বোয়ালখালী মিলে ৮শ সংযোগ দেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, আমি বুধবার কোরিয়ান ইপিজেডে যাব। আমরা পানির সংযোগ নেওয়ার জন্য প্রথমে যখন কোরিয়ান ইপিজেড, কাফকোসহ অন্যান্য কারখানায় চিঠি দিয়েছিলাম, তারা আগ্রহ দেখিয়েছিল। এখন কানেকশন ফি জমা দিয়ে যখন সংযোগ নেওয়ার জন্য চিঠি দিয়েছি, তারা আর আগ্রহ দেখাচ্ছে না। পানির সংযোগের ব্যাপারে বুধবার (আজ) কারিয়ান ইপিজেডের সাথে কথা বলব। সবকিছু গুছিয়ে তবেই উদ্বোধন করা হবে বলে জানান তিনি।

প্রকল্পের তথ্য অনুযায়ী, এ প্রকল্প থেকে ছোটবড় ১৩টি বাণিজ্যিক সংযোগের মাধ্যমে শিল্পাঞ্চলগুলোতে প্রতিদিন ৪ কোটি লিটার পানি সরবরাহের টার্গেট রয়েছে চট্টগ্রাম ওয়াসার। অন্যদিকে এই প্রকল্পের পানির দুই কোটি লিটার আবাসিক গ্রাহকদের মধ্যে সরবরাহের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে প্রতিষ্ঠানটির।

বোয়ালখালীর জ্যৈষ্ঠপুরায় ২০১৯ সালে সেপ্টেম্বরে ৪১ দশমিক ২৬ একর জায়গায় ভান্ডালজুড়ি পানি শোধনাগার প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। ২০২০ সালের ২৮ জানুয়ারি প্রথম সংশোধিত আকারে অনুমোদন পায় এটি। ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত সময় ও ব্যয় বৃদ্ধি পেয়ে ১ হাজার ৯৯৫ কোটি ১৫ লাখ টাকায় দাঁড়ায়। প্রকল্প শুরুর ৫ বছর পর এসে প্রকল্পের মেয়াদ আরেক দফা বাড়িয়ে ২০২৫ সালের জুন পর্যন্ত করা হয়। এ প্রকল্প থেকে আনোয়ারা, বোয়ালখালী ও কর্ণফুলী উপজেলার ১০ হাজার আবাসিক গ্রাহক এবং ১৩টি শিল্পপ্রতিষ্ঠানের পানি পাওয়ার কথা রয়েছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধতিব্বতে ভূমিকম্প, নিহত ১২৬
পরবর্তী নিবন্ধপ্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে জামায়াত আমিরের সাক্ষাৎ