নিজেকে চট্টগ্রাম ডায়াবেটিক হাসপাতালের বৈধ সভাপতি দাবি করে সংবাদ সম্মেলন করেছেন অধ্যাপক জাহাঙ্গীর চৌধুরী। গতকাল দুপুরে চট্টগ্রাম সিনিয়রস ক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি চট্টগ্রাম ডায়াবেটিক হাসপাতালের বিষয়ে সরকারের প্রতি তিনটি দাবি উত্থাপন করেন। সেগুলো হলো–অবিলম্বে এই অবৈধ অ্যাডহক কমিটি বাতিল করতে হবে, নিয়মতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত বৈধ কমিটির হাতে পুনরায় সমিতির দায়িত্ব ফিরিয়ে দিতে হবে এবং যারা হাসপাতালবিরোধী ষড়যন্ত্র করছে, মিথ্যা অপপ্রচার চালাচ্ছে এবং প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংসের পথে ঠেলে দিচ্ছে, তাদেরকে চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনতে হবে। সংবাদ সম্মেলনে অধ্যাপক জাহাঙ্গীর চৌধুরী আরো বলেন, ডায়াবেটিক হাসপাতালের মাধ্যমে প্রতিদিন অসংখ্য সাধারণ মানুষ স্বল্প খরচে চিকিৎসা সেবা পাচ্ছেন। কিন্তু দুঃখের বিষয় কিছু কুচক্রী মহল শুরু থেকেই আমাদের এই উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য ষড়যন্ত্র করে আসছে। তারা ভ্রান্ত তথ্য, অপপ্রচার এবং অসৎ উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশাসনের কাছে গিয়ে আমাদের বৈধ কমিটিকে বাতিল করানোর অপচেষ্টা চালিয়েছে। আমি পরিষ্কার ভাষায় বলতে চাই আমাদের বর্তমান কমিটিই বৈধ কমিটি। এই কমিটি ২০২৪ থেকে ২০২৮ মেয়াদের জন্য গঠনতন্ত্র মোতাবেক নির্বাচিত হয়েছে। বৈধ কমিটি বিদ্যমান থাকা অবস্থায় সরকার কোনোভাবেই তত্ত্বাবধায়ক বা অ্যাডহক কমিটি দিতে পারে না।
সুতরাং বর্তমানে যে অ্যাডহক কমিটি গঠন করা হয়েছে, সেটি সম্পূর্ণ অবৈধ বেআইনি ও গঠনতন্ত্রবিরোধী। এই অবৈধ অ্যাডহক কমিটির কোনো এখতিয়ার নেই সাধারণ সভা আহ্বান করার। অথচ তারা ২০ আগস্ট সাধারণ সভা আহ্বান করেছে। আমরা স্পষ্টভাবে জানাচ্ছি–এই সভা অবৈধ, অন্যায় এবং গঠনতন্ত্রবিরোধী। তাই আমরা নির্বাহী কমিটি ও প্রায় ৫ হাজার ৫০০ জীবন সদস্য ও সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি–এই সভা বর্জন করার জন্য।
তিনি আরো বলেন, এখন আমার ব্যক্তিগত বিষয়ে একটি কথা বলতেই হয়। আমার বিরুদ্ধে কিছু ব্যক্তি ষড়যন্ত্রমূলকভাবে প্রচার করছে যে আমি নাকি হাসপাতালের অর্থ আত্মসাৎ করেছি। আমি পরিষ্কারভাবে জানাতে চাই–এটি সম্পূর্ণ মিথ্যা, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং মানহানিকর অপপ্রচার। আমি কখনো এই হাসপাতাল থেকে অর্থ গ্রহণ করিনি, বরং আমি এই হাসপাতালের জন্য অর্থ ব্যয় করেছি, শ্রম দিয়েছি এবং সবসময়ই এই হাসপাতালের উন্নয়নকে অগ্রাধিকার দিয়েছি। দুঃখজনকভাবে কিছু বেতনভুক্ত কর্মকর্তা–কর্মচারী এবং একজন দুর্নীতিগ্রস্ত, অসৎ ও টাকা আত্মসাতকারী নারী ব্যক্তিগত স্বার্থে মিথ্যা প্রচারণা চালাচ্ছে। তাদের এই বিভ্রান্তিকর কর্মকাণ্ডের কারণে হাসপাতালের সুনাম নষ্ট হচ্ছে এবং প্রতিষ্ঠানটি ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে যাচ্ছে। এটি আমাদের সবার জন্য গভীর উদ্বেগ ও বেদনার বিষয়।
আমি দৃঢ়ভাবে বলতে চাই–চট্টগ্রাম ডায়াবেটিক হাসপাতাল কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর সম্পত্তি নয়। এটি একটি সামাজিক প্রতিষ্ঠান, একটি মানবিক দায়িত্বের প্রতীক। এর সঙ্গে জড়িত রয়েছে লাখো মানুষের জীবন ও চিকিৎসার অধিকার। আমরা কারও ষড়যন্ত্রে এই প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস হতে দেব না।