রাউজান পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সোয়েব খানের ছেলে নুরুদ্দীন খান মুন্না (২৫)। গত ৫ জানুয়ারি বিকালে গহিরা চৌমুহনী থেকে সিএনজি অটোরিকশায় করে যাচ্ছিলেন ফটিকছড়ি উপজেলার মাইজভাণ্ডার দরবার শরীফে জিয়ারতে। একই অটোরিকশায় ছিলেন অপর এক নারী। গাড়িতে বসে তারা নিজেদের মধ্যে কুশল বিনিময় করেন। চালক দুজনকে নিয়ে যাত্রা করে দরবার শরীফ উদ্দেশে।
গাড়িটি নোয়াজিশপুর ইউনিয়নের মধ্যবর্তী এলাকায় পৌঁছলে গাড়িতে উঠে আরেক যুবক। তিনজনকে নিয়ে যাত্রাপথে তকিরহাট এলাকায় পৌঁছলে হঠাৎ করে তাদের অটোরিকশা গতিরোধ করে দাঁড়ায় দুটি মোটর সাইকেল। মোটর সাইকেল আরোহীদের দেখে অটোরিকশায় থাকা ওই নারী চিৎকার করে অভিযোগ করে পাশে থাকা মুন্না তার শ্লীলতাহানির চেষ্টা করেছে। এই কথা বলার সাথে সাথে মোটর সাইকেল নিয়ে আসা যুবকরা মুন্নাকে টেনে হিঁচড়ে গাড়ি থেকে নামিয়ে কিল–ঘুষি মেরে নিয়ে যায় নিরিবিলি একটি স্থানে।
সেখানে তাকে আটকে রেখে সাথে থাকা মোবাইল, টাকা কেড়ে নেয়। পরে ছেড়ে দেয়ার শর্তে ৫০ হাজার টাকা দাবি করে। জিম্মি অবস্থায় মুন্না তাদের কাছ থেকে মোবাইল ফোনটি চেয়ে নিয়ে ঘটনা জানিয়ে ফোন করে তার এক চাচার কাছে।
বলেন, একটি বিকাশ (০১৮৮৩৫৭৬৭৪০) নম্বারে এখন টাকা না পাঠালে তাকে ছাড়বে না। চাচা ছিনতাইকারীদের সাথে কথা বলে দর–কষাকষি করে ২০ হাজার টাকা ওই নম্বারে পাঠায়। টাকা পেয়ে ছাড়া পায় মুন্না। ছাড়া পেয়ে ঘটনায় জড়িতদের শনাক্তের চেষ্টা করতে থাকে সে। এরই মধ্যে এই পথে আগে ছিনতাইয়ের শিকার এমন কয়েকজন ভুক্তভোগী মুন্নার কাছে কয়েকজন ছিনতাইকারীর ছবি পাঠায়। পাঠানো ছবি দেখে মুন্না তাকে আটক রেখেছিল এমন তিন ছিনতাইকারীকে শনাক্ত করেন।
পরে ওই ছবিসহ সে গত ৯ জানুয়ারি রাউজান থানায় গিয়ে অভিযোগ করেন। অভিযোগ পেয়ে পুলিশ ঘটনায় জড়িতদের শনাক্তে চেষ্টা করে। তিনজনকে সনাক্তের পর অভিযানে নামে পুলিশ। গত সোমবার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে নারীসহ ছিনতাইকারী চক্রের তিন সদস্যকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
গ্রেপ্তার তিনজন হলো, রাউজান পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের শাহ আলম কন্ট্রাক্টরের মেয়ে ইছমত আরা ইনা (২৬), রাউজান হলিদিয়া ইউনিয়নের কারিগর বাড়ির নুরুল আলমের ছেলে রাসেল (৩২) ও ফটিকছড়ি উপজেলার জাফতনগর ইউনিয়নের মৃত আবু তাহেরের ছেলে মোহাম্মদ বেলাল (৩৬)। রাউজান থানার এসআই আজয় দেব শীল ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, গ্রেপ্তার ছিনতাইকারী চক্রের তিন সদস্যকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।