আন্দোলনের জন্য সংগঠন গড়ে তোলার ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের এক ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় তিনি বলেন, আমরা এখন কেন জানি না শুধুমাত্র আনুষ্ঠানিকতায় চলে গেছি। আমরা দোয়া করছি, মিলাদ করছি, স্মরণ সভা করছি। সংগঠন গড়ে না তুললে আন্দোলন কিভাবে হবে? সরকার পরিবর্তন করতে হলে, ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারকে সরাতে হলে প্রধান দুইটা শক্তি দরকার। একটা হচ্ছে ছাত্র সংগঠন, আরেকটি শ্রমিক সংগঠন। সেই সংগঠন তো আমরা সেভাবে গড়ে তুলতে পারছি না। সেটা তো আমাদের ব্যর্থতা। সেই কারণে আমি অনুরোধ করব, আসুন আমরা সবাই পরস্পরের সাথে যোগাযোগ করি, কথা বলি- কিভাবে সংগঠনগুলোকে আবার গড়ে তোলা যায়, সেই চেষ্টা করি। বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের প্রয়াত সদস্য জাফরুল হাসানের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এই ভার্চুয়াল আলোচনা সভা হয়। খবর বিডিনিউজের।
জাফরুল হাসানের কর্মময় জীবনের স্মৃতিচারণ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আজকে গ্রোথ হচ্ছে মালিকদের, তারা গাড়ি কিনছেন, বাড়ি কিনছেন, বিদেশে প্রপার্টি তৈরি করছেন। আর আমার শ্রমিক ভাইয়েরা, বোনেরা বস্তিতে একটা ঝুপড়ির মধ্যে বাস করেছে, দুইবেলা ঠিক মতো তারা খেতেও পায় না। দিস ইজ রিয়েলিটি। কেউ কথাও বলছি না এই বিষয়ে।
কিছুদিন আগে জাফরুল ভাই চলে গেছেন। আমার বার বার তার কথা মনে পড়ে এজন্য যে সত্যিকার অর্থে আজকাল এই ধরনের নেতা আর কোথায়? এক নজরুল ভাই আছেন। বাতি জ্বালিয়ে আর তো আমি দেখতে পাই না। কারণ কোথায় কে জোরেশোরে কথা বলবেন, কার কথায় উজ্জীবিত হবে- বোধহয় শ্রমিক আন্দোলনের সাথে যারা জড়িত আছেন, শ্রমিক রাজনীতির সাথে যারা জড়িত আছেন তাদের এই বিষয়গুলো দেখা উচিত। চলমান ‘লকডাউনে’ শ্রমিকদের জন্য মাসিক সরকারি অনুদান দেওয়ার দাবি জানান মির্জা ফখরুল।
এই কোভিড-১৯ কালে অবশ্যই শ্রমিকদেরকে সাবসিডি দিতে হবে। প্রত্যেক শ্রমিক নেতা, শ্রমিক, কর্মী ভাই যারা আছেন তাদেরকে অবশ্যই সরকারের তরফ থেকে ত্রাণ সহযোগিতা করতে হবে। এই মুহূর্তে এটাই হচ্ছে সবচেয়ে বড় দাবি। সহকর্মী জাফরুল হাসানের বর্ণাঢ্য জীবনকর্ম তুলে ধরে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, আমি দলের যে পদেই থাকি না কেন, আমি আপনাদেরই একজন সহকর্মী, আমি শ্রমিক আন্দোলনের একজন কর্মী। সবসময় আপনাদের সাথে আছি, সবসময় থাকব, যেমন ছিলেন আমাদের প্রিয় ভাই জাফরুল হাসান।
শ্রমিক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসেইনের সভাপতিত্বে ও প্রচার সম্পাদক মঞ্জরুল ইসলাম মঞ্জুর পরিচালনায় আলোচনা সভায় অংশ নেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, যুগ্ম মহাসচিব মজিবুর রহমান সারোয়ার, সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, জাতীয় শ্রমিক জোটের সাধারণ সম্পাদক নাইমুল হাসান জুয়েল, বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের সাধারণ সম্পাদক ওয়াজেদ-উল ইসলাম খান, শ্রমিক দলের সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম খান নাসিম, কেন্দ্রীয় নেতা এএম নাজিম উদ্দিন, সালাহউদ্দিন সরকার, প্রয়াত নেতার মেয়ে নাসরিন হাসান টিমা প্রমুখ।
