দিনে দিনে ভারসাম্যহীন হয়ে পড়ছে নগরীর পরিবেশ। একদিকে নগরায়নের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, অন্যদিকে প্রভাবশালীদের কারণেও বিপন্ন হতে চলেছে সবুজ প্রকৃতি। পাহাড় কাটা, বৃক্ষ নিধনের পাশাপাশি সবচেয়ে ভয়ঙ্কর অভিশাপ হয়ে দাঁড়াচ্ছে জলাশয় নিধন। নিয়মবহির্ভূতভাবে ভরাটের কারণে দিনে দিনে হারিয়ে যাচ্ছে প্রাচীন পুকুর দীঘি। একইভাবে প্রভাবশালীদের কুনজরে সংকুচিত হয়ে আসছে নগরীর রামপুর ওয়ার্ডের শতবছরের অধিক পুরনো হাজার দীঘি। মধ্যম রামপুর ধোপাপাড়া এলাকার হাজার দীঘির তিনদিকে ভরাট করে গড়ে উঠেছে কারখানা, গুদামসহ নানান বসতি।
সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে, হাজার দীঘিটি শত বছরের পুরনো। লাগানো দুটি দীঘি রয়েছে এখানে। রাস্তার সামনের দিকের দীঘিটির একাংশ আরও আগে থেকে ভরাট করে স্থাপনা নির্মাণ করা হয়েছে। সাম্প্রতিক পাশের দীঘিটির একাংশ ভরাট করে করা হয়েছে একটি কারখানা, তৈরি করা হয়েছে গুদামসহ কয়েকটি স্থাপনা। এতে পুরো দীঘিটি সংকুচিত হয়ে এসেছে। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, প্রায় সোয়া দুই একর জায়গা জুড়ে হাজার দীঘির অবস্থান। এখন সংকুচিত হয়ে প্রায় অর্ধেকে ঠেকেছে। কথা বলতে চাইলে পুকুর ভরাটের সাথে কারা জড়িত সে বিষয়ে কেউ মুখ খুলতে রাজি হননি। এসময় স্থানীয় বাসিন্দা আবদুল গফুর বাবুল দৈনিক আজাদীকে বলেন, হাজার দীঘিটি শত বছরের পুরনো। একসাথে জোড়া লাগানো দুটি দীঘির সামনের দীঘির এক অংশ আরও আগে ভরাট করা হয়। এখন পেছনের দীঘিটি ভরাট করে গোডাউন, কারখানাসহ নানা রকম বসতি নির্মাণ করা হয়েছে। তিনি বলেন, হাজারদীঘির আশেপাশের প্রাকৃতিক সবুজ বিদ্যমান ছিল। দীঘির পানিও স্বচ্ছ। আশেপাশের বাসিন্দারা এ দীঘি ব্যবহার করে থাকেন। এখন দীঘিটি সংকুচিত করে ফেলা হচ্ছে। পুরোনো দীঘি হলেও এটি রক্ষায় প্রশাসনের কোনো পদক্ষেপ নেই।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তি বলেন, যারা দীঘি ভরাট করছে তারা প্রভাবশালী। রাতের আধারে দীঘির একাংশ ভরাট করা হয়েছে। এভাবে ধীরে ধীরে একসময় পুরো দীঘি উধাও হয়ে যাবে। পুরো এলাকা অগ্নি ঝুঁকিতে পড়ে পরিবেশ বিপন্ন হয়ে যাবে।
এ ব্যাপারে পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম মহানগর কার্যালয়ের পরিচালক ও সরকারের যুগ্ম সচিব মো. নূরুল্লাহ নূরী দৈনিক আজাদীকে বলেন, পরিবেশ আইনে পুকুর জলাশয় ভরাট করা অপরাধ। হাজারদীঘি ভরাট করার বিষয়ে আমরা অবগত ছিলাম না। এখন যেহেতু জেনেছি, আমরা দ্রুততম সময়ের মধ্যে দীঘি পরিদর্শন করে ভরাটে জড়িতদের আইনের আওতায় আনা হবে।