দেশে চলমান অর্থনৈতিক সংকটকালে ‘অর্থ মন্ত্রণালয় নেতৃত্ব দিতে পারছে না’ মন্তব্য করে সিপিডি বলছে, এ সময়ে অর্থমন্ত্রীর দেখাও মিলছে না। সংকটকালীন পুরোটা সময়েই নেতৃত্বের অভাব অনুভূত হয়েছে বলে মনে করছে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠানটি, যা তাদের ভাষায় খুবই দুঃখজনক।
গতকাল সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন এমন মন্তব্য করেন। ঢাকার মহাখালীর ব্র্যাক সেন্টারে ‘সংকটে অর্থনীতি : কর্মপরিকল্পনা কী হতে পারে?’ শীর্ষক সংলাপে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন তিনি। খবর বিডিনিউজের। সংলাপে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখার সময় পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান দেশের অর্থনীতি কে চালাচ্ছেন-এ প্রসঙ্গ টেনে বলেন, অর্থনীতি চালাচ্ছেন নট অর্থমন্ত্রী, নট প্ল্যানিং মিনিস্টার, নর বাংলাদেশ ব্যাংক গভর্নর, বাই রুল, বাই অর্ডার, বাই অবলিগেশন চালাচ্ছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী। দ্যাট ইজ দ্যা ল। সি ইজ দ্যা হেড অব দ্যা গভর্নমেন্ট, তার থেকে এগুলো নেমে আসে।
উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, আমি আজকে অসুস্থ, আমি আজকে অফিসে গেলাম না। তার জন্য সরকার পড়ে থাকবে না। আমরা অর্থনীতি চালাচ্ছি জেনেশুনে চালাচ্ছি। এবং আমরা নিত্য আপডেট করার প্রচেষ্টার মধ্যেও আমরা আছি।
সংলাপে বিশেষ অতিথির বক্তব্যের সময় এ প্রসঙ্গ টেনে সংসদে আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী বলেন, মাননীয় অর্থমন্ত্রী, ওনাকে তো আমরা দেখতে পাচ্ছি না…। ইকোনমিক যুদ্ধ অবস্থার মধ্যে তো আমরা আছি। ওনি মিসিং মানে ওনার মন্ত্রণালয়ে মিসিং এবং মন্ত্রণালয়ের মধ্যে ইনক্লুশন নেই, ওপেননেস নেই, পার্টনারশিপ নেই, একচ্ছত্র নীতিতে চলছে।
এটাকে ‘খুব বড় সমস্যা’ মন্তব্য করে তিনি আরও বলেন, এভাবে চললে আমরা মনে একট বড় বিপদে পড়ে যেতে পারি। এর আগে মূল প্রবন্ধে দেশের অর্থনীতির বর্তমান অবস্থা তুলে ধরতে গিয়ে এক পর্যায়ে সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা বলেন, অর্থনীতির এই সংকটকালে আমরা একটা নেতৃত্বের অভাব দেখতে পাচ্ছি। অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে যে নেতৃত্ব দেওয়ার কথা ছিল সেটা পুরো সংকটকালে নেতৃত্বের অভাব পুরোটা সময়ই সেটা অনুভব করা গেছে। এই (সংকট মোকাবিলার) নেতৃত্বে কে আছেন? মাননীয় অর্থমন্ত্রী একজন আছেন, কিন্তু আমরা তাকে বেশিরভাগ সময়ই দেখতে পাই না। এবং সংকটের সময় গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তগুলো নেওয়ার সময় এই ধরনের নেতৃত্বের অভাব খুবই দুঃখজনক। গতকাল এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে সাড়া দেননি অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তাফা কামাল। জানতে চাইলে অর্থ মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা গাজী তৌহিদুল ইসলাম বলেন, মাননীয় মন্ত্রী মহোদয় প্রতিদিন অফিস করছেন।
কোভিড মহামারীর পর থেকে অর্থমন্ত্রী মুস্তাফা কামালের নিয়মিত সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ে না আসা নিয়ে বিভিন্ন সময় খবর বেরিয়েছে। মন্ত্রিপরিষদ বৈঠক, একনেক বৈঠকেও নিয়মিত অংশ নিতে দেখা যায় না তাকে। ৮ নভেম্বর একনেক বৈঠকের পর সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে প্রশ্নের উত্তরে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেছিলেন, অর্থমন্ত্রী কেন একনেক বৈঠকে অংশগ্রহণ করছেন না এই ব্যাখ্যা মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ দিতে পারবে। কোনো মন্ত্রী বৈঠকে যোগ না দিলে একনেক উইং জানতে চাইতে পারে না।